কক্সবাজারের আদালত এলাকা থেকে তুলে নিয়ে এক তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে। গত সোমবার দুপুরের এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে ওই তরুণী বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেছেন। মামলায় চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা পাঁচজনসহ ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ফিরোজ আহমদ, রাসেল উদ্দিন, নুরুল ইসলাম ও মো. শরীফ।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ওই তরুণীর লিখিত এজাহারটি আজ দুপুরে মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ফিরোজ ও শরীফের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই তরুণীকে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার দুপুরে তিনি কক্সবাজার আদালত এলাকায় এক আইনজীবীর কার্যালয় থেকে বের হলে আসামিরা তাকে ঘিরে ফেলেন। একপর্যায়ে ফিরোজ ও শরীফসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন এসে তার হাত-পা ও মুখ চেপে ধরে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেন। ফিরোজ ওই তরুণীর স্বর্ণালংকার ও টাকা ছিনিয়ে নেন।
এরপর কক্সবাজার ল্যাবরেটরি স্কুলসংলগ্ন (বাহারছড়া) এলাকায় ফিরোজের আত্মীয় ফজল কাদেরের বাসায় নিয়ে ওই তরুণীকে আটকে রেখে ফিরোজ ও শরীফ তাকে ধর্ষণ করেন। পরে একইভাবে নুরুল ইসলামও তাকে ধর্ষণ করে তার মুঠোফোন ও টাকা নিয়ে চলে যান। কিছুক্ষণ পর রাসেল উদ্দিন ওই কক্ষে এসে নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেন। ধর্ষণের বিষয়টি কাউকে জানালে অথবা বাড়াবাড়ি করলে মানব পাচার মামলায় চালান করে দেওয়ার হুমকি দেন রাসেল। একপর্যায়ে রাসেলও ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন।
দলবদ্ধ ধর্ষণের কারণে একপর্যায়ে ওই তরুণী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এরপর রাসেল ও শরীফ ওই তরুণীকে টেনেহিঁচড়ে বাড়ির বাইরে নিয়ে আসেন। এ দৃশ্য দেখে রাস্তায় থাকা এক ব্যক্তি তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) কল দিলে আসামিরা পালিয়ে যান। পরে পুলিশ এসে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে।
ওই তরুণীর দাবি, ফিরোজ ও রাসেল উদ্দিন পুলিশের পূর্বপরিচিত। তাই সোমবারের ঘটনার পর থেকে থানা–পুলিশের ভূমিকা ‘রহস্যময়’ বলে অভিযোগ করেন তিনি।
জানতে চাইলে ওসি শেখ মুনীর বলেন, মামলায় চারজন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে ধরতে পুলিশ অভিযান শুরু করবে।