আসন্ন উপজেলা পরিষদের নির্বাচন চার ধাপে শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সব মিলে চার ধাপে ৪৮৩ উপজেলায় ভোট হবে। বাকি উপজেলাগুলোতে পরে বিভিন্ন সময় ভোট হবে।
সূত্র জানিয়েছে, এপ্রিলের শেষে তথা ২৭ এপ্রিল প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণের পরিকল্পনা নিয়েছে কমিশন। তবে জুনে এইচএসসি পরীক্ষা থাকায় ইসি আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত দিলে উপজেলার দ্বিতীয় ধাপ; তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপের ভোট মে মাসের মধ্যে শেষ করার সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এক্ষেত্রে এক সপ্তাহ পর পর ধাপে ধাপে এ নির্বাচন হতে পারে। এ জন্য রোজার মধ্যে উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নেওয়া হবে।
এবারে অধিকাংশ উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট করার পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে তা নির্ভার করছে কতটি ইভিএম নির্বাচন উপযোগী আছে তার ওপর। এক্ষেত্রে ধাপে ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচন কোন কোন উপজেলায় ইভিএমে ভোট হবে তা আগেই ঘোষণা করবে না সাংবিধাকি এই সংস্থাটি। তবে তফসিল ঘোষণার সময় কোন উপজেলায় ইভিএম এবং কোন উপজেলায় ব্যালট পেপারে ভোট গ্রহণ হবে সেই সিদ্ধান্ত জানাবে কমিশন।
জানা গেছে, ১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা; লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে ১২ মার্চ। আর ১২/১৩ মার্চ রমজান শুরু হতে পারে। আর এইচএসসি পরীক্ষা হতে পারে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে। তাই রমজান শেষে এইচএসসি পরীক্ষার আগের দুই মাসের মধ্যে উপজেলা নির্বাচন করতে হবে ইসিকে।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের পঞ্চম উপজেলা পরিষদ পাঁচ ধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে সময় ৪৮৮টি উপজেলা পরিষদের তফসিল ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে ৪৫৫টির নির্বাচন যথাযথ সময়ে, পরবর্তীতে অন্যগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই বছর ১০ মার্চ প্রথম ধাপে ৭৮টি, ১৮ মার্চ দ্বিতীয় ধাপে ১১৬টি, ২৪ মার্চ তৃতীয় ধাপে ১১৭টি, ৩১ মার্চ চতুর্থ ধাপে ১০৭টি এবং ১৮ জুন পঞ্চম ধাপে ২০টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বেশ কিছু নির্বাচন মামলার কারণে আটকাও ছিল। আইন অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদের মেয়াদ হচ্ছে প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। আর নির্বাচন করতে হয় মেয়াদ পূর্তির আগের ১৮০ দিনের মধ্যে।
এর আগে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাচন করার সময়টা চলে এসেছে। সামনে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়ে যাচ্ছে। এরপর রোজা। রোজার মধ্যে তো নির্বাচন করা সম্ভব নয়। ঈদের পরপরই যাতে নির্বাচন হয়, সেভাবে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হয়ে মে মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে শেষ করব। রোজার শেষ দিকে এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে।
তফসিল নিয়ে তিনি বলেন, রোজায় ঈদের কিছুদিন আগে তফসিল ঘোষণা। নির্বাচনি প্রচার এবং নির্বাচন ঈদের পর হবে। নির্বাচন ব্যালট পেপারে অথবা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, আবার ব্যালট ইভিএম দুটোর সমন্বয় থাকতে পারে। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। দেশে ৪৯৫টি উপজেলা পরিষদ রয়েছে। সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ১০ মার্চ। পাঁচ ধাপের ওই ভোট শেষ হয় গত জুন মাসে। আইন অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদের মেয়াদ শুরু হয় প্রথম সভার দিন থেকে। পরবর্তী পাঁচ বছর নির্বাচিত পরিষদ দায়িত্ব পালন করে। মেয়াদপূর্তির আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
দলীয় প্রতীক : ২০১৫ সালে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আইন সংশোধন করে দলীয় প্রতীকে ভোটের বিষয়টি যুক্ত করা হয়। আর ২০১৭ সালের মার্চে প্রথমবার তিন উপজেলায় দলীয় প্রতীকে ভোট হয়। ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান পদ বাদে বাকি দুটি পদ উন্মুক্ত রাখে। এবার উপজেলায় নৌকা প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
আরো পড়ুন : ছাত্র গ্রেফতারের প্রতিবাদে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ