ঝাটা মিছিলের ভয়ে এক মাস থেকে অনুপস্থিত ভোলাহাট ভূমি অফিসের কর্মচারী

অনুসন্ধানী ক্রাইম নিউজ জনদুর্ভোগ জাতীয় দুর্নীতি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পুরুষ প্রচ্ছদ মুক্তমত হ্যালোআড্ডা

ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলা ভSমি অফিসের কর্মচারী মোঃ সাদ্দাম হোসেন এক মাস থেকে অফিসে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ আছে সরকারি গাড়ি বাসা-বাড়িতে রেখে নিজস্ব কাজে ব্যবহার করা ও সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্যের কারণে সেবা গ্রহীতাদের ঝাটা মিছিলের ভয়ে এক মাস থেকে অফিসে অনুপস্থিত রয়েছেন।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে একাধিক দিন অফিসে গিয়ে তাঁকে অনুপস্থিত দেখা যায়। জানা যায়, তিনি ডিসেম্বর মাসের ২৬ তারিখ থেকে অফিসে আসছেন না। ডিসিআরে ১ হাজার ১৫০ টাকার জায়গায় অতিরিক্ত ১ হাজার ৩৫০ টাকা মোট ২৫ শত টাকা করে আদায় করতেন। তাঁকে ঘুষ না দিলেই সেবা গ্রহীতাদের নানা ভাবে হয়রানিতে ফেলার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। ।

জালাল উদ্দিন নামের একজন ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমি ডিসিআরের অতিরিক্ত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ডিসিআরের খতিয়ান দাগ নং জিরো জিরো করে রেখে দেন। এব্যাপারে ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার মেলেনি।’

উপজেলা পরিষদের একজন কর্মচারী তাঁর পরিচয় দিলেও মাফ পায়নি, গুনতে হয়েছে অতিরিক্ত টাকা। তিনি ভোলাহাট উপজেলা ভ‚মি অফিসে যোগদানের পর থেকেই
এমন ঘুষ বাণিজ্য চালিয়ে আসায় ভুক্তভোগীরা তাঁর বিরুদ্ধে ঝাটা মিছিলের প্রস্তুতি নেন।

জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিদা আক্তার সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকায় সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) অফিসে বসে নিজ দপ্তরে সকল কাজ করতেন। সাদ্দাম হোসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিদা আক্তারের কাছের লোক হওয়ায় ঝাটা মিছিল থেকে বাঁচাতে তাঁর (ইউএনও’র) ইশারায় এক মাস ধরে অফিসে আসেন না।

অফিসের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ছুটি না নিয়েও সাদ্দাম হোসেন অফিসে আসে না। অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই প্রমাণিত হবে। এদিকে নিয়মবহির্ভূত ভাবে সহকারী কমিশনারের (ভ‚মি) মোটর সাইকেলটি সাদ্দাম হোসেন নিজে ব্যবহার করেন। তিনি তাঁর ভাড়া বাসায় রেখে নিজের কাজে ব্যবহার করেন বলে জানা গেছে।

সচেতন মহল জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অফিসে সারাদিন বসে অফিস করেন। সাদ্দাম হোসেন অফিসে আসেন না এটা কি করে হয়। ঘুষ বাণিজ্যের এ হোতার বিরুদ্ধে সংশি¬ষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সরজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী ভুক্তভোগী সেবা গ্রহীতাদের।
এব্যাপারে মো. সাদ্দাম হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে

তিনি বলেন, ‘অসুস্থ্যতার জন্য ছুটি নিয়ে বাসায় আছি। তিনি সার্ভেয়ার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।’ উপজেলা ভ‚মি অফিসে সার্ভেয়ার লেমন কাউসার সাথে যোগাযোগ করা হলে বলেন, ‘তিনি ২ দিন থেকে ছুটিতে আছে।’ অফিসের হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে, প্রথমে দেখাতে চাইলেও পরে বলেন, স্যারের অনুমতি ছাড়া দেখাতে পারবেন না। ভ‚মি অফিসের মোটর সাইকেলের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি অসংগতিপূর্ণ বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, মোটর সাইকেল অফিসের কাজে ব্যবহার করে অফিসে রেখে দেওয়া হয়। আবার বলেন, মোটর সাইকেলটি পরিত্যপ্ত হয়ে গেছে। পরিত্যপ্ত মোটর সাইকেল দেখতে চাইলে বলেন, পরিত্যপ্ত হয়ে গেছে সে জন্য অফিসের কাজে ব্যবহার করতে সাদ্দামকে দেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিদা আক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে গেলে তাঁর অফিসে তালাবদ্ধ দেখা যায়। তাঁর মুঠো ফোনে
একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেরও ফোন রিসিভ করেননি। খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

গোলাম কবির
ভোলাহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

আরো পড়ুন : সিলেটে বিএনপি নেতার নেতৃত্বে সংখ্যালঘু পরিবারের উপর হামলা, জমি দখলের অভিযোগ

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *