পাকিস্তানের ছয়টি শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। গতকাল বুধবার দিনের প্রথম প্রহরে এ হামলা চালানো হয়। তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ে তোলে পাকিস্তানও। কাশ্মীর সীমান্তে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে চলে দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি গোলাবর্ষণ। ভারতের হামলার জবাব দিতে সশস্ত্র বাহিনীকে অনুমতি দিয়েছে পাকিস্তান। প্রতি ফোঁটা রক্তের বদলা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এতে পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর মধ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের বেশির ভাগই পর্যটক। এ ঘটনার পেছনে পাকিস্তানের হাত ছিল দাবি করে জবাব দেওয়ার ঘোষণা দেয় ভারত। পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করে আন্তর্জাতিক তদন্তের প্রস্তাব দেয়। এ নিয়ে অব্যাহত উত্তেজনার মধ্যে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার পর পাকিস্তানের ছয় শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। নয়টি ‘সন্ত্রাসী স্থাপনা’ লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয় বলে জানায় ভারতের সেনাবাহিনী। তবে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও জলবিদ্যুৎ বাঁধ লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে। এতে নারী–শিশুসহ ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ৫৭ জন আহত হন। এদিকে হামলার পর থেকে সীমান্তে পাকিস্তানি বাহিনীর গোলাবর্ষণে ১৫ বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ৪৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ভারতের সেনাবাহিনী। গোলার আঘাতে ভারতীয় এক সেনাও নিহত হয়েছেন বলে দ্য হিন্দু জানিয়েছে।
ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে ভারতের তিনটি রাফালসহ পাঁচটি যুদ্ধবিমান ও একটি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছেন পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী। যদিও নাম না প্রকাশ করার শর্তে ভারতের ঊর্ধ্বতন একটি সামরিক সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিজ ভূখণ্ডে তিনটি যুদ্ধবিমান ‘বিধ্বস্ত হওয়ার’ কথা জানিয়েছে। এ ছাড়া ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ভারতের একটি ব্রিগেড সদর দপ্তর এবং নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর কয়েকটি সেনাচৌকি গুঁড়িয়ে দেওয়ার দাবি করেছে পাকিস্তান।
হামলার পরপরই এক বিবৃতিতে ভারতের সেনাবাহিনী বলেছে, ‘ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নয়টি সন্ত্রাসী শিবির ধ্বংস করা হয়েছে।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে পরিমিত হামলা চালানো হয়েছে। হামলার ধরন উসকানিমূলক নয় বলেও বিবৃতিতে দাবি করা হয়।
তবে হামলার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তান। ভারতের হামলার পর গতকাল জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠক ডাকেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে পূর্ণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে শাহবাজ শরিফ বলেন, আগের রাতে ভারতের বিমান হামলায় নিহত ব্যক্তিদের প্রতি ফোঁটা রক্তের বদলা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘ভারতকে বিমান হামলার পরিণতি ভোগ করতে হবে। তারা ভেবেছিল, আমরা পিছু হটব, কিন্তু তারা ভুলে গেছে এটি বীরদের জাতি।’
২৫ মিনিটে ৯ স্থাপনায় হামলা : পেহেলগাম হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছিল। পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাও ছিল। এরই মধ্যে গতকাল দিবসের প্রথম প্রহরে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পাকিস্তান ও পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত ছয়টি শহরে হামলা শুরু করে ভারত। যুদ্ধবিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পাশাপাশি হামলায় ড্রোনও ব্যবহার করা হয়। মধ্যরাতে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে ঘুম ভাঙে এসব শহরের বাসিন্দাদের।
হামলার বিষয়ে গতকাল এক ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, পেহেলগামের হত্যাকাণ্ডের পর সীমান্ত পার থেকে আরও সম্ভাব্য হামলা ঠেকানোর পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদী কাঠামো ধ্বংস করাই ছিল এ হামলার উদ্দেশ্য। এ ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় সেনা ও বিমানবাহিনীর দুই নারী কর্মকর্তা কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং। তাঁরা দাবি করেন, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টা ৫ মিনিট থেকে শুরু করে রাত দেড়টা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণরেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্তের ওপাশে ভারতীয় বাহিনী হামলা চালিয়ে মোট নয়টি সন্ত্রাসী শিবির ধ্বংস করেছে।
ব্রিফিংয়ে পাকিস্তান অংশে ধ্বংস করা স্থাপনার ছবিও দেখান কর্মকর্তারা। সোফিয়া ও ব্যোমিকা দাবি করেন, প্রথম লক্ষ্য ছিল ভাওয়ালপুরের মারকাজ সুবহানাল্লাহ। সেখানে জইশ–ই–মুহাম্মদের জঙ্গিদের প্রশিক্ষণশিবির ছিল। বিলাল মসজিদে ছিল লস্কর–ই–তাইয়েবার প্রশিক্ষণকেন্দ্র। কোটলিতে যেখানে হামলা হয়েছে, তা লস্করের ঘাঁটি। ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তরেও হামলা চালিয়েছে জানিয়ে তাঁরা আরও দাবি করেন, আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ছয় কিলোমিটার ভেতরে শিয়ালকোটেও হামলা চালানো হয়েছে। এ ছাড়া মেহমুনা জোয়ায় হিজবুলের শিবিরে হামলা করা হয়। লাহোরের কাছে মুরিদকের মারকাজ তৈয়্যেবায়ও ভারতীয় বাহিনী হামলা চালায় বলে কর্মকর্তারা জানান।
তবে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর দাবি, মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের মতো বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ভারত। জিও নিউজের প্রতিবেদনে আক্রান্ত ছয়টি এলাকার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পূর্ব আহমেদপুরে সুবহানাল্লাহ মসজিদে, মুজাফফরাবাদে বিলাল মসজিদে, কোটলিতে আব্বাস মসজিদে ও মুরিদকে উম্মুল কোরা মসজিদে হামলা হয়েছে। শিয়ালকোট ও শাকারগড়েও হামলা হয়। এ ছাড়া হামলায় নীলম–ঝিলাম জলবিদ্যুৎ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ পাকিস্তানের : ভারত যেকোনো মুহূর্তে হামলা করতে পারে—এমন আশঙ্কা থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। ফলে হামলা শুরুর পরপরই প্রতিরোধ গড়ে তোলে পাকিস্তানের বিমানবাহিনী। প্রতিরোধের মুখে ভারতের কোনো যুদ্ধবিমান পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঢুকতে পারেনি বলে দাবি করে দেশটির সামরিক বাহিনী। পাকিস্তানের কোনো যুদ্ধবিমানও ভারতের আকাশসীমায় প্রবেশ করেনি বলে তারা জানায়। ডনের প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়।
পাকিস্তান আইএসপিআরের পরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেন, নিজেদের আকাশসীমায় থেকেই দুই দেশের যুদ্ধবিমানগুলো পাল্টাপাল্টি হামলা চালায়। এ সময় তিনটি রাফালসহ ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয় বলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও আইএসপিআর পরিচালক দাবি করেন। বাকি দুটি যুদ্ধবিমান হলো রাশিয়ার তৈরি সু-৩০ ও মিগ-২৯। এ ছাড়া একটি সামরিক ড্রোন ভূপাতিত করা হয় বলে আইএসপিআরের বরাত দিয়ে জিও নিউজ জানায়। পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, হামলায় ভারতের ৮০টি যুদ্ধবিমান অংশ নিয়েছিল।
ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরপরই কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ব্যাপক গোলাবর্ষণ করে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র বলেন, এ সময় ভারতের একটি ব্রিগেড সদর দপ্তর ও কয়েকটি সেনাচৌকি ধ্বংস করা হয়। সীমান্তে গোলাগুলির বিষয়টি নিশ্চিত করে ভারতের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বেসামরিক স্থাপনায় পাকিস্তানি বাহিনীর গোলাবর্ষণের যথোপযুক্ত জবাব দিচ্ছে ভারতীয় বাহিনী।
ভারতের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বিলাল মসজিদের সামনে পাকিস্তানের এক সেনা। গতকাল পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদে
ভারতের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বিলাল মসজিদের সামনে পাকিস্তানের এক সেনা। গতকাল পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদেরয়টার্স
হামলা শুরুর পরপরই পাকিস্তান ও ভারতের উত্তরাঞ্চলের আকাশসীমায় উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। হামলার সময় আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় পাকিস্তান। অন্যদিকে নিরাপত্তাঝুঁকি থাকায় ভারতের উত্তরাঞ্চলের আকাশসীমা এড়িয়ে চলে আন্তর্জাতিক উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো। এ ছাড়া দুই দেশের অভ্যন্তরীণ উড়োজাহাজ চলাচলও বিঘ্নিত হয়।
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের উত্তরাঞ্চলের ২১ বিমানবন্দরের কার্যক্রম আগামীকাল শুক্রবার পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল দিল্লি বিমানবন্দরের ১৪০টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়। এর আগে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের অন্যতম বৃহৎ উড়োজাহাজ সংস্থা ইন্ডিগো ১৬৫টি ফ্লাইট বাতিলের কথা জানিয়েছে। পাকিস্তান সীমান্তের কাছে কাশ্মীরসহ ১১টি এলাকায় এসব ফ্লাইট চলাচল করার কথা ছিল। এদিকে গতকাল সন্ধ্যার দিকে দেশের সব বিমানবন্দরের কার্যক্রম সচল হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচলের জন্য আকাশসীমা নিরাপদ বলেও জানানো হয়।
যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা
ভারতের হামলার জবাব দিতে সশস্ত্র বাহিনীকে পাকিস্তান সরকারের অনুমোদনের পর বড় ধরনের যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জিও নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ভারত অব্যাহতভাবে উত্তেজনা বাড়াতে থাকলে এ সংঘাত পারমাণবিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে। এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে পুরো দায়ভার ভারতের ওপর বর্তাবে বলে জানান তিনি।
পাকিস্তানের বেসামরিক লোকজন ও বেসামরিক স্থাপনার ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক। এক বিবৃতিতে দেশটি বলেছে, উসকানিমূলক পদক্ষেপ ‘সর্বাত্মক যুদ্ধের’ দ্বার খুলে দেবে। সব পক্ষকে বিচক্ষণতার সঙ্গে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আঙ্কারা বলেছে, তারা আশা করে, যত দ্রুত সম্ভব উত্তেজনা কমাতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। লড়াই বন্ধ করতে ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘দুই দেশের সঙ্গেই আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক। আমি চাই, এটা শেষ হোক। আর আমি যদি কোনোভাবে সাহায্য করতে পারি, তাহলে আমি সেটা করব।’ এ হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাতের ভার বিশ্ব বহন করতে পারবে না।
এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, ইতালি, সৌদি আরব, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, আজারবাইজানসহ বিভিন্ন দেশ ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি সংযম প্রদর্শন এবং কূটনৈতিক উপায়ে সমস্যার সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছে। তারা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে এ উত্তেজনার মধ্যে গতকাল ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিমান হামলা থেকে সুরক্ষার মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বান করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এ বৈঠকে কংগ্রসে নেতা রাহুল গান্ধী ও মল্লিকার্জুন খাড়গে অংশ নেবেন বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ভারতের হামলার পর পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিভাজনও কিছুটা কমে আসার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। গতকাল পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে দেওয়া ভাষণে বিরোধী দলের সঙ্গে বসার জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। প্রধানমন্ত্রীর এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারপারসন গহর আলী খান। জাতীয় পরিষদে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, আজ কোনো রাজনীতি নয়। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষার বিষয়ে গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ। ভারতের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি জাতীয় পরিষদে বলেন, ‘হামলার জবাবের জন্য তোমরা প্রস্তুতি নাও।’
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ১৩টি দেশের দূতকে ব্রিফ করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। দূতদের তিনি বলেছেন, পাকিস্তান যদি পাল্টা হামলা চালায়, ভারতও তার জবাব দেবে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান রয়টার্সকে বলেছেন, ভারতীয় হামলার মাত্রা যেহেতু ২০১৯ সালের তুলনায় অনেক বেশি ছিল, তাই পাকিস্তানের পক্ষ থেকে একটি বড়সড় জবাব আসতে পারে।
আরো পড়ুন : ভারত যে সকল ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে পাকিস্তানে হামলা চালিয়েছে