আমার ছোট্ট ভাতিজির কি হবে?’ ‘কে দেখবে ৫ বছরের ইয়ানুরকে?’

ওকে নিউজ স্পেশাল জনদুর্ভোগ প্রচ্ছদ শিশু অধিকার শিশু/কিশোর

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : মিরসরাইয়ে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ড্রেজার ‍ডুবির ঘটনায় শ্রমিক আলম সরদার (৩৯) সহ মোট ৮ জনের লাশ উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। এ ঘটনায় নিহত আলম সরদার পটুয়াখালী জেলার পটুয়াখালী সদর উপজেলার চর জৈনকাঠি গ্রামের নুর সরদারের ছেলে।

আলম সরদারের ছোট ভাই ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘প্রায় দশ বছর ধরে আমার ভাই ড্রেজারে বালু উত্তোলনের কাজ করে আসছেন। আর্থিকভাবে অসচ্ছল আলম সরদারের ভিটে মাটি ছাড়া আর কোনো সম্পত্তি নেই বলেও জানান তিনি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা তিন ভাই পারিবারিকভাবে আলাদা। আমার বড় ভাই ছিলেন আমার বাবার মতো। তার দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। একজনের নাম জান্নাত (১৮) অপরজন ইয়ানুর (৫)। জান্নাতের বিয়ে দেওয়া হয়েছে এক বছর আগে। আমার ভাই কাজ করে যে টাকা পেতো তা দিয়ে কোনো মতে তাদের সংসার চলতো। এখন আমার ছোট্ট ভাতিজির কি হবে, কে দাঁড়াবে আমার ভাইয়ের পরিবারের পাশে?’

তিনি আরও বলেন, ‘ড্রেজার ডুবে ভাইয়ের নিখোঁজের খবর শুনে গত মঙ্গলবার সকালে পটুয়াখালী থেকে রওয়ানা দিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় এখানে এসেছি। ভাইয়ের লাশের অপেক্ষায় দুইদিন সাগর পাড়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম।’

আলম সরদরের ছোট ভাইয়ের অভিযোগ, ‘উদ্ধার তৎপরতায় ধীরগতি হওয়ায় লাশ পেতে দেরি হয়েছে। ড্রেজারটি উদ্ধার করার জন্য জাহাজের বড় ক্রেন ব্যবহার করা হলে দ্রুত লাশ বের করা যেতো। তিনদিন হয়ে যাওয়াতে লাশগুলো অনেকটা পঁচে গেছে। ভাইয়ের শরীর অক্ষত পাইনি।’

চোঁখে পানি নিয়ে ছিদ্দীকুর রহমান বলেন, ‘ড্রেজার ডুবে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত মালিকপক্ষ কিংবা সরকারিভাবে কোনো সহায়তা করা হয়নি। আর্থিকভাবে সহয়তা না পেলে ভাইয়ের পরিবারের রাস্তায় নামা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।’

প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে গত সোমবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার সাহেরখালী ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের বসুন্ধরার ৩ নম্বর জেটি এলাকার পশ্চিমে এ ড্রেজারডুবির ঘটনা ঘটে। পরে গত বুধবার এ ঘটনায় নিখোঁজ ৪ জনের লাশ উদ্ধার করে কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের একটি দল। এর পর গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে নিখোঁজ বাকি ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

আরো পড়ুন: আজ ২৮ অক্টোবর; আজকের দিনে জন্ম-মৃত্যুসহ যত ঘটনা

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *