স্টাফ রিপোর্টার: জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালত এ অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৬ই মে দিন ধার্য করেছেন আদালত। তারেক ও জোবাইদার পক্ষে ব্যক্তিগত খরচে আইনজীবী নিয়োগের আবেদনটি নামঞ্জুর করেন আদালত।
এর আগে গত ৯ই এপ্রিল ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। সেদিন পলাতক তারেক-জোবায়দার পক্ষে ব্যক্তিগত খরচে আইনজীবী নিয়োগ করতে শুনানি করেন তাদের আইনজীবী। অন্যদিকে দুদক এর বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক আদেশের জন্য ১৩ই এপ্রিল দিন ধার্য করেন। আদালতে তারেক-জোবায়দার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করতে এডভোকেট মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার শুনানি করেন। অপরদিকে দুদকের আইনজীবী মীর আহাম্মদ আলী সালাম পলাতক আসামিপক্ষে আইনজীবী নিয়োগের বিরোধিতা করেন।
এ মামলায় ২০২২ সালের ১লা নভেম্বর তারেক রহমান ও জোবায়দার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। ২০০৭ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক।
মামলায় তারেক রহমান, জোবায়দা রহমান ও তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। এরপর ২০০৮ সালে এই ৩ জনের বিরুদ্ধে দাখিল করা হয় অভিযোগপত্র। এদিকে মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জোবায়দা। ওই বছরই এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। তবে এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ই এপ্রিল মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে রায় দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই মামলায় ৮ সপ্তাহের মধ্যে জোবায়দাকে বিচারিক আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেয়া হয়। উচ্চ আদালতের এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে ওই বছরই লিভ টু আপিল করেন জোবায়দা। এরপর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের আপিল বেঞ্চ লিভ টু আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রাখেন।
সূত্র জানায়, তারেক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলাটি হয় ২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে। তখন তারেক গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেড় বছর কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্তি পেয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান, তারপর আর দেশে ফেরেননি। বিদেশে থেকেই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করছেন তারেক। এর মধ্যেই তার বিরুদ্ধে ৪টি মামলায় সাজার রায় হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে দুই বছর, অর্থ পাচারের দায়ে ৭ বছর, জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং একুশে অগাস্টের গ্রেনেড মামলায় যাবজ্জীবন কারাদ- হয়েছে। অপরদিকে, তারেকের স্ত্রী জোবায়দা চিকিৎসক হিসেবে সরকারি চাকরিতে কর্মরত ছিলেন। ২০১৪ সালে ছুটি নিয়ে যাওয়ার পর আর কর্মস্থলে না ফেরায় তাকে বরখাস্ত করে সরকার।
আরো পড়ুন : মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, চুয়াডাঙ্গায় ৪১ ঢাকায় ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস