দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে মারুফা আক্তার পপিকে অব্যাহতি

আইন-আদালত জনপ্রতিনিধি জাতীয় তথ্য-প্রযুক্তি প্রচ্ছদ মুক্তমত রাজনীতি হ্যালোআড্ডা

জামালপুর প্রতিনিধি : আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মারুফা আক্তার পপিকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গত ১৩ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। চিঠিটি রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আপনি (মারুফা আক্তার পপি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৪২, জামালপুর-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। ২০ নভেম্বর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তার পছন্দের প্রার্থী আবুল কালাম আজাদকে মির্জা আজম এমপির মাধ্যমে জামালপুর পৌরসভা ও জামালপুর সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত জামালপুর-৫ আসনের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে মত-বিনিময়ের জন্য পাঠান। ২০ নভেম্বর সকাল ১০টায় স্থানীয় মির্জা আজম অডিটরিয়ামে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং বিকাল ৩টায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জামালপুর পৌর আওয়ামী লীগের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। আপনি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভা চলার একপর্যায়ে মির্জা আজম অডিটরিয়ামে প্রবেশ করে মঞ্চের সামনে কর্মীদের সারিতে বসেন। আপনাকে বারবার মঞ্চে এসে বসার অনুরোধ করা হলেও কর্মীদের সারিতেই বসে থাকেন। পরে সবার পিড়াপিড়িতে মঞ্চে এসে মির্জা আজমের পাশের চেয়ারে বসেন।

জেলা পর্যায়ের নেতাদের বক্তব্য চলাকালে হঠাৎ আপনি চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে উচ্চস্বরে কথা বলার সুযোগ চান। আপনার এমন আচরণে মঞ্চে উপস্থিত নেতারা হতবাক হন। এ সময় মির্জা আজম আপনাকে নিবৃত্ত করতে চেয়ারে বারবার বসতে বলেন। তারপরও আপনি নিবৃত্ত না হলে একপর্যায়ে মির্জা আজম ছোট বোন বিবেচনায় আপনাকে একটু উচ্চ স্বরে বসতে বলায়, আপনি স্লোগান দিয়ে একপর্যায়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে আপনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মির্জা আজমের পিতা এবং পরিবার নিয়ে অসত্য, কুরুচিপূর্ণ এবং অশালীন বক্তব্য দেন। যা পরে ভাইরাল হয়। এর ফলে জামালপুরের আওয়ামী লীগ পরিবারে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় বকুলতলাস্থ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এক জরুরি সভা ডাকে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, সভায় আপনার এমন আচরণ এবং অসত্য, অশালীন বক্তব্যের জন্য নিন্দা প্রস্তাব এবং আপনাকে ৭ কার্যদিবস সময় দিয়ে ঘটনার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। আপনার ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হওয়ায় আপনাকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জেলা আওয়ামী লীগের চিঠিতে আরও বলা হয়, নির্ধারিত সময় পার হলেও আপনি জেলা আওয়ামী লীগের চিঠির কোনো জবাব না দিয়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। তাই আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ৪৭ অনুচ্ছেদের ৯ ধারায় বর্ণিত বিধান মতে আপনাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জামালপুর জেলা শাখার সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ বলেন, গত ২৪ নভেম্বর মারুফা আক্তার পপিকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছিল সে চিঠির কোনো উত্তর দেননি তিনি। তাই তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

অব্যাহতির বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী মারুফা আক্তার পপি বলেন, জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ আমাকে অফিসিয়ালি কোন চিঠি পাঠায়নি। আমাকে কারণ দর্শানোর চিঠি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে আমি দেখেছি এবং বিজন কুমার চন্দ হোয়াটসঅ্যাপে তা আমাকে পাঠিয়েছেন। আমি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গত ১ ডিসেম্বর যে প্রক্রিয়ায় আমাকে চিঠি পাঠানো হয়েছিল ঠিক সেই প্রক্রিয়ায় আমি চিঠির জবাব হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছি।

আরো পড়ুন : আমাদের লক্ষ্য-নির্বাচনকে অবাধ-সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করা

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *