উচ্চ রক্তচাপ মোকাবেলায় সম্মিলিতভাবে কাজ করার তাগিদ

প্রচ্ছদ মুক্তমত স্বাস্থ্য কথা

বাংলাদেশে প্রতি ৫ জনে ১ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ (২১%) উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। উচ্চ রক্তচাপের কারণে বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ বিশেষত হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এবিষয়ে গণসচেতনতা তৈরি, ওষুধ এবং চিকিৎসাসেবা সহজলভ্য করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (এনসিডিসি) প্রোগ্রাম। তবে উচ্চ রক্তচাপের ক্রমবর্ধমান প্রকোপ ও বিস্তার কমাতে সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা, গণমাধ্যমসহ সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। আজ ১৮ মে ২০২২, বুধবার রাজধানীর ফার্স হোটেলে এসব বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (এনসিডিসি) প্রোগ্রামের কর্মকর্তাবৃন্দ। বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস ২০২২ উপলক্ষ্যে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) এর সহায়তায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এনসিডিসি প্রোগ্রাম, প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ সম্মিলিতভাবে এই ‘মিট দ্য প্রেস’ আয়োজন করে। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য “সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং দীর্ঘজীবী হোন”।

অনুষ্ঠানে জানানো হয় উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় ২০১৮ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে এনসিডি কর্নার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ‘উচ্চ রক্তচাপ শনাক্তকরণ, চিকিৎসা এবং ফলোআপ’ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সারাদেশে এই এনসিডি কর্নারের সংখ্যা ২০০তে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, “উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ ক্রমবর্ধমান। এই সংকট মোকাবেলায় স্বাস্থ্য খাতসহ সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থা, গণমাধ্যম সবাইকেই সম্মিলিত ভাবে কাজ করতে হবে।”

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব:) আব্দুল মালিক তার বক্তব্যে বলেন, “আমাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থার ওপর জোর দিতে হবে। শুধু হাসপাতাল বানিয়ে উচ্চ রক্তচাপের মত অসংক্রামক রোগের প্রকোপ থেকে জাতিকে রক্ষা করা যাবে না।”

উচ্চ রক্তচাপজনিত হৃদরোগ ও অন্যান্য অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বিষয়ে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি এবং স্বাস্থ্যসম্মত জীবন-যাপন যেমন: অতিরিক্ত লবণ খাওয়া পরিহার করা, ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা, তামাক ও মদ্যপান পরিহার করা, অতিরিক্ত ওজন কমানো এবং নিয়মিত ব্যায়াম ও শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকার বিষয়ে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।

উচ্চ রক্তচাপকে বলা হয় নীরব ঘাতক। অধিকাংশ সময় এই রোগের নির্দিষ্ট কোন লক্ষণ এবং উপসর্গ থাকে না। উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা করা না হলে বুকে ব্যথা বা অ্যানজাইনা, হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইল এবং হার্ট বিট অনিয়মিত হওয়ার পাশাপাশি স্ট্রোক হতে পারে। এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপের কারণে কিডনির ক্ষতি হয়। নিয়মিত ওষুধ সেবনের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো যায়।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর এর বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের রোগতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী ও কার্ডিওলজি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. মীর ইশরাকুজ্জামান এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।

বার্তা প্রেরক,

মাহমুদ আল ইসলাম শিহাব- প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর

হাইপারটেনশন কন্ট্রোল, প্রজ্ঞা।

আরো পড়ুন : ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে জেপি মরগান চেজ ব্যাংকের দ্বিপাক্ষিক সভা

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *