স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে বলেছেন, গণতন্ত্রের নাম করে ভারত মহাসাগর ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশকে আক্রমণ করাই কারো কারো উদ্দেশ্য। সেই উদ্দেশ্যে তারা কাজ করছে। তিনি বলেন, ভৌগলিক অবস্থানের দিক দিয়ে ভারত ও প্রশান্ত মহাসারগরের এ অঞ্চলের গুরুত্ব অনেক বেশি। আমাদের বঙ্গোপসাগরটাও এরই অংশ। ভারত মহাসাগরে যতগুলো দেশ আছে এখানে কারো সাথে কারো দ্বন্দ্ব নাই। স্বাধীনভাবে পণ্য চলাচল করে এখানে।
তিনি বলেন, আমাদের কিছু লোক আছে তারা এদের সঙ্গে সুর মিলায়। তাই আমাদের সজাগ থাকতে হবে। একই সঙ্গে ভারত মহাসাগরের অন্যান্য দেশকেও সচেতন থাকতে হবে। আমি মনে করি তারা সচেতন। এ এলাকা নিয়ে নানা ধরণের চক্রান্ত চলছে।
বুধবার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সভায় দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, আমি তাদের বলতে চাই- আপনাদের গণতন্ত্র কি আটলান্টিকে আটকে যায়? আটলান্টিক পর্যন্ত সীমাবদ্ধ? যে বিএনপি আমার বাবাসহ পরিবারের সবাইকে হত্যা করেছে, ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে আজ তাদের নিয়ে ক্ষমতায় বসাতে হবে? এদের উদ্দেশ্য নির্বাচন না, গণতন্ত্র না। এরা একটা জিনিসই করতে চায় তা হচ্ছে আমরা যে গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত করেছি, আর্থসামাজিক উন্নতি করেছি, দারিদ্রতার হার কমিয়ে নিয়ে এনেছি, মাথাপিছু আয় বাড়িয়েছি সেই উন্নয়নের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা। এটাই বাস্তবতা।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, হঠাৎ কেন জানি তাদের আগ্রহ বেড়ে গেলো। কারণটা কী? একের পর এক তারা বাংলাদেশে আসতে শুরু করেছে। বিএনপি তাদের এখন চোখের মনি। যারা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে, ক্ষমতায় এসে হত্যা, নির্যাতন শুরু করেছে, তাদের সঙ্গে না কি বসতে হবে। কথা বলতে হবে।
তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশের মানুষের জন্য আর বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়নে অনেক কিছু সহ্য করেছি। আইন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি। অথচ খালেদা জিয়া আজিজ মার্কা নির্বাচন যখন করেছে তখন তাদের উদ্বেগ দেখিনি। আসলে বাংলাদেশের উন্নয়ন তাদের পছন্দ না।
সরকার প্রধান বলেন, যেসব দেশ খুনীদের আশ্রয় দিয়েছে তারা যখন আমাদের মানবতার কথা বলে, স্বচ্ছতার কথা বলে, সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে তাদের কাছে আমার প্রশ্ন ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর যখন বাংলাদেশে হত্যা, খুন, গুম, নির্যাতন, নিপীড়ন শুরু হয় তখন তারা কোথায় ছিল? ২০০১ সালের নির্বাচনেতো আমাদের হারার কথা ছিল না। এরশাদ যখন নির্বাচনের ফল আটকিয়ে রেখেছিল তখনতো এদের উদ্বেগ দেখিনি।
তিনি বলেন, পার্বত্য এলাকায় আমি ক্ষমতায় আসার পর শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছি। সেখানেও এখন পরিস্থিতি খারাপ করার চেষ্টা শুরু হয়েছে। তাদের পদলেহনকারীদের নিয়ে খেলবে। দেশবাসীকে বলবো দেশপ্রেমিক সব নাগরিকদের সচেতন থাকতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি বাংলাদেশের মানুষের ক্ষতি করে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখি না। ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রি করে ক্ষমতায় আসার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। আমার বাবাও দেশের স্বার্থ নষ্ট করে ক্ষমতায় থাকতে চাননি, আমিও দেশের স্বার্থ নষ্ট করে ক্ষমতায় থাকতে চাই না। আজকে দেশের উন্নয়ন যখন করে যাচ্ছি তখন সবার মাথা ব্যথা শুরু হয়েছে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কোনো খেলা খেলে বাংলাদেশের ভাগ্য নষ্ট করা যাবে না। দোয়া করবেন যেন জাতির পিতার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে পারি।
আরো পড়ুন : বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরে নির্বাচনী প্রচারণায় আন্দ্রিয়া গঞ্জালেজ