ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে বসেছিলেন একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও আরেকজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। উপস্থিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন তারা। এরইমধ্যে বেশ কয়েকজন নেতার প্রশ্ন ভিসা নীতি কাদের ওপর দেয়া হলো। ওদিকে ওই দুই নেতার ফোনে একের পর এক কয়েকটি কল আসলো। কুশল বিনিময়ের পরেই বোঝা গেল ওপাশ থেকেও একই প্রসঙ্গ এসেছে আলোচনায়। তাদের একটাই কথা-নাম তো প্রকাশ করা হয়নি। আমরাও তো এখনো জানি না। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাদানকারীদের ওপর ইতিমধ্যে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই সমস্ত ব্যক্তিরা এবং তার পরিবারের সদস্যরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাবেন না। যদি কারও ভিসা থেকে থাকে তাহলে তাদের ভিসা বাতিল করা হবে।
এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকে আওয়ামী লীগের মধ্যে বিস্তর আলোচনা শুরু হয়েছে। তৃণমূল থেকে নেতাদের কাছে অসংখ্য ফোন আসছে বিষয়টি নিয়ে। তাদের কৌতূহল কী হতে যাচ্ছে ভিসা নীতি নিয়ে। কারা আছেন তালিকায়। শুধু তাই নয়, নেতাদের মধ্যেও এ নিয়ে চলছে আলোচনা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সফররত আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরইমধ্যে ভিসা নীতি নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন।
প্রধানমন্ত্রী জনগণকে আশ্বস্ত করেছেন, ভিসা নীতি নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। অন্যদিকে চিকিৎসা শেষে সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে বিমানবন্দরেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির দায় সরকারের নয়, যারা নির্বাচনে বাধা দিয়েছিল তাদের জন্য। তবে ভিসা নীতি ও নিষেধাজ্ঞার পরোয়া করে না আওয়ামী লীগ। গতকাল বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে গিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিয়ে আলোচনা করতে দেখা যায়। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একজন নেতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা আরোপ কার্যকর নিয়ে আওয়ামী লীগের কী ভূমিকা হবে তা এরইমধ্যে আমাদের দলীয় সভাপতি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন।
দলের সাধারণ সম্পাদকও এ নিয়ে উদ্বিগ্ন না হওয়ার কথা বলেছেন। তাই আমাদের আগামী দিনের কর্মসূচিতে নেতারা ভিসা নীতির বিরুদ্ধে কথা বলবে। এ পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করবে। পাশাপাশি যথাসময়ে নির্বাচন বিষয়ে কঠোর অবস্থানের কথা জানানো হবে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব- উল আলম হানিফ বলেন, আমেরিকার ভিসা নীতির পরে দেখলাম বিএনপি নেতৃত্ব ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছে। তোমাদেরকে এদেশের লোকজন চেনে। তিনি আরও বলেন, আজ যে বিএনপি বড় বড় কথা বলে, বিএনপিকে তৃতীয় গ্রেডের সন্ত্রাসী দল ঘোষণা করেছিল আমেরিকার ফেডারেল কোর্ট। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকতে দেশকে ব্যর্থ জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মি আহমদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে আমাদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তারা ভিসা নীতি প্রয়োগ শুরু করেছে। কিন্তু কী কারণ সেটা তারা জানে। তবে আমাদের সরকার আগে থেকে বলে আসছে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।