নিক্সন চৌধুরী নয়, কাজী জাফর উল্যাহ’র সমর্থকদের দখলে চরভদ্রাসন আ. লীগ কার্যালয়

প্রচ্ছদ রাজনীতি হ্যালোআড্ডা

ফরিদপুর প্রতিনিধি: দীর্ঘ দুই বছর পর আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ’র সমর্থকরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়। এর আগে এ কার্যালয়টি ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নয়র অনুসারীদের দখলে ছিল।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে তালা খুলে ওই কার্যালয় নিজেদের দখলে নেয়। পরে বিকেল ৫টার দিকে একই স্থানে কেক কেটে শেখ রাসেলের জন্মদিন পালন করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশের নেতারা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক শেখ ইসাহাক মিয়া, যুগ্ম আহবায়ক মোশাররফ হোসেন, আহসানুল হক ওরফে মামুন ও বেলায়েত হোসেন রুবেল। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, উপজেলা আওয়ামী লীগের এ কার্যালয়টি একটি পাকা দোতলা ভবন। এটি চরভদ্রাসন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত। ২০১২ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের তাৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মো. কাউসার পাঁচ শতাংশ জমি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের নামে দলিল করে দেন। পরে ওই জমিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় হিসেবে ওই দোতলা ভবনটি নির্মাণ করা হয়।

২০১৪ সালে ভাঙা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন। এর ফলে এ সংসদীয় এলাকার অন্য দুটি উপজেলার মতো চরভদ্রাসন উপজেলা আওয়ামী লীগ নিক্সনপন্থী ও কাজী জাফর উল্যাহপন্থী দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ২০২০ সালের নভেম্বরে তৎকালীন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাউসার নিক্সনের শিবিরে যোগ দেন। এরপর থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের ওই কার্যালয়টি নিক্সনপন্থীদের দখলে ছিল।

গত ৩০ মার্চ চরভদ্রাসন উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্বের কমিটি বিলুপ্ত করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা আওয়ামী লীগ। ওই কমিটির যুগ্ম আহবায়ক আহসানুল হক ওরফে মামুন জানান, কাউসার বহুদিন ধরে আওয়ামী লীগে নেই। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়টি জবর দখল করে রেখেছিলেন। এ পর্যায়ে আমরা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের ভবনটি দখলমুক্ত করার জন্য চিঠি দেই। জেলা আওয়ামী লীগ জানায়, দলীয় কার্যক্রম দলীয় কার্যালয়ে করতে হবে। সেই মোতাবেক আমরা ওই ভবনের তালা খুলে ভেতরে গিয়ে শেখ রাসেলের জন্মদিনের কর্মসূচি পালন করেছি এবং ভবনটি আমাদের নিজেদের হেফাজতে নিয়েছি।

জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাউসার বলেন, এটি আওয়ামী লীগের কার্যালয়। আওয়ামী লীগের সভাপতি কিংবা সম্পাদকের কার্যালয় নয়। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের যে কেউ ওই অফিস ব্যবহার করতে পারে। এটি দখল কিংবা পাল্টা দখলের কোনো বিষয় না।

নিজেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দাবি করে বলেন, আমাদের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে কিংবা আমাদের বাদ দেওয়া হয়েছে এ জাতীয় কোনো চিঠি আমরা কেন্দ্র থেকে পাইনি। পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট যে আহবায়ক কমিটির কথা বলা হচ্ছে তা কখন কোথায় কিভাবে গঠিত হয়েছে বা ঘোষণা করা হয়েছে তাও আমার জানা নেই।

আরো পড়ুন : জেনে নিন কোন কারণে তিন পুলিশ সুপার ‘বাধ্যতামূলক’ অবসরে

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *