এমন ম্যাচও তবে হারা যায়! ২৯৯ রানের লক্ষ্যটা খুব সহজ না হলেও, ব্লুমফন্টেইনে ডেভিড ম্যালান ও জেসন রয় যতক্ষণ ব্যাট করছিলেন ইংল্যান্ডের জয়টা সময়ের ব্যাপার বলেই মনে হচ্ছিল। ১৯ ওভারেই কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৪৪ রান তুলে ফেলেছিলেন দুই ইংলিশ ওপেনার। দ্রুত ৩ উইকেট হারালেও রয়ের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে জয়ের পথেই ছিল ইংলিশরা।
তবে ১১৩ রান করে রয় ফিরতেই ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইন যেন তাসের ঘর। ২৭১ রানে গুটিয়ে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা হেরেই যায় জস বাটলারের দল। ২৭ রানে ম্যাচ জিতে ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল প্রোটিয়ারা। এই জয়ে সরাসরি ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার আশাটাও বাঁচিয়ে রাখল তারা।
জবাব দিতে নেমে ইংলিশদের দারুণ শুরু এনে দেন দুই ওপেনার ম্যালান ও জেসন রয়। এ দুজনের ব্যাটই মূলত গড়ে দেয় জয়ের ভিত্তি। ৯ম ওভারেই দলকে ৫০ পার করান এ জুটি। মালান একটু রয়েসয়ে খেললেও রয় ছিলে আগ্রাসী। ৪৫ বলেই পূরণ করে নেন ফিফটি।
এরপর রান তোলার গতি আরও বাড়ান রয়। ১৬তম ওভারেই দলকে এক শ রানের কোটা পার করান এ দুজন। এরপর দ্রুত ম্যালান (৫৯), বেন ডাকেট (৩) ও হ্যারি ব্রুক (০) ফিরে গেলেও ঝড় থামাননি রয়। ৭৯ বলেই তুলে নেন নিজের ১১তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি।
শতকে পৌঁছে অবশ্য ইনিংসটাকে আর বড় করতে পারেননি রয়। কাগিসো রাবাদার বলে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই ওপেনার। ফেরার আগে ৯১ বলে ১১ চার ও ৪ ছয়ে ১২৪.১৭ স্ট্রাইক রেটে রয় করেছেন ১১৩ রান। তবে রয়ের বিদায়ের পর পথ হারিয়ে ফেলে ইংলিশরা। জস বাটলার (৩৬) ছাড়া আর কেউ দাঁড়াতেই পারেননি।
বিশেষ করে সিসান্দা মাগালা ও এনরিখ নর্কিয়ার বোলিংয়ের কোনো জবাবই যেন ছিল না ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের। নর্কিয়া ৪ ও মাগালা নেন ৩ উইকেট। এদিন ৪ উইকেটে ১৯৬ থেকে ২৫০ রানে যেতে ইংল্যান্ড হারিয়ে ফেলে ৭ উইকেট। এ পরিস্থিতি থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ইংলিশরা। থেমে যায় ২৭১ রানেই।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকাকে আগে উড়ন্ত শুরু এনে দেন দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও টেম্বা বাভুমা। ৭ ওভারেই দলকে ৫০ পার করান এ দুজন।৮.৪ ওভারে মঈন আলীর বলে টাইমিং গড়বড় করে মিড অনে স্যাম কারেনকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন প্রোটিয়া অধিনায়ক বাভুমা। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ২৮ বলে ৩৬ রান। সঙ্গী হারিয়ে বেশি দূর যেতে পারেননি ডি ককও (৩৭)। দলীয় ৮৭ রানে কারেনের শিকার হয়ে ফেরেন এ ওপেনার।
দুই ওপেনারকে হারানোর পর এইডেন মার্করামকে নিয়ে জুটি গড়েন ফন দার ডুসেন। ডুসেন এক প্রান্ত আগলে রাখলেও থিতু হতে পারেননি মার্করাম। অলি স্টোনের বলে দারুণ এক ক্যাচ নিয়ে ১৩ রান করা মার্করামকে ফিরিয়েছেন ম্যালান। হেইনরিখ ক্লাসেনকে সঙ্গে নিয়ে প্রোটিয়াদের ১৭১ রানে পৌঁছে দেন ডুসেন। ৩০ রান করা হেইনরিখকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন আদিল রশিদ।
এরপর ডুসেন ও ডেভিড মিলারের জুটিতেই চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহের ভিত পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এই জুটিতে আসে ১০১ বলে ১১০ রান। কারেনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরার আগে ১১৭ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ১১১ রান করেন ডুসেন। আর শেষ ওভারে আউট হওয়ার মিলারের ব্যাট থেকে আসে ৫৬ বলে ৫৩ রান। ইংল্যান্ডের হয়ে ৩৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন কারেন।
আরো পড়ুন : জেনে নিন কোন কেন এত ফিলিস্তিনির প্রাণ ঝরছে, ২০২৩ সাল হতে পারে আরো ভয়ানক