বিশেষ প্রতিনিধি : আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে বাদ পড়লেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি দুই দফায় আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। বর্তমানে ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতিও। তবে তিনি সংসদে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত। নির্বাচনী এলাকাতেও যান না। তিনি এখন বিদেশে অবস্থান করছেন।
খন্দকার মোশাররফ প্রথমে প্রবাসীকল্যাণ, পরে স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সাবেক এই মন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ফরিদপুরে ক্ষমতার দাপট দেখানো ও অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে।
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুসারে, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যসংখ্যা ৫১ জন। তবে দলীয় সভাপতি চাইলে এই সংখ্যা বাড়াতে পারেন। খন্দকার মোশাররফ হোসেন গত কয়েকটি সম্মেলনেই উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন।
এবার খন্দকার মোশাররফ ছাড়া উপদেষ্টা পরিষদ থেকে আর কেউ বাদ পড়েননি। বরং সভাপতিমণ্ডলী ও সম্পাদকমণ্ডলী থেকে বাদ পড়া পাঁচজন নেতাকে উপদেষ্টা পরিষদে স্থান দেওয়া হয়েছে। এরপরও উপদেষ্টা পরিষদে আরও অনেক পদ ফাঁকা রয়েছে। কারণ, ২০১৯ সালের জাতীয় সম্মেলনের পর করোনা মহামারির সময় উপদেষ্টা পরিষদের বেশ কয়েকজন নেতা মারা যান। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত, রহমত আলী, এইচ টি ইমাম, অধ্যাপক আলাউদ্দিন আহমেদ, মকবুল হোসেন, আবদুল বাসেত মজুমদার, মুকুল বোস, জয়নাল আবেদিন হাজারী, আবুল হাসনাত।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ফরিদপুর-৩ আসন থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ২০০৯ সালে তাঁকে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী করা হয়। এরপর ফরিদপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে খন্দকার মোশাররফ হোসেনের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হয়। এ সময় তাঁর অনুগতরা বিভিন্ন সরকারি সংস্থার উন্নয়নকাজের দরপত্র নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি ও জমি দখল করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তিনি মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েন।
২০২০ সালের ৭ জুন ফরিদপুরে খন্দকার মোশাররফের বাড়িতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাঁর দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগী ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন ওরফে বরকত এবং তাঁর ভাই ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান ওরফে রুবেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর দুই দিন পর ৯ জুন খন্দকার মোশাররফ ঢাকায় চলে আসেন। এরপর ওই বছরের ১৪ জুলাই এক রাতের জন্য ফরিদপুর গিয়েছিলেন খন্দকার মোশাররফ। তারপর তাঁর চাচির জানাজায় অংশ নিতে আরেকবার ফরিদপুর যান ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। তাঁকে আর নিজের নির্বাচনী এলাকায় দেখা যায়নি।
সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, খন্দকার মোশাররফ হোসেন সর্বশেষ জাতীয় সংসদের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন গত ৬ এপ্রিল। সেটি ছিল একাদশ জাতীয় সংসদের ১৭তম অধিবেশন। এরপর বাজেট অধিবেশনসহ তিনটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর কোনোটিতেই উপস্থিত ছিলেন না খন্দকার মোশাররফ হোসেন। জানা গেছে, সাবেক এই মন্ত্রী সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে আছেন।
আরো পড়ুন : জেনে নিন বিপিএলে কবে, কোথায়, কার খেলা