টুটুলের সঙ্গে কেন বিচ্ছেদ হয়েছিল তা নিয়ে মুখ খুললেন তানিয়া আহমেদ

প্রচ্ছদ বিনোদন মনোকথা হ্যালোআড্ডা

বিনোদন প্রতিবেদক: সংগীতশিল্পী এস আই টুটুল ও অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদের দীর্ঘ ২৩ বছরের সংসার ভাঙার খবর আসে গত বছর। কিন্তু বিচ্ছেদ নিয়ে কেউই সেভাবে মুখ খোলেননি। এস আই টুটুল নিজেই জানিয়েছিলেন, বিচ্ছেদের কথা। কিন্তু কেন তাঁদের বিচ্ছেদ হয়েছিল, সেটা নিয়ে এবার মুখ খুললেন তানিয়া আহমেদ। তাঁর কথায় উঠে আসে, তিনি সব সময় চেষ্টা করেছেন সংসার টিকিয়ে রাখতে। কিন্তু বোঝাপড়া না হওয়াসহ একাধিক কারণে দীর্ঘদিন তাঁদের মধ্যে দূরত্ব ছিল। পরে এস আই টুটুল তানিয়াকে বিবাহবিচ্ছেদের নোটিশ পাঠান।

জানা যায়, করোনার আগে থেকেই এই তারকা দম্পতির সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। এই নিয়ে তাঁরা মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েন। তাঁদের পক্ষ থেকে চেষ্টা করেছেন, সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে। বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে নিয়ে এই অভিনেত্রী কথা বলেছেন অনলাইন গণমাধ্যম বিবিএস বাংলার সঙ্গে। গণমাধ্যমটির সঙ্গে ভিডিও সাক্ষাৎকারে তানিয়া আহমেদ বলেন, ‘বাস্তব জীবনে আবেগটা অন্য রকম। প্র্যাকটিক্যাল লাইফে এটা কঠিন। এটা যখন জীবনের ওপর কোনো প্রভাব ফেলে, তখন মনে হয়েছে একটু একটু করে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনো একটা জায়গায় গিয়ে মেলেনি। মানুষ বলবে তানিয়া আপা এমনিতেই আপনার একটা পাস্ট লাইফ ছিল। এখন আবার কেন। সাধারণত মেয়েরা এই সাহসই করে না। কিন্তু লাভ হয়নি।’

একসময় তানিয়া বুঝতে পারেন সম্পর্কটা আগের মতো নেই। একসঙ্গে পথচলা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু চেষ্টা করেছেন সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার। মিথ্যা কিছু একটা তাঁদের সামনে এসে দাঁড়ায়। তিনি উপলব্ধি করেন কীভাবে নিজের মতো করে থাকা যায়। সেই ভাবনা থেকে তানিয়া বলেন, ‘সত্য কথা বললেই একজনের চলাচলটা সহজ হয়ে যাবে। তখন অনেক কিছুই করা যায় না। সত্য কথা বললে চুরি করতে পারবে না, উল্টাপাল্টা কিছু করতে পারবে না, করলেও ঝামেলা হয়ে যাবে। প্রতিনিয়ত যে মানুষটার সঙ্গে আমার সমস্যা চলছে, একসময় মনে হয়েছে দুজনের মধ্যে মনের মিল না থাকার চেয়ে মনে হয় সত্য ভাষণটাই জরুরি দরকার।’

যে সম্পর্কের ভেতরে মমতা ছিল না, মায়া ছিল না, সেটা খোঁজার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন তানিয়া ও টুটুল। দুজনই দূরত্বটা ফিল করছিলেন। পরে তানিয়া মনে করেন, এই সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসাটাই ঠিক হবে। তিনি বলেন, ‘ওর তো একটা জীবন আছে। চাওয়া–পাওয়া থাকতে পারে। ও যা কিছু করেছে…বাইরে গেছে, দেখেছি সোনিয়ার সঙ্গে (যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী শারমিন সিরাজ) তাঁর সঙ্গে একটা রিলেশন হয়েছে। মানুষের তো জীবন ওটা। ও তো মানুষ। এটা নিয়ে আমার নেতিবাচক কিছু বলার নেই।’

সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি ফাটল ধরে টুটুল ও শারমিন সিরাজের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ানোর পর। এবারের দূরত্বটা কঠিনভাবে বুঝতে পারেন তানিয়া। সেই সময় তানিয়া চেষ্টা করেও টুটুলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। বুঝতে পারেন, টুটুল তাঁকে ব্লক করে রেখেছেন। তারপরও একের পর এক তিনি এসএমএস দিয়েছেন। পরে তাঁর কাছে মনে হয়েছে টুটুল তাঁকে ছাড়া থাকতে চায়। তাঁর মতোই তাঁকে থাকতে দেওয়া দরকার। সেই সময়ই তিনি মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেন, তাঁদের সম্পর্ক হয়তো আর থাকছে না।
তানিয়া বলেন, ‘যেদিন মনে হয়েছে টুটুল আমার আমার সঙ্গে থাকতেই চায় না, সেদিনই আমি টুটুলকে সবকিছু থেকে ব্লক করে দিই। আমাদের সন্তানেরা সেখানে আছে। এখন আমার বাচ্চারাই ফোন দেয়। তাদের সঙ্গে কথা হয়। আমি চাই না বাচ্চারা অসম্মান করা শিখুক। তাঁদের বাবাকে অসম্মান করুক চাই না। তবে এই ব্লক আর কোনো দিন খুলব না। আমি যে টুটুলকে বিয়ে করেছিলাম সেই টুটুলকেই চেয়েছি, এস আই টুটুলকে চাইনি।’

তানিয়ার কথায় উঠে আসে, টুটুলের জনপ্রিয়তার পর থেকেই তাঁদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। এটা নিয়ে তাঁদের মধ্যে মান-অভিমান চলত। ‘সেই এস আই টুটুলকে চাওয়া’ প্রসঙ্গে তানিয়া বলেন, ‘টুটুল আমার ওপর খেপে গিয়েছিল। ও আমাকে বলত, “আমার সাকসেস তোমার সহ্য হচ্ছে না।” তাঁর সাকসেস নাকি আমার সহ্য হচ্ছে না। ও আমার ভালোবাসার জায়গাটা বুঝতেই পারল না। আমি জীবনে একটা উইশ পাইলে বলতাম, তুমি সেই আগের এস আই টুটুল হয়ে যাও।’

তানিয়া কথা প্রসঙ্গে আরও জানান, এমন একটা সময় তাঁদের বিয়ে হয়, যখন এসআই টুটুল তেমন কিছুই করতেন না। ক্যারিয়ার শুরু হচ্ছে। তখন টুটুল একটু একটু করে টাকা জমিয়ে তানিয়ার জন্মদিনে বা প্রথম বিবাহবার্ষিকীতে উপহার দিতেন। কখনো ছোট্ট একটা কানের দুল। তানিয়া আফসোস করে বলেন, ‘আমার কাছে ওই গিফটটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পরে যখন এস আই টুটুল হয়ে গিয়েছে, তখন হয়তো ডায়মন্ডের কিছু দিয়েছে, কিন্তু সেই উপহার দেওয়ার প্রক্রিয়াটা আলাদা হয়েছে। কথার টোন আলাদা হয়েছে। আস্তে আস্তে টুটুল বদলে গিয়েছে।’

প্রথম স্ত্রী অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদের সঙ্গে ২০২১ সালে টুটুলের বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের আট মাস পর টুটুল শারমিনকে বিয়ে করেন। সেই সময় টুটুল গণমাধ্যমে বলেছিলেন, ‘তানিয়ার সঙ্গে আমি পাঁচ বছর সেপারেট ছিলাম। গত বছর আমাদের অফিশিয়াল ডিভোর্স হয়।’

আজ বৃহস্পতিবার তানিয়ার অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য নেওয়ার জন্য সংগীতশিল্পী এস আই টুটুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি দেশের বাইরে। জানিয়েছেন, শিগগিরই এ বিষয়ে তিনি তাঁর মন্তব্য জানাবেন।

আরো পড়ুন : ৫ অক্টোবর ২০২৩, বৃহস্পতিবারের নামাজের সময়সূচি

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *