খ্রিষ্টীয় বছরের (২০২২) শেষ দিন ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’ ঘিরে একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এর মধ্যে অন্যতম নির্দেশনা ছিল কোথাও আতশবাজি, পটকা ফোটানো বা ফানুস ওড়ানো যাবে না। কিন্তু ব্যাপক কড়াকড়ির মধ্যেই ফানুস উড়িয়ে ও আতশবাজি ফুটিয়ে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম প্রহরকে বরণ করে নেওয়া হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকায়। এ সময় টিএসসি এলাকায় পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্য থাকলেও শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের উচ্ছ্বাসে তাঁরা কোনো হস্তক্ষেপ করেননি।
ক্যাম্পাসে আগত ব্যক্তিদের সন্ধ্যা থেকেই মাইকে টিএসসি এলাকা ছাড়তে বলা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের ওই আহ্বানে বেশির ভাগ মানুষ চলে গেলে টিএসসি এলাকা প্রায় ফাঁকা হয়ে যায়। সন্ধ্যা থেকেই ক্যাম্পাসের পাঁচটি প্রবেশমুখেই ছিল পুলিশের তল্লাশি। কিন্তু ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টার দিকে যত এগোতে থাকে, টিএসসি এলাকায় মানুষের ভিড় তত বাড়তে থাকে। খ্রিষ্টীয় নতুন বছরের প্রথম প্রহরে টিএসসি এলাকায় কয়েক শ মানুষের সমাগম হয়। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ছাত্রলীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাও।
ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টা ছুঁতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের সামনে আতশবাজি ফুটিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানান শিক্ষার্থীরা। রোকেয়া হলের সামনে ও টিএসসি এলাকায় ওড়ানো হয় কয়েক ডজন ফানুস। অবশ্য রাত নয়টার পর থেকেই টিএসসি এলাকায় ফানুস ওড়ানো শুরু হয়।
রোকেয়া হলের সামনে রাত ১১টার দিকে একটি ফানুস বৈদ্যুতিক তারে আটকে গিয়েছিল। পরে ঢিল ছুড়ে সেটি নামানো হয়।
উদ্যাপনে অংশ নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাজমুল হাসান বলেন, ‘টিএসসিতে উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে থার্টি ফার্স্ট উদ্যাপন ও খ্রিষ্টীয় নতুন বছরের প্রথম প্রহরকে বরণ একটি ঐতিহ্যবাহী আয়োজন। এবারও এ আয়োজনের অংশ হতে পেরে ভালো লাগছে।’
পুলিশের কড়াকড়ি নিয়ে নাজমুল বলেন, ‘কোনো আইন মানুষের আনন্দ আয়োজনে বাধা হতে পারে না। আইন দিয়ে আনন্দকে আটকানো যায় না।’
জানতে চাইলে টিএসসি এলাকায় দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশ দায়িত্ব পালন করলেও কিছু ক্ষেত্রে অলিখিত রেস্ট্রিকশন থাকে। সেই জায়গা থেকে আমরা উদ্যাপনে কোনো হস্তক্ষেপ করছি না। তবে এখানে কোনো দুর্ঘটনা যেন না ঘটে, সেদিকে আমরা লক্ষ রাখছি।’
আরো পড়ুন : মারা গেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন