সড়ক বিভাগে একক রাজত্ব বিস্তার করছেন ঠিকাদার আবেদ মনসুর। টেন্ডার পেতে ভুয়া অভিজ্ঞতা সনদ ব্যবহার করে প্রায় ৪৭১ কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন প্রভাবশালী এ ঠিকাদার। ক্ষমতাসীন দলের একজন প্রভাবশালী নেতার নাম ব্যবহার করে তিনি অনিয়মের মাধ্যমে শতকোটি টাকার মালিক হয়েছেন। সূত্র জানায়, জালিয়াতির মাধ্যমে শতকোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশন নামের এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে বড় প্রকল্পের কাজ বাগিয়ে নেয়া, টেন্ডার ক্যাপাসিটি না থাকার পরও সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের বড় বড় প্রকল্পের কাজ করে যাচ্ছে তার প্রতিষ্ঠান। জালিয়াতির অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও থমকে আছে সেই কার্যক্রম। এর বাইরে সড়ক ও জনপথ বিভাগের বিভিন্ন জেলার নির্বাহী প্রকৌশলীরা আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশন টেন্ডার পেতে ভুয়া অভিজ্ঞতা সনদ ব্যবহার করছে। অন্তত এক বছর আগে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে জানানো হলেও এ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। জানা গেছে, এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিতে ও জালিয়াতি গোপন করতে সহযোগিতা করছেন সওজের ঢাকা জোনের এক প্রকৌশলীসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা।
আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশন নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭-১৮ সাল থেকে কাজ শুরু করে। নিয়ম অনুযায়ী ৫ কোটি টাকার উপরে কোনোভাবে ঠিকাদারি কাজ পাওয়ার সুযোগ নেই।
কিন্তু তারা এককভাবে এবং অংশীদার হিসেবে একের পর এক কাজ পাচ্ছে। তাদের পাওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের মূল্য হচ্ছে প্রায় ৪৭০ কোটি টাকা। এগুলো আবেদ মনসুরের পাওয়ার কথা নয়। ভুয়া সনদ ব্যবহার করে টেন্ডার বাগিয়ে নেয়াসহ আবেদ মনসুরের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের কপি ইতিমধ্যে হাতে এসেছে। সূত্র জানায়, আবেদ মনসুরের এই কাজের সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন ঢাকা জেলার এ প্রকৌশলী। তিনিই মূলত ঠিকাদার আবেদকে রক্ষা করতে যা যা করা প্রয়োজন করে থাকেন। সওজের আরও একাধিক প্রকৌশলী মিলে আবেদ মনসুরের অবৈধ ঠিকাদারের কাজে সহায়তা করেন। তারাও নির্দিষ্ট পরিমাণের ভাগ-বাটোয়ারা পেয়ে থাকেন।
আবেদ মনসুরের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। এবং প্রতিটি অভিযোগের বিষয়ে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শেষে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের প্রতিটি চিঠিতে কর্তৃপক্ষ তার দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। এরমধ্যে সওজ-এর দেয়া এক চিঠিতে উল্লেখ আছে- কাজ পেতে তিনি যে কম্পলিশন সার্টিফিকেট ব্যবহার করেছেন সেটা ভুয়া।
সার্টিফিকেটটি মন্ত্রণালয় থেকে ইস্যু করা হয়নি। এত কিছুর পরেও অদৃশ্য কারণে আবেদ মনসুরের কাজগুলো চলমান রয়েছে। বিগত ৬ মাসে তিনি নতুন করে কোনো প্রকল্পের কাজ পাননি। তদন্তের বিষয়ে সূত্র জানায়, তদন্ত কমিটিকে একাধিকবার নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু অজানা কারণে মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তর থেকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। ২০১৭ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত আবেদ মনসুর প্রায় ৪শ’ ৪১টি প্রকল্পের কাজ করেছেন। এর মধ্যে ২শ’ কোটি টাকার কাজ বিভিন্ন অংশীদার নিয়ে এককভাবে তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান করে। বাকি ২শ’ ৭০ কোটি টাকার কাজ তিনি একাই করেন। তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে গঠন করা তদন্ত প্রতিবেদন মাঠ পর্যায়ে ইতিবাচক হলেও মন্ত্রণালয়ে গিয়ে রহস্যজনকভাবে আটকে যাচ্ছে।
সিপিটিউ’র তথ্য অনুযায়ী, আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশন ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪ কোটি ৯ লাখ টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৪৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৯৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকা এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬০ কোটি ২৪ লাখ টাকা মূল্যের একক ও যৌথ কাজ করেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের কাজ চলমান রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রথম কাজ পায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে। ২০১৭ সালের ২৮শে ডিসেম্বর পাওয়া কাজটি ছিল ঢাকা-আরিচা ন্যাশনাল হাইওয়ে রোড এন-৫ এর ২২ কিলোমিটার পেইন্টিং রোড মিডিয়ান পেইন্ট এবং থিনার সরবরাহ করা। যার টেন্ডার নম্বর- ১৪২৫০৬। এ কাজের মূল্য ছিল ২২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঢাকা সড়ক বিভাগের অধীনে জাতীয় মহাসড়ক (এন-৫) এবং বসিলা ব্রিজ অ্যাপ্রোচ রোড গাবতলী ব্রিজ, সাভার বাজার এলাকা এবং ঢাকা-আরিচা নবীনগরে ফিটিংসহ স্ট্রিট লাইট স্থাপনের প্রথম কাজ পায় আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশন। এ কাজের মূল্য ছিল ৪ কোটি টাকা। যার টেন্ডার নম্বর- ২৬১৬৩১।
সওজ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সড়ক বিভাগে কাজ পায় আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশন। শুরুর বছরে এককভাবে ৯২ লাখ টাকার কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি। টেন্ডার ক্যাপাসিটি অনুযায়ী, কাজ শুরুর প্রথম পাঁচ বছরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টাকার অঙ্কে পূর্বের বছরের দেড় গুণ বড় কাজ পেতে পারে। সেই হিসাবে পরের অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি সর্বোচ্চ এক কোটি ৩৮ লাখ টাকা মূল্যের কাজ পেতে পারে। সেখানে প্রতিষ্ঠানটি দ্বিতীয় অর্থবছরেই এককভাবে প্রায় ২১ কোটি টাকা মূল্যের কাজ করেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কাজ পেতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের বিভিন্ন জেলার নির্বাহী প্রকৌশলীদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করেছে। কুড়িগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় সড়ক বিভাগের বড় বড় প্রকল্প হাতিয়ে নিতেও ভুয়া কাজের অভিজ্ঞতা সনদ দেখিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আর এতে ব্যবহার করা হয়েছে সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলায় করা কাজের ভুয়া অভিজ্ঞতা সনদ।
এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নিম্নমানের কাজ করার অভিযোগও রয়েছে। নিয়মভঙ্গের পাশাপাশি জালিয়াতি করে অভিজ্ঞতা সনদ ব্যবহার করে কাজ পেলেও অদৃশ্য কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। সমপ্রতি লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের এক কোটি ৮৩ লাখ টাকার তিনটি কাজ বাগিয়ে নিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশনের বিরুদ্ধে ভুয়া অভিজ্ঞতা সনদ ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভুয়া সনদ ব্যবহারের অভিযোগ এনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে লিখিত অভিযোগ করে লক্ষ্মীপুরের মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজ। গত বছরের ২০শে নভেম্বর করা প্রতিষ্ঠানটির অভিযোগে বলা হয়, টেন্ডার পেতে আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশন কোটি টাকার কাজের টার্নওভার-কার্যসম্পাদনের যে সকল অভিজ্ঞতা সনদ দিয়েছে তা ভুয়া। ভুয়া সার্টিফিকেট দাখিল করার কারণে ২০২২ সালের ১২ই জানুয়ারি এবং ১৩ই ফেব্রুয়ারি পৃথক দিনে সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীরা আলাদা দুটি চিঠি ইস্যু করেন।
সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশনের সার্টিফিকেট জালিয়াতির বিষয়টি কুড়িগ্রাম সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানান। এতে তিনি আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশনের করা ৩৯টি ভুয়া কম্পলিশন সার্টিফিকেট যুক্ত করে দেন। এ ছাড়া পৃথক চিঠিতে আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশনের ১০টি ভুয়া কম্পলিশন সার্টিফিকেট যুক্ত করে কক্সবাজার সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকেও বিষয়টি জানান। আর বাগেরহাট সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরিদ উদ্দিন ভূঁইয়া ৫৬টি ভুয়া কম্পলিশন সার্টিফিকেট যুক্ত করে সড়ক বিভাগে পাঠানো সেই প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন এসব সার্টিফিকেট সড়ক বিভাগ থেকে ইস্যু করা হয়নি। এ ছাড়া এসব চিঠির অনুলিপি সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৗশলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীসহ দেশের বিভিন্ন জোন ও সার্কেলে পাঠানো হয়েছে। এসব ভুয়া কম্পলিশন সার্টিফিকেট ও চিঠি প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
দু’টো চিঠিতেই আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশনের বিরুদ্ধে ভুয়া কম্পলিশন সার্টিফিকেট (সমাপনী সনদ) দাখিল করে ফ্রডুলেন্স প্র্যাকটিস (প্রতারণামূলক অনুশীলন)-এর সমান শাস্তিযোগ্য অপরাধ করার বিষয়ে অভিযুক্ত করা হয়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া (তৎকালীন সাতক্ষীরা) সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। যে চিঠি পাঠানো হয়েছে ওটাই ডকুমেন্ট। এদিকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশনের করা জালিয়াতির বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে লিখিত আবেদন করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এসব আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ১৮ই অক্টোবর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মো. দেলোয়ার হোসেন ১০ কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীকে নির্দেশনা দেন। সেই চিঠির বিষয়বস্তু ছিল- আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশন গত ৩ বছরে ভুয়া ও অসত্য তথ্য দিয়ে কাজ পাওয়ায় আর্থিক দুর্নীতি তদন্ত ও জড়িত দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা। এর সাত দিন পর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (প্রকিউরমেন্ট সার্কেল) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ দেশের ১১টি সওজ জোন, তিনটি উইং, সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলীকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশনা দেন। তবে সেই চিঠিতে আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশনের পুরো নাম না লিখে লেখা হয়েছে- ‘মনুসর কনস্ট্রাকশন’।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (প্রকিউরমেন্ট সার্কেল) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমার কাছে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য নেই। এ বিষয়ে হয়তো একটি সামগ্রিক চিত্র দিতে পারি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো মন্ত্রণালয় পর্যায়ে হয়েছে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এলজিইডি বা পিডব্লিউডি’র মতো এই সমস্যাগুলো ছিল। একই ঠিকাদার বারবার কাজ পেতো। আমাদের এখানেও এই সমস্যাটি রয়েছে। যেখানে টাকার ভ্যালু বেশি অর্থাৎ বড় কাজ সে সকল স্থানগুলোতে আমরা বিভিন্নভাবে সমাধানের চেষ্টা করেছি। কিন্তু ১ কোটি টাকার নিচে যে কাজগুলো ওটিএম বা উন্মুক্ত দরপত্র হয়। ওটিএম-এর কারণে সম-দর এর ক্ষেত্রে তখন দেখা যায় একই ঠিকাদার অধিক সংখ্যক কাজ পাচ্ছে। এখান থেকে উত্তরণ পেতে ছোট কন্ট্রাক্টের কাজগুলো আইন অনুযায়ী এলটিএম বা লিমিটেড টেন্ডারিং মেথড করা হলে এই সমস্যাটি থাকতো না। কিন্তু আমরা এলটিএম-টিই কার্যকর করতে পারছি না। এটার প্রস্তাব ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এলটিএম হলে একজন ঠিকাদারের বারবার কাজ পাওয়ার সুযোগ কমবে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব (কানেক্টিভিটি শাখা) মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, এরকম অভিযোগের কথা শুনেছি। এটা আমার শাখায় না। আমার শাখা থেকে একবার একটি অভিযোগ পেয়েছিলাম এ সংক্রান্ত বিষয়ে। পরবর্তীতে তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী বরাবর পাঠিয়েছিলাম-অভিযোগ সংক্রান্ত মতামত বা পদক্ষেপের জন্য। কিন্তু পরবর্তীতে প্রকৌশলী অভিযোগটি মন্ত্রণালয়ের অন্য শাখায় পাঠান।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী মো. ইসহাক বলেন, আমি তখন সবেমাত্র সওজে যোগদান করি। এর কিছুদিন পরে চাকরি থেকে অবসরে চলে আসি। আবেদ মনসুরের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগের বিষয়ে শুনলেও এ বিষয়ে বর্তমান প্রকৌশলী ভালো বলতে পারবেন।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মইনুল হাসান মানবজমিনকে বলেন, আমাদের কাছে এ সংক্রান্ত অনেক অভিযোগই আসে। আবেদ মনসুরের দুর্নীতি সংক্রান্ত বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা নেই। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, এর আগে আবেদ মনসুরের অভিজ্ঞতা সংক্রান্ত কাগজপত্র সঠিক না থাকায় ঢাকার বাইরের একটি কাজ তিনি পাননি। এরপর তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পাই আমরা। পরবর্তীতে সেটি তদন্ত করা হয়। আমরা পুনরায় অভিযোগটি ভালোভাবে তদন্ত করে দেখবো।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী আবেদ মনসুর বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটি চক্র কাজ করছে। তারা যে সকল অভিযোগ এনেছে সব ভুয়া। এবং মিথ্যা। একই ঠিকাদার পরপর কাজ পাওয়ার ঘটনা আমার একার ক্ষেত্রেই ঘটেনি। মন্ত্রণালয়ে আমার মতো ঠিকাদারি কাজ পাওয়া এমন ঠিকাদারদের মধ্যে আমি চতুর্থ অবস্থানে রয়েছি। কারা আপনার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন জানতে চাইলে এই ঠিকাদার বলেন, কারা এটা করছে তাদের নাম উল্লেখ করতে চাচ্ছি না। আমি তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। সুত্র-মানবজমিন
আরো পড়ুন : বাইরের এবং ঢাকার সমান সমানই ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে