নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুর রেল স্টেশন থেকে উত্তর ও দক্ষিণ পাশের রেললাইনের ৫০০ গজের মধ্যে নেই প্রয়োজনীয় পাথর। এছাড়া বেহালদশা গুরুত্বপূর্ণ লুপ লাইনগুলোর। কোনো কোনো স্থানে অস্তিত্ব নেই রেললাইনেরও। ফলে একদিকে ট্রেনযাত্রা হয়ে উঠেছে বিপজ্জনক, অন্যদিকে লুপ লাইনগুলো মালবাহী ট্রেন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রায় মালবাহী ট্রেনের প্রায় লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটে। ফলে চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রুটে ভারত থেকে পাথরসহ অন্য পণ্য আমদানি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে।
রেলওয়ের সৈয়দপুর প্রকৌশল (পথ) বিভাগ জানায়, সৈয়দপুর-চিলাহাটি রেলপথের মোট ৫৪ কিলোমিটার সৈয়দপুর প্রকৌশল বিভাগের অধীনে রয়েছে। এর মধ্যে সৈয়দপুর অংশের সাত কিলোমিটারের ৫০০ গজ লাইন জরাজীর্ণ। এ রেলপথেই বছরের পর বছর ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন। সৈয়দপুর রেল স্টেশন ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহী রুটে নিত্যদিন পাঁচটি আন্তঃনগর একটি মেইল ট্রেন চলাচল করে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, স্টেশনসংলগ্ন লেভেল ক্রসিং থেকে দক্ষিণে হাতীখানা রেলওয়ে ব্রিজ ও উত্তরে গোলাহাট কবরস্থান রেলওয়ে ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার রেলসড়কে নামমাত্র পাথর রয়েছে। নাট-বল্টু বা হুক ও স্লিপার মাটিতে ঢেকে গেছে। লুপ লাইনগুলোর চিত্র আরো ভয়াবহ। কাঠের স্লিপারগুলোর অবস্থাও বেশ নাজুক। কোথাও ধরেছে পচন। অনেক স্থানে নেই স্লিপার আটকানোর ক্লিপও। অল্প গতি নিয়ে ট্রেন চললে জয়েন্ট পয়েন্টগুলো ফাঁক হয়ে যায়। এসব লাইন মেরামত না করায় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
সৈয়দপুর ডাকঘর-সংলগ্ন লেভেল ক্রসিং এলাকার চায়ের দোকানি ইমরান হোসেন বলেন, রেললাইনে পাথর নেই বললেই চলে। অনেক পয়েন্টে ক্লিপ নেই। ফলে ট্রেন চলার সময় বিকট শব্দে আতঙ্ক তৈরি হয়। সৈয়দপুর থেকে ঢাকা রুটে নিয়মিত চলাচলকারী ট্রেনযাত্রী ইলিয়াস হোসেন বলেন, নিরাপদ মনে করে ট্রেনই বেছে নিই। কিন্তু এ রেলপথে অনেক স্লিপার ভাঙাচোরা। পাথরের বালাই নেই কোথাও কোথাও। ফলে এ পথে অনেক স্থানে হেলেদুলে ট্রেন চলে। কখন বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটে, সেই দুশ্চিন্তা নিয়ে যাত্রা করতে হয় আমাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আমদানিকারক বলেন, লুপ লাইনগুলো দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় এখানে মালবাহী ট্রেনের প্রায় লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটে। লাইনগুলো ওয়াগন প্রবেশের অনুপযোগী হিসেবে ঘোষণা করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তাই পাথর আমদানি করতে পারছি না। কবে নাগাদ সংস্কার করা হবে তা বলতে পারছেন তারা।
এ বিষয়ে সৈয়দপুর রেল স্টেশনমাস্টার ওবাইদুল ইসলাম রতন বলেন, সৈয়দপুর অংশে রেললাইন ঘেঁষে গড়ে উঠেছে বাজার ও বসতি। তাই রেললাইনে পাথর থাকে না। তাছাড়া দীর্ঘদিন রেললাইনে পাথর না দেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সৈয়দপুর রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) সুলতান মৃধা বলেন, রেলওয়ে বিভাগ লাইনগুলো সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করেছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহে লাইনগুলোর সংস্কারকাজ শুরু হবে। যেসব স্থানে পাথর নেই, সেসব স্থানে পাথরও দেওয়া হবে।
আরো পড়ুন : কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে অনুষ্ঠিত হল ৩৯তম কোরিয়ান কাপ গলফ টুর্নামেন্ট পুরস্কার বিতরণী