মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা : মানিকগঞ্জের ঘিওরে ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত সেতুর আকার বৃদ্ধি এবং সংস্কার চলছে ধীরগতিতে। উপজেলার ধুলন্ডি-সিংজুরী আঞ্চলিক পাকা সড়কের পেঁচারকান্দা এলাকায় ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত এই সেতু সংস্কারের কাজের ব্যয় ২ কোটি ৫৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। গত ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ শুরু হওয়া কাজ ২০২৪ সালের ২০ জুলাইয়ের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরও কাজের অগ্রগতি অর্ধেকও হয়নি। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে এ পথে চলাচলকারী তিনটি ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় এ সেতুর উপকারভোগীদের যানবাহন নিয়ে জেলা সদরে যেতে হচ্ছে কমপক্ষে ১০ কিলোমিটার ঘুরে। এতে করে এলাকার শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, কৃষকসহ সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এ সড়কে প্রতিদিন সিংজুরী, পয়লা ও বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে থাকে।
অন্যদিকে হেঁটে বিকল্প কাঠের মই দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে স্থানীয়দের। এ অবস্থায় সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করার তাগিদ দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় সাইংজুরী গ্রামের আল আমিন বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে কাজের ধীরগতি হচ্ছে। অল্প সংখ্যক লোক দিয়ে কোনোমতে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কাজ চলছে। এছাড়াও অদক্ষ শিশু শ্রমিক দিয়ে করানো হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ সেতুর কাজ।
উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে পেঁচারকান্দা বাজার সংলগ্ন ধলেশ্বরী নদীর ওপর ১০০ দশমিক ১০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু নদীর উত্তর পাশে বন্যার ভাঙনে সেতুর এপ্রোচ সড়ক নদীতে বিলীন হওয়ায় যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ‘প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজ’ প্রকল্পের আওতায় ২ কোটি ৫৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ২৫.৮ মিটার সেতু বৃদ্ধি ও পুরো সেতু সংস্কারের কাজ হাতে নেয় এলজিইডি। এ কাজের দায়িত্ব পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মিতু ট্রেডার্স জামালপুর। নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরও কাজের অগ্রগতি মাত্র ৫০ ভাগ। এরই মধ্যে কাজ এগিয়ে নিতে ব্যর্থ হওয়ায় ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ানোর আবেদন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
স্থানীয় বালিয়াখোড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়াল খান বলেন, জনগণের ভোগান্তি দেখে সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানাই। তিনটি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের চলাচলে খুবই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে কৃষিপণ্য ও উপকরণ পরিবহনে দ্বিগুণ অর্থ অপচয় এবং কয়েক কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি পিন্টু সাহা ফোনে জানান, জাতীয় নির্বাচন এবং বর্ষার কারণে কাজ শুরু করতে একটু বিলম্ব হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে কাজের সময় বাড়ানো হয়েছে। আগামী জানুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা জানান তিনি।
উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. শাহিনুজ্জামান বলেন, বর্তমানে সেতুর কাজ চলমান রয়েছে। শিডিউল অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে মধ্যে ৫০ ভাগ কাজ হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এ কাজে নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ বাস্তবায়নের জন্য তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন : বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশকে মৌলবাদী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচয় করাতে চায় ফ্যাসিস্টরা