নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নর্ডিক রাষ্ট্রসমূহের রাষ্ট্রদূতগণ সুইডেনের অ্যালেক্স বার্গ ফন লিন্ডে, ডেনমার্কের উইনি স্ট্রাপ পিটারসেন এবং নরওয়ের এসপেন রিকটার ভেন্ডসেন।
আজ বুধবার সাক্ষাৎকালে তারা নর্ডিক রাষ্ট্রসমূহের সাথে বাংলাদেশের সুদীর্ঘ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার, নারীর ক্ষমতায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপ প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর কথা উল্লেখ করে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ১৯৬২ সালের ২৩ মার্চ ঐতিহাসিক হেলসিংকি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যেই দিনটি নর্ডিক রাষ্ট্রসমূহ ‘নর্ডিক দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকেন।
এ সময় স্পিকার তাদের ৬০তম নর্ডিক দিবসের শুভেচ্ছা জানান।
স্পিকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন। ইন্ডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিলের মাধ্যমে তিনি সাধারণ প্রক্রিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার বিচারকার্য সম্পাদনের পথকে সুগম করেছেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, মাতৃ ও শিশুমৃত্যুহার হ্রাসকরণ, বিদ্যালয়গামী মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি, কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে৷ এ সময় সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে নর্ডিক রাষ্ট্রসমূহের অব্যাহত সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্স বার্গ ফন লিন্ডে বলেন, লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠা ও নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সুকৌশলে নারীদের ক্ষমতায়নে কাজ করছেন উল্লেখ করে স্পিকার বলেন, সংরক্ষিত ও নির্বাচিত নারী সংসদ সদস্য ছাড়াও প্রশাসন ও অন্যান্য নীতি-নির্ধারণী জায়গায় নারীরা আজ সুপ্রতিষ্ঠিত।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্স বার্গ ফন লিন্ডে উল্লেখ করলে স্পিকার বলেন, বর্তমান সরকার জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ব্যাপকভাবে বনায়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন, সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণসহ বহুবিধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। এ সময় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় নর্ডিক রাষ্ট্রসমূহের অব্যাহত সহযোগিতা কামনা করেন স্পিকার।
রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার ভেন্ডসেন নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ এবং নারীশিক্ষার হার বৃদ্ধিতে সচেতনতা কার্যক্রম প্রয়োজন উল্লেখ করলে স্পিকার বলেন, সংসদ সদস্যগণ নিজ নিজ এলাকায় অভিভাবকদের সাথে মতবিনিময়, বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় ইত্যাদি কার্যক্রমের মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছেন। ফলশ্রুতিতে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ এবং বিদ্যালয়গামী মেয়ে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাষ্ট্রদূতগণ বাংলাদেশকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্ধুপ্রতীম দেশ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উভয় দেশের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।