অনলাইন জুয়ার টাকা পাচারের অভিযোগে ৯ যুবককে গ্রেফতার করেছে গাজীপুর পুলিশ

অনুসন্ধানী ক্রাইম নিউজ দুর্নীতি পুরুষ প্রচ্ছদ

গাজীপুর প্রতিনিধি: অনলাইনে জুয়া খেলে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ৯ যুবককে গ্রেফতার করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত বুধবার সদর থানার পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন নাসির মৃধা, মারুফ হাসান, জাহিদুল ইসলাম ওরফে রসুল, আশিকুর রহমান ওরফে আশিক, কাউসার হোসেন, রুবেল হোসেন, আশিকুল হক, আকরাম হোসেন রিপন ও মুরাদ হাসান।

বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম তার কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান। এ সময় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, জিয়াউল হক, উপ-পুলিশ কমিশনার আবু তোরাব মো. শামসুর রহমান, মোহাম্মদ ইলতুৎমিশ, মো. হুমায়ুন কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মো. আলমগীর হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃতদের জব্দকৃত মোবাইল ফোন, বিকাশ, রকেট ও ব্যাংক হিসাব এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, বাংলাদেশে অবৈধ অনলাইন জুয়ার প্লাটফর্ম velki live (সাবেক নাম 9Wickets) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসে ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে Google chor সব ব্রাউজার ব্যবহারের মাধ্যমে সমাজের উঠতি বয়সের যুবকদের আসক্ত করে বিদেশে পাচার করে নেওয়া হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। তারা মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে WhatsApp Business Account খুলে নিজেদের প্রকৃত পরিচয় গোপন করে যোগাযোগ করে থাকে। এই সার্ভারটি প্রধানত নিয়ন্ত্রণ করে থাকে velki live-এর অ্যাডমিন আকাশ মালিক ওরফে রনি (বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুবাই প্রবাসী)। তিনি এটিকে ওয়েব সাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন বিদেশি নম্বর ব্যবহার করে সারা বাংলাদেশের পাঁচটি পর্যায়ে বিভক্ত করে কাজ চালিয়ে যান।

তিনি আরও জানান, জিএমপি সদর থানা কর্তৃক প্রথমে মাস্টার এজেন্ট নাসির গ্রেফতার হলে তার দেওয়া তথ্য, ব্যবহৃত মোবাইলের মেসেঞ্জার, হোয়টাসঅ্যাপ চ্যাটিং ও এমএফএস (বিকাশ/নগদ /রকেট) যাচাই করে দেখা যায় যে তার কাছে রুট লেবেলের প্রায় ৭০ জন ব্যবহারকারীর কাছ থেকে দৈনিক লক্ষাধিক টাকা সংগ্রহ করে তার ঊর্ধ্বতন সুপার এজেন্ট মারুফের কাছে দেয়। মারুফকে গ্রেফতারের জন্য উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হলে উল্লিখিত সাত জনেরও জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল, মেসেঞ্জার, হোয়টাসঅ্যাপ চ্যাটিং ও এমএফএস (বিকাশ/নগদ/রকেট) যাচাই করে দেখা যায় যে, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের (এজেন্ট ব্যাংক) ১৪৮টি অ্যাকাউন্টে গত নভেম্বর মাসে ২ কোটি টাকার অধিক লেনদেন হয়েছে। এ হিসেবে বাংলাদেশে প্রায় দেড় হাজারটি মাস্টার এজেন্টের মাধ্যমে এক মাসেই ৩ হাজার কোটি টাকার অধিক লেনদেন হয়েছে বলে প্রতিয়মান হয়; যা বাংলাদেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। ফলে দেশ হতে পাচার হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। এ-সংক্রান্তে সদর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এবং সিআইডি কর্তৃক মানি লন্ডারিং আইনে মামলা গ্রহণের ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

আরো পড়ুন : কোথায় হবে বিএনপির সমাবেশ, কমলাপুর স্টেডিয়াম না মিরপুর বাঙলা কলেজ?

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *