লিওনেল মেসি, নেইমার, কিলিয়ান এমবাপ্পেদের বিপক্ষে রিয়াদ একাদশের হয়ে প্রীতি ম্যাচে জোড়া গোল দিয়ে সৌদি আরবের ফুটবলে যাত্রা শুরু হয়েছিল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর। সেদিন তাঁর দল হারলেও মনে হচ্ছিল সৌদি আরবে রোনালদোর সময়টা ভালোই কাটবে। কিন্তু দেশটির প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ফুটবলে রোনালদোর অভিষেকটা ভালো হয়নি। সৌদি প্রো লিগে নিজের প্রথম ম্যাচে গোল পাননি। এরপর গোল করতে ব্যর্থ হন সুপার কাপের সেমিফাইনালেও। সেই ম্যাচে আল-ইত্তিহাদের কাছে তাঁর দলও যায় হেরে।
এরপর তো বলাবলি হচ্ছিল সৌদি আরবের ফুটবলটা রোনালদোর জন্য মোটেই মধুচন্দ্রিমার হবে না। অনেকে তো এমনও বলছিলেন-সৌদি আরবের ফুটবলও এখন রোনালদোর জন্য কঠিন! কিন্তু সেই সমালোচনা কিছুটা হলেও রোনালদো চাপ দিতে পারেন আল-নাসরের হয়ে পরের ম্যাচটি খেলতে নেমে। প্রো লিগে ৩ ফেব্রুয়ারির সেই ম্যাচে তাঁর শেষ মুহূর্তের পেনাল্টি গোলেই আল-ফাতেহর সঙ্গে ২-২-এ ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল আল-নাসর। আর আজ তো রোনালদো তাঁর আসল রূপে আবির্ভূত। একটি নয়, দুটি নয়-এবার ৪ গোল করলেন রোনালদো। তাঁর চার গোলে মক্কায় আল-ওয়েহদার মাঠ থেকে ৪-০ ব্যবধানের জয় নিয়ে ফিরেছে আল-নাসর।
ম্যাচের শুরুতে অবশ্য রোনালদোকে দেখে মনে হয়নি, আজকের দিনে তাঁর জন্য এমন ভালো কিছু অপেক্ষা করছে। শুরুতে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডাররা কিছুটা হলেও আটকে রাখতে পারছিলেন তাঁকে। পর্তুগিজ তারকাও বারবার বল হারাচ্ছিলেন। কিন্তু ম্যাচের ২১ মিনিটে যেন পাল্টে যায় সবকিছু। ঘারিবের কাছ থেকে পাওয়া অসাধারণ পাসটি ধরে বক্সের বাঁ প্রান্ত দিয়ে আরও ভেতরে ঢুকে যান রোনালদো। এরপর গোলকিপারের বাঁ পাশ দিয়ে দূরের পোস্ট দিয়ে বল পাঠান জালে। এ গোলের সময় বলে তাঁর প্রথম স্পর্শটি মনে করিয়ে দিচ্ছিল সেরা সময়ের রোনালদোকে!
রোনালদো তাঁর দ্বিতীয় গোলটি পান ৪০ মিনিটে। এবার গোলের জোগানদাতা আল-নাজেই। ১৩ মিনিট পর তৃতীয় গোলটি পেনাল্টি থেকে। বক্সের মধ্যে বল হাতে লেগেছিল আল-ওয়েহদার এক খেলোয়াড়ের। ভিএআর দেখে রেফারি পেনাল্টি দেন। রোনালদো যেটিকে শট নিয়েছিলেন, আল-ওয়েহদার গোলকিপার সেদিকেই ঝাঁপালেও বলের নাগাল পাননি।
হ্যাটট্রিক করার পর যেন রোনালদো সতীর্থদের দিয়ে গোল করানোয় মনোযোগ দিয়েছিলেন। বক্সের ভেতরে ফাঁকায় দুবার বল পেয়েও তিনি পাশে থাকা সতীর্থকে পাস দিয়েছেন। কিন্তু সেই পাসের সদ্ব্যবহার তাঁর সতীর্থরা করতে পারেনি। অবশেষে ৬১ মিনিটে চতুর্থ গোলটিও পেয়ে যান রোনালদো। এবার তো বক্সের অনেক বাইরে বল পেয়ে ড্রিবলিং করে ভেতরে ঢোকেন তিনি। সামনে গোলকিপারকে একা পেয়ে শট নেন। কিন্তু গোলকিপার বল ঠেকালেও ভালোভাবে বিপদমুক্ত করতে পারেননি। ফিরতি বল সহজেই জালে পাঠান পর্তুগিজ তারকা।
এরপর বেশ কয়েকটি আক্রমণ করেও গোল পায়নি আল-নাসর। এই জয়ে ১৬ ম্যাচে ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে লিগের শীর্ষে আছে রোনালদোর দল। এক ম্যাচে বেশি খেলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা আল-শাবাবের পয়েন্টও ৩৭।
এই ম্যাচের ৪ গোল করে কিছুটা হলেও লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার দৌড়ে চলে এসেছেন রোনালদো। এই নিয়ে তাঁর গোলসংখ্যা ৫টি। ১৩ গোল নিয়ে তালিকার শীর্ষে আছেন তাঁরই সতীর্থ ব্রাজিলিয়ান তালিসকা। আরেক ব্রাজিলিয়ান আল-শাবাবের কার্লোস ১০ গোল নিয়ে আছেন দ্বিতীয় স্থানে। তালিকায় এর পরে আছেন আল-ইত্তিহাদের আবদেররাজ্জাক হামদাল্লাহ (৯), আল-হিলালের ওডিওন ইঘালো (৮), আল-ফেইহার অ্যান্থনি নওকায়েমে (৬) ও আল-ফাতেহর ফিরাস আল-বুরাইকান (৬)।োনা
আরো পড়ুন : মৃত্যুর সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়াল তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পে