নতুন বছরেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি শেয়ারবাজার

অর্থনীতি তথ্য-প্রযুক্তি দুর্নীতি প্রচ্ছদ মুক্তমত শিল্প প্রতিষ্ঠান শেয়ার-বাজার হ্যালোআড্ডা

নতুন বছরেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি শেয়ারবাজার। প্রতিদিন সূচক কমছে শেয়ারবাজারে। বাজারে বিনিয়োগকারীদের লগ্নির টাকা থেকে প্রতিদিন কমছে তাদের মূলধন। চলতি বছরের প্রথম মাসে শেয়ারবাজারে সূচক কমেছে প্রায় ১০০ পয়েন্ট। গত সপ্তাহের শুরুতে বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এই বিক্ষোভের পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে পাঁচ দিনের লেনদেনে সূচক কিছুটা বাড়লেও বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শেয়ারবাজার সংকুচিত করে রাখা হয়েছে। যার কারণে অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারছে না। বাজারে মানসম্পন্ন কোম্পানি নেই। যা আছে সেটা অপ্রতুল। ফলে বিনিয়োগ সুরক্ষিত থাকছে না। বাজারে সব ধরনের হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। তাহলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে শেয়ারবাজার।

চলতি বছরের শুরু থেকেই দরপতন চলছে শেয়ারবাজারে। জানুয়ারির ২২ দিনের লেনদেনে ডিএসইর সূচক কমেছে প্রায় ১০০ পয়েন্ট। এই সময় সূচক বেড়েছে মাত্র ছয় দিন। চলতি মাসের শুরুতে মূলধন হারিয়ে হতাশ বিনিয়োগকারীরা মতিঝিলের রাস্তায় নেমে ১১ দফা দাবিতে মহাসমাবেশ করেন। এর মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান ও আইসিবির চেয়ারম্যানকে দ্রুত অপসারণ করে নতুন যোগ্য চেয়ারম্যান নিয়োগের দাবি জানানো হয়। বাজারে কর্তৃপক্ষের অযাচিত হন্তক্ষেপ বন্ধ করার দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া আরও দাবি করা হয়, কোম্পানিগুলোকে আয়ের ন্যূনতম ৫০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে হবে। ব্যাংক, ফাইন্যান্স, ইনস্যুরেন্স, মিউচুয়াল ফান্ড, আইসিবিসহ পুঁজিবাজারে তাদের যতটুকু বিনিয়োগ করার কথা তা শতভাগ কার্যকর করতে হবে। টাস্ক ফোর্সের সংস্কারগুলো মিডিয়ার মাধ্যমে বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট অংশীজনদের দ্রুত জানাতে হবে। বিএসইসির দায়িত্বে অন্তত ১০টি মিউচুয়াল ফান্ড দ্রুত সময়ের মধ্যে বাজারে বিনিয়োগ নিয়ে আসা। ফোর্স সেল বন্ধ করতে হবে। এসব দাবি জানানো পর বাজারের সূচক কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হয়। তবে তালিকাভুক্ত বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বাড়েনি। এই পাঁচ দিনের বাজার লেনদেনে দেখা গেছে বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ডসহ ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে ২০০ কোম্পানির শেয়ারদর বাড়েনি। ১৯৫ কোম্পানির শেয়ারদর কিছুটা বেড়েছে।

এদিকে বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে সরকার ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিনিধিদের এ কমিটির সদস্য করা হয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবকে কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্মসচিবকে (শেয়ারবাজার) সদস্যসচিব করা হয়েছে। কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকবেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি (ন্যূনতম পরিচালক), বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের প্রতিনিধি (ন্যূনতম নির্বাহী পরিচালক), বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির প্রতিনিধি, ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের প্রতিনিধি, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান।

জানতে চাইলে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেছেন গত দেড় দশকে বাজারে নানা রকমের অনিয়ম, জালিয়াতি হয়েছে। অনিয়ম জালিয়াতির কারণে বাজার এক প্রকার স্থবির হয়ে পড়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি তার পূর্ণ ক্ষমতা ব্যবহার করে বাজারের উন্নয়নে কাজ করবে। কিন্তু তাদের নির্ভর করতে হয় মন্ত্রণালয়ের ওপর। এটা দিয়ে বাজারে আস্থা ফেরানো যাবে না। স্থিতিশীল হবে না। কমিশনকে পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওপরের নির্দেশ ছাড়া তারা কিছু করতে পারে না। এভাবে কোনো স্টক মার্কেট স্থিতিশীল হয় না।

আরো পড়ুন : দ্বিকক্ষবিশিষ্ট জাতীয় সংসদে ৫০০ আসন করার চূড়ান্ত সুপারিশ

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *