সিলেট ব্যুরো: সমালোচনার মুখে সিলেট থেকে বদলী হলেন বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক এ কে এম মাজহারুল ইসলাম । এর আগেও বেশ কয়েকবার বদলী হয়েছিলেন। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির জোরে বার বার ফিরে এসেছেন। এবারও কি ফিরার সম্ভাবনা রয়েছে ? এমন প্রশ্ন ঘোরপাক খাচ্ছে সচেতন মহলে।
গত রোববার (৪ ডিসেম্বর) ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মাসব্য ও অর্থ)উম্মে সালমা তানজিয়া স্বাক্ষরিত পরিপত্রে তাকে বদলি করা হয়। এ বিষয়ে জানতে সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের পরিচালক এ কে এম মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
একাধিক সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে পরিচালক হিসেবে যোগ দেন এ কে এম মাজহারুল ইসলাম। এটি ছিলো তার চতুর্থ বারের মতো সিলেট পাসপোর্ট অফিসে যোগদান। এর আগে তিনি তিনবার বদলী হয়ে সিলেট পাসপোর্ট অফিসে ফিরে আসেন।
নগরের শেখঘাটস্থ সিলেট পাসপোর্ট অফিসে ১৯৯১-১৯৯২ সালে প্রথম যোগদান করেন। পরে তিনি অন্যত্র বদলি হন। ২০১১ সালে নগরীর উপশহরে এমআরপি পাসপোর্ট চালু হলে তিনি আবার সিলেট আসেন। এ সময় তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তিন মাসের মধ্যে তাকে সিলেট থেকে বদলি করা হয়।
২০১৭ সালে আবার সিলেটে বদলি হয়ে আসেন তিনি। এবারও দুনীর্তির জন্য বেশিদিন টিকতে পারেননি। সর্বশেষ তিনি ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চতুর্থ বারের মতো সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে পরিচালক হিসেবে যোগ দিয়েও নানা অনিয়মের কারণে সমালোচনার মুখে পড়েন।
মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের হয়রানি, ঘুষ, দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমেও বেশি কিছু তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশিত হয়। এমন অভিযোগে ৮ সেপ্টেম্বর দুদক সিলেটের সমন্বিত কার্যালয় থেকে অভিযানও পরিচালিত হয়। এছাড়া গত বছরের ২৮ অক্টোবর দুদকের গণশুনানিতে পাসপোর্ট অফিসের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তুলে ধরেন ভুক্তভোগীরা।
সম্প্রতি সিলেট বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে পাসপোর্ট করতে যাওয়া এক নারীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। ভুক্তভোগী ওই নারী মাজহারের বিরুদ্ধে গত ১৬ নভেম্বর এসএমপির মোগলাবাজার থানায় একটি সাধারণ করেন । পরদিন ১৭ নভেম্বর জিডির ঘটনায় বর্ণিত অপরাধ তদন্ত চেয়ে আদালতে আবেদন করে পুলিশ। এরপর রোববার (২০ নভেম্বর) ওই সাধারণ ডায়েরি তদন্তে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন মেট্টোপলিটন ২য় আদালতের বিচারক। এছাড়া গত ২৭ সেপ্টেম্বর সিলেট বিভাগীয় প্রশাসনের আয়োজন সংশ্লিষ্ট দফতরের সম্মেলন কক্ষে পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে জনসাধারণের ভোগান্তি লাঘব এবং সেবা সহজীকরণে অংশীজনদের নিয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় হয়রানির নানা অভিযোগ তুলে ধরা হয়। এ অবস্থায় বদলী হন তিনি।
সিলেট জেলা বারের আইনজীবি অ্যাডভোকেট মামুন রশিদ মামুন বলেন , নানা অনিয়মের কারণে বার বার বদলী হওয়ার পরও কিভাবে এই কর্মকর্তা সিলেটে ফিরে আসেন তা বোধগম্য হচ্ছেনা, কোন দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা সিলেটবাসী চায়না।
আরো পড়ুন : দিনাজপুরে দেশীয় চিকিৎসক সমিতি’র কর্মী সন্মেলন