সাভার প্রতিনিধি : সাভারে সালাম না দেওয়াকে কেন্দ্র করে কলেজ ছাত্র তন্ময় শাহিনের ওপর হামলার ঘটনায় ‘ভাইগ্না’ গ্রুপের প্রধান মো. হিমেল ওরফে হিরুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে সাভার সদর ইউনিয়নের তালতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মো. হিমেল মামলার এজাহারভুক্ত ৩ নম্বর আসামি। গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া সাভার মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. শহিদুল ইসলাম।
স্থানীয়রা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে কলেজছাত্র তন্ময় শাহিন সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের উদ্দেশে রওনা হয়। এর ১০ মিনিট পর চাঁপাইন নিউমার্কেট রোডের ফ্রেন্স টাওয়ারের সামনে পৌঁছালে তার গতিরোধ করে সেখানে আড্ডারত ‘মামা ভাইগ্না’ গ্রুপের সদস্যরা তার পথরোধ করে। এসময় তাকে বিভিন্ন অবান্তর প্রশ্ন করতে থাকে তারা। কথা বলার সময় ওই গ্রুপের সদস্য মো. শরীফকে সালাম না দেওয়ায় তাকে চর-থাপ্পর, কিলঘুষি দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। একপর্যায়ে নিজেকে রক্ষায় শাহীন দৌড় দেয়।
চাঁপাইন তালতলা এলাকায় পৌঁছালে তার উপর দ্বিতীয় দফায় সুইচ গিয়ার দিয়ে এলোপাতাড়ি জখম করে অভিযুক্তরা। এসময় স্থানীয় মুছা এহসান মুন্না, আব্দুল করিম, মো. ইয়াছিন ও এক বীর মুক্তিযোদ্ধা হামলা থেকে কলেজছাত্র তন্ময় শাহিনকে বাঁচাতে গেলে তাদের উপরও হামলা চালিয়ে আহত করে কিশোর গ্যাং ‘মামা-ভাইগ্না’ গ্রুপের সদস্যরা। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ পুলিশে খবর দেওয়া হয়। স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় সাভার মডেল থানা পুলিশ।
ভুক্তভোগী সাভার সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র তন্ময় শাহীনের পক্ষ থেকে সাভার মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযুক্তরা আপস-মীমাংসায় ব্যর্থ হয়ে আহত তন্ময় শাহীনের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে। পরে তদন্ত করে তন্ময় শাহীনের উপর হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ঘটনার সত্যতা পেয়ে মামলা রুজু করে পুলিশ।
মামলার আসামিরা হলেন-সাভার পৌরসভার ডগরমোড়া মহল্লার ওসমান মাদবরের ছেলে মো. শহীদ (৪২), মো. মুন্না ওরফে কবুতর মুন্না (২৪), মো. হিমেল (২৫), সাহামতের ছেলে মো. রফিক (৪০), কাসেম ঢালীর ছেলে বাবুল (৪০), মো. শরীফ (২২) ও মো. রোহান (১৯)। এছাড়াও অজ্ঞাত আরো ১০/১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
জানা যায়, সাভারের চাঁপাইন ঢাল এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের দুইটি গ্রুপ রয়েছে। এর মধ্যে মামা গ্রুপের প্রধান মুন্না ওরফে কবুতর মুন্না (২৪)। আর ভাইগ্না গ্রুপের প্রধান মো. হিমেল ওরফে হিরু। তারা সম্পর্কে আপন মামা-ভাগ্নে। তাদের দুই গ্রুপে প্রায় দেড় শতাধিক কিশোর গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, কলেজ শিক্ষার্থী তন্ময় শাহিনের উপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। ভাইগ্না গ্রুপের প্রধান হিমেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আরো পড়ুন: বিপর্যস্ত কৃষকের মুখে ‘আমনই’ ফুটালো হাসি