এফবিআই তদন্তে নিউইয়র্কে বাংলাদেশি দুর্বৃত্তচক্রের নানা প্রতারণামূলক কর্মকান্ডের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এসব কর্মকান্ডের অভিযোগে গত বছরে গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশি দুই যুবতীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ব্রুকলিন ফেডারেল কোর্টে অভিযোগ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ ছয়জন হলেন জ্যামাইকার আবু চৌধুরী (৩৪), তার স্ত্রী ইফফাত লুবনা (২৪), সহযোগী সুলতানা রাজিয়া, সৈয়দ রুবেল আহমেদ (৪৩), সাহেদ আলম (২৯) এবং আঞ্জু খান (২৮)।
গত ১১ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগসমূহের মধ্যে রয়েছে, ধাক্কা ব্যবসা, ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি, রিয়েল এস্টেট প্রতারণা, অন্যের গোপন তথ্য চুরি করে ব্যাংক-বীমার সঙ্গে প্রতারণা, রিয়েল এস্টেট ব্রোকারের টোপ দিয়ে প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, মাদক ব্যবসা এবং মাদকাসক্ত করে প্রতিপক্ষকে মৃত্যুর মুখে পতিত করা। অন্যান্য অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, কাগজপত্রহীন প্রবাসীদের গ্রিনকার্ডের টোপ দিয়ে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, অপহরণ, ধর্ষণ, যৌন হামলা, মুক্তিপণ আদায় ইত্যাদি।
ব্রুকলিনে অবস্থিত ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট ইউএস অ্যাটর্নি ব্রিয়ন পিস, নিউইয়র্কের এফবিআইয়ের সহকারী পরিচালক জেমস স্মিথ, নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের কমিশনার এডোয়ার্ড এ ক্যাবানের অফিস থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। গ্রেফতারকৃতদের ব্রুকলিন ফেডারেল কোর্টে বিচারপতি যোসেফ এ মারোটুলোর এজলাশে হাজির করা হয়। এ চক্রের অপর এক সদস্যকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ১৭ জানুয়ারি আদালত সূত্র জানায়, এক সদস্যকে গ্রেফতারের পরই সবার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত অভিযোগ গঠন করা হবে।
এফবিআই সূত্রে জানা গেছে, এ দুর্বৃত্ত চক্র উপরোক্ত অপরাধকর্মের পাশাপাশি নিজ নিজ ব্যবসার আড়ালে জালিয়াতি-প্রতারণার ফাঁদ পাতে। মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, এ চক্র গত বছরের ২৭ মার্চ কুইন্সের জ্যামাইকা থেকে এক প্রবাসীকে অপহরণের পর প্রায় ১৪ ঘণ্টা অকথ্যভাবে নির্যাতন করে। এদের হাতে অপহরণের আরেকটি ঘটনা ঘটে গত বছর ১১ মে কুইন্সেরই উডসাইড এলাকায়। এদিন উডসাইডে ৭২ স্ট্রিট এবং ব্রডওয়ে এলাকায় ভিকটিমকে অপহরণ করে যৌন হয়রানি করা হয়।
এক পর্যায়ে ভিকটিমের বাবাকে ফোন করে ২০ হাজার ডলার মুক্তিপণ দাবি করে আসামি আবু চৌধুরী। এ ছাড়া এ চক্র বেসমেন্টের একটি কক্ষে ১৯/২০টি করপোরেশন দেখিয়েও লাখ লাখ ডলার হাতিয়ে নিয়েছে।
আরো পড়ুন : চট্টগ্রামে ভাড়া বাসা খুঁজতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার তরুণী