সিলেট ব্যুরো: জুয়ায় আসক্ত নাহিদ এবার নিজেকে মৃত সাজিয়ে জীবিত উধাও হয়ে যায়। বিছানা, ঘরে ছিটিয়ে দিয়ে যায় লাল রঙ মেশানো পানি। এতে মনে করা হয়েছিল; তাকে কেউ হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলেছে। কিন্তু পুলিশের সন্দেহ ছিল শুরু থেকেই। তারা তদন্তে নেমে ৪০ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযান শেষে গ্রেপ্তার করেছে আলোচিত নাহিদকে। গতকাল সিলেট জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রেস ব্রিফিংয়ে ঘটনাটি জানিয়েছেন। পুলিশ সুপার জানান, গত শুক্রবার ভোরে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আমান উদ্দিন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানান মাথিউরা পূর্বপার গ্রামের মো. আব্দুল হেকিমের বাড়ির কেয়ারটেকার নাহিদ ইসলাম উধাও হয়েছেন। তার ঘরভর্তি রক্ত। এ ঘবর খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানার একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে বিছানা, ঘরের মেঝে এবং বারান্দায় রক্তে সয়লাব থাকলেও লাশ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। প্রাথমিকভাবে এটি হত্যাকাণ্ড মনে হওয়ায় রহস্য উদ্ঘাটন এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য একটি গোয়েন্দা দল অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত শনিবার খুন হওয়ার নাটক সাজানো নাহিদকে নরসিংদী থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ সুপার জানান- গ্রেপ্তার হওয়া নাহিদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, তিনি প্রায় ১৪ বছর ধরে বিয়ানীবাজারের ওই এলাকায় আছেন। কিন্তু তার প্রকৃত পরিচয় কেউ জানতেন না। নাহিদের বাড়ি নিলফামারীতে এবং সেখানে অপরাধে জড়িয়ে পড়ায় তিনি বিয়ানীবাজারে আত্মগোপনে আছেন। পুলিশ জানতে পারে, নাহিদ মূলত অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং এর মাধ্যমে বড় অঙ্কের টাকা তার ঋণ হয়ে যায়। এরপর তিনি কৌশলে জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের নাম পরিবর্তন করে স্থায়ী ঠিকানা গোপন রেখে বিয়ানীবাজারের ওই বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে থাকতে শুরু করেন এবং সেই ঠিকানা স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। প্রকৃতপক্ষে তার নাম তাজুল ইসলাম। তিনি নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ থানার বড়ভিটা পূর্বপাড়া গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে। এদিকে, নাহিদের নিখোঁজ হওয়ার পর পুলিশের এ নিয়ে সন্দেহ হলে তার ঘর তল্লাশি করে একটি ডায়েরি পায়। যাতে অনেক দেনা-পাওনার হিসাব লিখে রেখেছিলেন নাহিদ। তল্লাশি করে তার ঘরে একটি বালতি ও মগে রঙ গুলিয়ে রাখার আলামত পাওয়া যায়।
আরো পড়ুন : বিশ্বের অন্য কোথাও এমনটি ঘটলে সেই গণমাধ্যমের লাইসেন্স বাতিল হতো