ইরানের চারপাশে ১১ দেশে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫ হাজার সেনা

আইন-আদালত আন্তর্জাতিক ক্রাইম নিউজ জনদুর্ভোগ তথ্য-প্রযুক্তি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচ্ছদ মুক্তমত রাজনীতি হ্যালোআড্ডা

কয়েক দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যের ১১ দেশে বেশ কিছু ঘাঁটি পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে বছরের পর বছর ধরে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করেছে।

ইরানের চারপাশের এসব দেশগুলোতে ৪৫ হাজারেরও বেশি সেনা মোতায়েন করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। মধ্যপ্রাচ্য ছাড়াও বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোতেও মার্কিন ঘাঁটি রয়েছে। আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে প্রায় ৭৫০টি মার্কিন ঘাঁটি রয়েছে।

২০২৩ সালের অক্টোবরের সর্বশেষ উপলব্ধ তথ্য অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যের ১১ দেশে প্রায় ৪৫ হাজার ৪০০ মার্কিন সেনা রয়েছে। ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্সের (ডিওডি) বরাত দিয়ে মার্কিন অনলাইন সংবাদমাধ্যম অক্সিওস এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশগুলোতে মার্কিন স্বার্থ রক্ষা করার পাশাপাশি ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের (আইএসআইএস) বিরুদ্ধে লড়াই করতে এসব সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

কুয়েত : কুয়েতে সবচেয়ে বেশি প্রায় ১৩ হাজার ৫০০ সেনা রয়েছে। ১৯৯১ সাল থেকেই হাজার হাজার মার্কিন সেনা কুয়েতে অবস্থান করছে।

বাহরাইন : অক্সিওসের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২ সাল পর্যন্ত বাহরাইনে ৯ হাজার সেনা থাকার কথা জানা গেছে।

কাতার : কাতারে কমপক্ষে ৮ হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে। কাতারের রাজধানী দোহার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত বৃহৎ আল উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে মোতায়েন করা হয়েছে। এটি মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের আঞ্চলিক সদর দপ্তর হোস্ট করে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত : কয়েক বছর ধরেই সংযুক্ত আরব আমিরাত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। যেখানে ৩ হাজার ৫০০ মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে।

জর্ডান: যদিও মার্কিন সেনাবাহিনীর উপস্থিতি জর্ডানের রাজনীতিতে একটি সংবেদনশীল অভ্যন্তরীণ সমস্যা। তবুও জর্ডান সরকারের অনুরোধে জর্ডানে প্রায় ২ হাজার ৯০০ জন সেনা থাকার কথা জানা গেছে। ডিওডি বলেছে, আইএসআইএসের বিরুদ্ধে জর্ডানের অভিযানকে সমর্থন করতে, নিরাপত্তা বাড়াতে ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রচারের জন্য তাদের সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে। আরও বলেছে, জর্ডানের বিমানঘাঁটি, বিশেষ করে সিরিয়া ও ইরাকে মার্কিন গোয়েন্দা মিশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

সৌদি আরব: সৌদি আরবে ২ হাজার ৭০০ মার্কিন সেনা রয়েছে। দেশটির সশস্ত্র বাহিনীকে প্রশিক্ষণ, পরামর্শ দিতে ও সহায়তা করতে এবং এই অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থ রক্ষা করতে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। হোয়াইট হাউজের মতে, সেখানকার সৈন্যরা বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বজায় রাখে এবং সামরিক বিমান পরিচালনায় সহায়তা করে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এর থেকেও বেশি সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল।

ইরাক: ইরাকে ঠিক কতজন সেনা রয়েছে তা প্রকাশ করেনি ডিওডি। তবে এটি ২০২১ সালে বলেছে, কর্মীদের সংখ্যা ২ হাজার ৫০০তে নেমে গেছে। সেনারা সেখানে ইরাকি সশস্ত্র বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেয় ও পরামর্শ দেয়। এছাড়াও আইএসআইএসের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহও করে।

তুরস্ক: তুরস্কে যুক্তরাষ্ট্রের ১ হাজার ৮৮৫ সেনা রয়েছে।

সিরিয়া: প্রায় ৯০০ সেনা আইএসআইএসের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনা করতে সিরিয়ায় রয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় ১০০ জন ফ্রি সিরিয়ান আর্মিকে (সিরিয়ার সামরিক বাহিনী) সমর্থন করছে।

ওমান: ওমানে বিমানবাহিনীর কয়েকশ সেনা মোতায়েন রয়েছে।

ইসরাইল: ইসরাইলেও একটি মার্কিন ঘাঁটি রয়েছে। যার কোড নাম ‘সাইট-৫১২’। এ ঘাঁটিতে একটি রাডার নজরদারি সিস্টেম রয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের হুমকি শনাক্ত এবং ট্র্যাক করতে পারে বলে মনে করা হয়। তবে এখানে ঠিক কত সেনা রয়েছে তা স্পষ্ট নয়।

কোন দেশে ঠিক কতটা ঘাঁটি রয়েছে ডিওডি তার কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বিষয়ক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক শিকাগো কাউন্সিল অন গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স জানিয়েছে, তুরস্ক, কুয়েত এবং সৌদি আরব প্রতিটিতে দেশে কমপক্ষে ১০টি ঘাঁটি রয়েছে। সামরিক ঘাঁটির অনলাইন ওয়েবসাইট মিলিটারিবেস.কম জানিয়েছে, ইরাকে ১২টি মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।

ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড সমর্থিত ৮৫টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় শুক্রবার এ হামলা হয়েছে। এএফপির খবরে বলা হয়েছে, হামলায় ১৬ জন নিহত হয়েছেন। গত রোববার (স্থানীয় সময়) সিরিয়ার সীমান্তের কাছে জর্ডানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার প্রতিক্রিয়া হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র এ হামলা চালিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আরো পড়ুন : ২৮টি দেশে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের গুপ্তচর সনাক্তের দাবি করল ইরান

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *