গাজীপুর প্রতিনিধি : পবিত্র রমজানে ইফতারির পর যখন চলছে তারাবির আয়োজন, লোকজন মাথায় টুপি ও হাতে জায়নামাজ নিয়ে দলে দলে যাচ্ছে মসজিদের দিকে, তখন একদল তরুণ ও যুবক বের হয়েছে অস্ত্র হাতে। সংখ্যায় তারা শতাধিক।
প্রত্যেকের হাতে দা, চাপাতি, কিরিচসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র। কেউ কেউ তা শার্টের নিচে আড়াল করার চেষ্টা করছে, কেউ আবার সদর্পে প্রকাশ্যে হাতে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। লোকজন আতঙ্কে পথ করে দিচ্ছে ফাঁকা। কিছুক্ষণ পর শোনা গেল ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণের আওয়াজ। সঙ্গে মানুষের হৈ-চৈ, চিৎকার।
শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গাজীপুর মহানগরের বাসন থানাধীন ১৮নং ওয়ার্ডের তেলিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ সংক্রান্ত একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ এসেছে এই প্রতিবেদকের হাতে, যেখানে ওই যুবকদেরকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে মহড়া দিতে দেখা যায়।
স্থানীয়রা জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শতাধিক অস্ত্র ও বন্দুক নিয়ে এলাকায় মহড়া দেয়। এ সময় তারা পিকআপ, মোটরসাইকেল, বিভিন্ন দোকানপাট ভাঙচুর ও গুলিবর্ষণ করে।
এ ঘটনায় রেজাউল করিম নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বাসন থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে স্থানীয় এনামুল হাসান নিঝুম ওরফে নিজুম ডন, মো. নোমান ওরফে ফেন্সী নোমান, মো. মাসুদ ওরফে টোকাই মাসুদসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত আরও ৩০-৪০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তরা গাজীপুর মহানগরের তেলিপাড়া এলাকায় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গাড়ি, মোটরসাইকেল দোকানপাট ভাংচুরের একপর্যায়ে ককটেল বিস্ফোরণ ও ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ তাণ্ডব চালানোর সময় ভুক্তভোগীর পিকআপ ভ্যান ভাঙচুর করা হয়। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি, সেটা উদ্দেশ্যও ছিল না।
এলাকাবাসী মনে করছেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে আতংক ছড়ানোর উদ্দেশ্যে এই মহড়া চালিয়েছে চিহ্নিত কিছু সন্ত্রাসী প্রকৃতির তরুণ ও যুবক। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
বাসন থানার অফিসার ইনচার্জ সানোয়ার জাহান জানান, এ ব্যাপারে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাইপূর্বক সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তদন্তপূর্বক এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।
আরো পড়ুন : এক দিন ছুটি নিলে টানা ৫ দিনের ছুটি মিলবে ঈদুল ফিতরে