স্টাফ রিপোর্টার : ঈদ বাজারকে সামনে রেখে তিন কোটি টাকার জাল নোট ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা ছিল একটি চক্রের। পরিকল্পনা অনুযায়ী চক্রের সদস্যরা ঢাকার ধলপুর এলাকার কমিশনার রোডের একটি বাড়িতে রাতদিন খেটে জাল নোট তৈরি করছিল। কিন্তু বাজারে ছড়িয়ে দেয়ার আগেই বিষয়টি ডিবি পুলিশের নজরে আসে। অভিযান চালানো হয় ওই বাড়িতে। পরে ডিবি গুলশানের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিম চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ৬৫ লাখ টাকা মূল্যমানের জাল নোটসহ বিভিন্ন উপকরণ উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- চক্রের মূলহোতা মো. কাউছার হোসেন ওরফে কাশেম (৫০), তার সহযোগী মো. নজরুল ইসলাম (৩৪) ও মিনার (৩৬)।
ডিবিসূত্র জানায়, চক্রটি ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে জাল নোট তৈরি করে বিক্রি করে আসছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১০০০, ৫০০, ২০০ টাকা সমমূল্যের উন্নতমানের জাল নোট তৈরি করা। পরে এসব নোট ঢাকাসহ সব বিভাগীয় শহরগুলোতে ছড়িয়ে দেয়া। সেই লক্ষ্যেই তারা পরিশ্রম করে নোট তৈরি করছিল। যাতে করে ঈদের চাঙ্গা বাজার ধরতে পারে।
ডিবির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের মূলহোতা কাউসার জানায়, ১ লাখ টাকার জাল নোট তৈরি করতে তাদের ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়। জাল নোট তৈরি করার পর তারা পাইকারি মূল্যে বিক্রি করে বিভিন্ন পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে। তারা আবার কিছু টাকা লাভ রেখে বিক্রি করে দেয় খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে। খুচরা ব্যবসায়ীরাই মূলত প্রান্তিক পর্যায়ে আসল টাকার সঙ্গে নকল টাকা মিলিয়ে ছড়ায়। পাইকারি মূল্য ৫০০ টাকার ২ বান্ডিল ৫০ হাজার টাকার জাল নোট ৭ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। ১ হাজার টাকার নোটের লাখ টাকার বান্ডিল ৮ হাজার টাকা এবং ২০০ টাকার নোটের ২০ হাজার টাকার বান্ডিল ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।
ডিবি ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এস এম রেজাউল হক বলেন, চক্রটির কাছ থেকে ৬৫ লাখ টাকার তৈরি করা জাল নোট ও আরও কয়েক কোটি টাকার মূল্যের জাল নোট তৈরির সকল সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে। তারা প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের জাল নোট ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিল বলে আমাদেরকে জানিয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত প্রত্যেকের নামে জাল নোট তৈরির কারণে ঢাকা মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি বলেন, ঈদের সময় মানুষের কাছে টাকার লেনদেন বেশি হয়। প্রবাসীরাও এ সময় রেমিট্যান্স পাঠান। তাই বাজারেও বিক্রি ভালো হয়। বেচাকেনার সময় এসব জাল নোট ভালো নোটের সঙ্গে কৌশলে দেয়া হয়। জাল নোটের কারণে যাতে কেউ ধোঁকা না খায় সেজন্য আমরা সতর্ক আছি।
আরো পড়ুন : সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় ফেঁসে যাচ্ছেন যুগ্মসচিব এনামুল