প্রতিবাদে আর বিক্ষোভে উত্তাল চট্টগ্রাম : মধ্যরাতে হাসিনার পক্ষে ঝটিকা মিছিল

জাতীয় তথ্য-প্রযুক্তি প্রচ্ছদ রাজনীতি শিক্ষা হ্যালোআড্ডা

চট্টগ্রাম থেকে স্টাফ রিপোর্টার: চট্টগ্রামে মধ্যরাতে হঠাৎ ঝটিকা মিছিল করেছে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় তাদের কয়েকজনকে অস্ত্র বহন করতেও দেখা যায়। এই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন। তারা চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) কার্যালয় ঘেরাও করেন। একইসঙ্গে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা ও নির্যাতনের অপরাধে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগ- যুবলীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানান। শুক্রবার (১৮ই অক্টোবর) রাত ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে নগরের জামালখান এলাকায় জয় বাংলা স্লোগান দেন ২৫-৩০ জন তরুণ। তবে এক থেকে দেড় মিনিট পর তারা দ্রুত সটকে পড়ে। পরে সেখানে শিবিরের নেতাকর্মীরা এসে মিছিল করেন। এরমধ্যে হঠাৎ করে গভীর রাতে আওয়ামী লীগের মিছিল করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে পলাতক যুবলীগ ছাত্রলীগের ক্যাডাররা এমন কর্মসূচি পালনের দুঃসাহস দেখিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড পেজে শেয়ার করা ৩৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সামনে কয়েকটি মোটরসাইকেল ধীরগিততে এগিয়ে চলছে। সেগুলোর পেছনে ২০-৩০ জনের মিছিল। তাদের বেশির ভাগেরই মুখে ছিল মাস্ক। সেখানে পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে ‘শেখ হাসিনার ভয় নেই, রাজপথ ছাড়ি নাই’-স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের। দ্রুতই তারা মিছিলটি শেষ করে চলে যান।

এদিকে মধ্যরাতে চট্টগ্রামের জামালখানে পতিত স্বৈরাচারের পক্ষে ছাত্রলীগের মিছিলের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা শনিবার বিকাল ৩টায় বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিক্ষোভ থেকে ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন ভারতে’, ‘খুনি হাসিনার দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘মুক্তিযুদ্ধের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’ স্লোগান দেয়া হচ্ছে। সমাবেশ থেকে তারা মিছিল নিয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন কার্যালয় ঘেরাও করেন। ঘেরাও কর্মসূচি থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, ‘যারা এদেশের ছাত্র জনতার ওপর গণহত্যা চালিয়েছে, খুন করেছে, গুম করেছে। তাদের এই দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। তাই আমরা শিক্ষার্থীরা এই চট্টগ্রাম থেকে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও সেচ্ছাসেবক লীগসহ স্বৈরাচারের সকল দোসর সংগঠনকে নিষিদ্ধ করছি।’
বিক্ষোভে অংশ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ‘যারা জুলাই অভ্যুত্থানে আমাদের ওপর গুলি চালিয়েছে, আমাদের ভাই-বোনদের হত্যা করেছে। নির্বিচারে গুলি চালিয়েছ। আমরা দেখতে পাচ্ছি তারা এখনো অবাধে ঘোরাফেরা করছে। তারই ফলস্বরূপ আমরা দেখেছি তারা হাইকোর্টে খুনি হাসিনার পক্ষে স্লোগান দেয়। রাতের আঁধারে ছাত্রলীগ খুনি হাসিনার জন্য স্লোগান দেয়।’

রাফি বলেন, ‘তারা ভেবেছিল আমরা ঘুমাইয়া গেছি, তারা বুঝে নাই আমরা তাদের গর্ত থেকে বের হওয়ার সুযোগ দিয়েছি। আমরা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই। যারা এখনো খুনি হাসিনার পক্ষ নিয়ে, স্বৈরাচারের পক্ষ নিয়ে তারা জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। তারা কোনো না কোনোভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।’

এখনো শহীদের রক্তের দাগ শুকায় নাই উল্লেখ করে খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ‘যে চট্টগ্রামের মাটিতে শহীদ ওয়াসিম, শহীদ শান্ত এবং শহীদ হৃদয় তরুয়ার রক্ত লেগে আছে। সেই রাজপথে তারা স্লোগান দেয়ার মতো দুঃসাহস দেখিয়েছে। আমরা মনে করি এখানে প্রশাসনের ব্যর্থতা রয়েছে।’

আরো পড়ুন : আগে সর্বশেষ কর্মীর শেষ মামলাটিও প্রত্যাহার চান তারেক রহমান: ব্যারিস্টার কায়সার কামাল

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *