৩০ বছরের বেশি সময় ধরে ‘স্টারডাম’ অটুট রেখেছেন বলিউড সুপারস্টার সালমান খান। তাঁর নামের সঙ্গে জুড়ে আছে ‘ভাইজান’, ‘দাবাং খান’, ‘সুলতান’ উপাধিগুলো। ৫৬ বছর বয়সী এই তরুণ নায়ক আজও হাজার হাজার তরুণীর হৃদয়ে জীবন্ত। এবারের আইফা ২০২২ অ্যাওয়ার্ডের আসর মাতাবেন সালমান। এই অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের সঞ্চালকের ভূমিকায় দেখা যাবে তাঁকে।
সম্প্রতি মুম্বাইয়ের একটি পাঁচতারা হোটেলে আইফা অ্যাওয়ার্ড উপলক্ষে গুটিকয় সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়েছিলেন সালমান। তাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধিও। আইফা ছাড়া এদিনের আড্ডায় উঠে এসেছিল দক্ষিণি ছবির কথাও। দক্ষিণি ঝড় এখন হিন্দি বলয়ে আছড়ে পড়েছে। ‘বাহুবলী’, ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’, ‘কেজিএফ’, ‘আরআরআর’ ইত্যাদি ছবির আকাশছোঁয়া সাফল্য কি বলিউডকে অশনি সংকেত দিচ্ছে! বলিউড সুপারস্টার সালমান খান বলেন, ‘আচ্ছা বলুন তো, আমাদের ছবি কেন দক্ষিণে চলে না? কিন্তু ওদের ছবি আমাদের এখানে ভালো চলছে। আসলে ওরা (দক্ষিণি ছবি) এখনো হিরোইজম বজায় রেখেছে।
আমরা দু-একজন ছাড়া আর কেউ “লার্জার দ্যান লাইফ” ছবি বানাই না। কিন্তু মানুষের বক্তব্য, এসব নাকি বস্তাপচা চিন্তাভাবনা। এখন বাস্তবধর্মী ছবি বানানো প্রয়োজন। কিছু মানুষ আসলে ভারত বলতে বোঝে, ক্যাফ প্যারেড আর আন্ধেরির মধ্যের এক দুনিয়াকে। কিন্তু এর বাইরেও যে এক জগৎ আছে, তা মানুষের ধারণার বাইরে। বাইরে বের হও, আর দেখো। আমার সিনেমা সেসব দুনিয়ার বাসিন্দাদের জন্য। বাস্তব জীবন থেকে নেওয়া আমার ছবি আসলে ভারতের মানুষের জন্য নির্মাণ করা হয়। হল থেকে আমার সিনেমা দেখে বের হওয়ার পর দর্শকের রক্ত ফুটতে থাকে।’
বলিউডের ‘দাবাং খান’ আরও বলেন, ‘দক্ষিণ ভারতীয় ছবিতে নায়কদের এখনো নায়কের মতোই পর্দায় তুলে ধরা হয়। সেলিম খান আর জাভেদ আখতারের সিনেমার ধারা এটা। ব্যস, ওরা এই ধারাকে আপন করে নিয়েছে। আর এটাকে আরও বিশাল আকারে নিয়ে গেছে। আমরা এখন “বাস্তবধর্মী” ছবি নির্মাণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। আমি শুরু থেকেই “লার্জার দ্যান লাইফ” ছবি করে আসছি। হিরোইজমের পাশাপাশি মানুষের সঙ্গে আবেগের সম্পর্ক গড়ে তোলা জরুরি।’
এই বলিউড তারকা আরও বলেন, ‘এখন সময় এসেছে যে ওরা আমাদের ছবি ওখানে বানাবে। আমার “দাবাং”, “ওয়ান্টেড” ছবির রিমেক দক্ষিণে হয়েছে। তবে ওখানকার লেখকেরা অত্যন্ত পরিশ্রমী। আর দক্ষিণের পরিচালকেরা দারুণ দারুণ সব বিষয়ের ওপর ছবি নিয়ে আসছেন।’
সালমান দক্ষিণের সুপারস্টার চিরঞ্জীবীর সঙ্গে দক্ষিণি ছবির দুনিয়ায় পা রাখতে চলেছেন। চিরঞ্জীবীর ‘গডফাদার’ ছবিতে তাঁকে অতিথি শিল্পী হিসেবে দেখা যাবে। এ প্রসঙ্গে এই বলিউড সুপারস্টার বলেন, ‘চিরঞ্জীবীর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা দুর্দান্ত। আমি চিরু গুরুকে অনেক দিন ধরেই চিনি। চিরঞ্জীবী আর তাঁর ছেলে রাম চরণ আমার খুব কাছের। “আরআরআর” ছবিতে রাম চরণের কাজ আমার দারুণ লেগেছে। আমি সেটা ওকে জানিয়েছি। ওর জন্মদিনেও শুভেচ্ছা জানিয়েছি। রাম চরণের জন্য আমি সত্যি গর্বিত।’
তেলেগু কোনো ছবিতে নায়ক হিসেবে সালমানকে দেখা যাবে কি না, এর জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে এখনো কেউ তেলেগু বা অন্য কোনো দক্ষিণি ভাষার ছবির জন্য প্রস্তাব নিয়ে আসেনি। শুধু হিন্দি ছবির জন্য ওরা আমার কাছে এসেছে।’
বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, রিয়ালিটি শোতে সালমানকে সঞ্চালকের ভূমিকায় দেখা গেছে। সঞ্চালনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একজন সঞ্চালক হিসেবে আমাদের সংবেদনশীল হতে হবে। আমি “দশ কা দম”, “বিগ বস” সঞ্চালনা করেছি। যখন কোনো কিছুতে বাড়াবাড়ি দেখেছি, তখন আমার তাদের ওপর রাগ হয়েছে। আসলে অসভ্যতা দেখলে আমি মেজাজ হারিয়ে ফেলি। “বিগ বস”-এর পর্দার আড়ালে অনেক কিছু ঘটে। টেলিভিশনে আমরা সেসব দেখাতে পারি না।’
মঞ্চে সালমানের উপস্থিতি মানে এক অদ্ভুত প্রাণশক্তি সঞ্চারিত হয়। নিজের প্রাণশক্তি প্রসঙ্গে বলেন, ‘(একটু শ্বাস নিয়ে) আমাকে এখনো এনার্জিটিক লাগে? আমি যখন মঞ্চে আসি, তখন আমার হৃদয় ধুকপুক করে। আমার দুটো ফুসফুস একে অপরের সঙ্গে যেন জুড়ে যায়। যা হোক, তারপর আমি কোনো প্রকারে ম্যানেজ করি।’
সাধারণত ঈদ মানেই সালমানের ছবি। এ বছরের ঈদে তাঁর কোনো ছবি আসছে না। এ প্রসঙ্গ তুলতেই তিনি বলেন, ‘অজয় দেবগণ এ বছর ঈদি দিয়েছেন। আমি সম্ভবত আগামী ঈদে আসব।’
সুত্র- প্রথম আলো
আরো পড়ুন : ৩০ বছর ধরে নিঃসঙ্গ জীবন কাটাচ্ছে পরিযায়ী পাখি পেলিকান