ফেরিওয়ালা আব্দুল খালেকের কপালে জোটেনি বয়স্ক ভাতা বা কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা

ওকে নিউজ স্পেশাল পুরুষ প্রচ্ছদ লাইফ স্টাইল

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : গ্রামে গ্রামে ফেরি করে চুড়ি, ফিতা, লিপস্টিক, আলতা, স্নো, পাউডারসহ নারীদের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন রকম প্রসাধনসামগ্রী বিক্রি করেন আব্দুল খালেক (৬৫)। বৃদ্ধ বয়সে ফেরি কাঁধে নিয়ে সারা দিন এ গ্রাম-ও গ্রাম ঘুরে যা বিক্রি হয়, তার লভ্যাংশ দিয়েই কোনোরকমে চলে তার সংসার। খেয়ে-না খেয়ে থাকলেও তার কপালে জোটেনি বয়স্ক ভাতা বা কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা।

জীবন-জীবিকার তাগিদে অবিরাম ছুটে চলা বৃদ্ধ আব্দুল খালেকের সঙ্গে দেখা হয় গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের প্রাণকৃষ্ণ গ্রামের ভদের বাজার এলাকায়। কথা বলে জানা যায় তার জীবন-সংগ্রামের করুণ কাহিনি।

ফেরিওয়ালা আব্দুল খালেকের বাড়ি উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পশ্চিম ধনিরাম গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত মজির উদ্দিনের ছেলে। এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক আব্দুল খালেক ছেলেমেয়ের বিয়ে দিয়েছেন অনেক আগে। মেয়ে জামাইবাড়িতে আর দিনমজুর ছেলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকেন আলাদা। সাড়ে তিন শতকের ভিটাবাড়িতে স্ত্রী ছকিনা বেগমকে নিয়েই আব্দুল খালেকের সংসার।

আব্দুল খালেক জানান, তার ফেরিতে ছয় থেকে সাত হাজার টাকার মালপত্র আছে। সারা দিন গ্রামে গ্রামে ঘুরে ৫০০-৭০০ টাকা বিক্রি করেন তিনি। ওটা থেকে যা আয় হয়, তা দিয়েই চলে তাদের দুজনের সংসার। আগে কয়েক গ্রাম ঘুরতেন, বিক্রি বেশি হতো। এখন বয়স বেড়ে যাওয়ায় বেশিদূর যেতে পারেন না। তাই বিক্রিও কমে গেছে।

বয়স্ক বা বৃদ্ধ ভাতা পান কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল খালেক বলেন, ‘ফটো আর আইডি কার্ড ধরি (নিয়ে) মেম্বার-চেয়ারমেনের (চেয়ারম্যান) পাছোত (পিছনে) অনেক ঘুরচোং (ঘুরেছি) বাহে, আর না ঘোরোং। মুই (আমি) বোলে (নাকি) চলং (চলি) ভাল্ (ভালো), সেই জন্যে মোক (আমাকে) না দেয় বাহে। তোমরা দোয়া করেন, মোক আল্লায় চলাইবে বাহে, আল্লায় চলাইবে।’

এ প্রসঙ্গে বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু বলেন, ওই ব্যক্তি আমার কাছে এসেছে বলে আমার মনে হয় না। তবে খোঁজখবর নিয়ে তার ভাতার ব্যবস্থা করা হবে।

আরো পড়ুন : ৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি চব্বিশ বছর পর গ্রেপ্তার

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *