কাশিমপুর কারা ফটক থেকে কাফেলা গ্রুপের ‘জঙ্গি’ সদস্য আটক করল জিএমপি

আইন-আদালত জনদুর্ভোগ পুরুষ প্রচ্ছদ মুক্তমত রাজনীতি লাইফ স্টাইল হ্যালোআড্ডা

গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরে নব্য জঙ্গি সংগঠন ইমাম মাহমুদ এর কাফেলা গ্রুপের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে জিএমপির কোনাবাড়ি থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে কোনাবাড়ি থানাধীন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের মূল ফটকের সামনের জেলখানা রোড থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার ব্যক্তির নাম- মো. মাহতাব ইসলাম ওরফে আব্দুস সাত্তার (৩২)। তিনি পাবনা জেলার আতাইকুলা থানাধীন কইজুরি শ্রীপুর এলাকার মো. হাবিবার মন্ডলের ছেলে।

জিএমপির কোনাবাড়ি জোনের সহকারী কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নব্য জঙ্গি সংগঠন ইমাম মাহমুদ এর কাফেলা গ্রুপের সদস্য পলাতক এক জঙ্গি কোনাবাড়ি থানাধীন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের মূল ফটকের সামনের জেলখানা রোডে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফিরা করছে- এমন গোপন সংবাদ পেয়ে কোনাবাড়ি থানা পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে মাহতাবকে গ্রেফতার করে। থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে নব্য জঙ্গি সংগঠন ইমাম মাহমুদ এর কাফেলা গ্রুপের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে।

তিনি আরও জানান, ২০২৩ সালে পাবনার গঙ্গারামপুর এলাকার একটি মাদ্রাসায় ছেলেকে ভর্তি করেন মাহতাব। সেখানে ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ইমাম মাহমুদের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। পরিচয় ও আলোচনার একপর্যায়ে তাকে ইমাম মাহমুদ বলেন, ২০২৩ সাল থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে পুরো পৃথিবীতে ব্যাপক দুর্ভিক্ষ এবং আল্লাহর গজব হবে। এতে ইমাম মাহমুদের অনুসারীরা ব্যতীত সবাই মারা যাবে। এ পরিস্থিতি থেকে একমাত্র আমিই সবাইকে বাঁচাতে পারব। এ সময় ইমাম মাহমুদ তার কাফেলা দলে যোগ দেওয়ার আহবান জানান। তার আহবানে সাড়া দিয়ে নিজের একটি ভ্যান রিকশা বিক্রি করে তার স্ত্রী মোসা. শাপলা বেগম (২৬) ও শ্যালক মো. আল মামুন ওরফে বেলালসহ (২০) ২৭ জনকে নিয়ে মাহতাব ওই জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেয়। পরে তারা জঙ্গি প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থানার যগিরটিলা এলাকার একটি দুর্গম পাহাড়ে যায়। সেখানে তারা ঘরবাড়ি নির্মাণ করে অস্ত্র চালনাসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে থাকে। এ গোপন সংবাদ পেয়ে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট সেখানে অভিযান চালিয়ে ২৭ জনকে গ্রেফতার করতে পারলেও মাহতাব কৌশলে পালিয়ে যায়।

ওই অভিযানে গ্রেফতাকৃতদের মধ্যে মাহতাবের স্ত্রী ও শ্যালক রয়েছে। বর্তমানে তারা কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মিরপুরসহ চারটি থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতাররা মাহতাবকে জড়িয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে মাহতাব।

জিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) আবু তোরাব মো. শামসুর রহমান জানান, মাহতাব ইসলামের স্ত্রী মোসা. শাপলা বেগম কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে এবং শ্যালক মো. আল মামুন ওরফে বেলাল কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছে। পলাতক জঙ্গি মাহতাব তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছিল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মাহবুব আলম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাকে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন : হামাস-ইসরাইল সংঘাতের কারণে বৈশ্বিক সতর্কতা জারি করল যুক্তরাষ্ট্র

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *