রাজধানীর বনানী ক্লাব থেকে আটক মুন্সীগঞ্জ বিএনপির ৫৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। সোমবার সকালে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বনানী ক্লাবে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়ে তারা রাষ্ট্রবিরোধী পরিকল্পনা করছিলেন। বনানী থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান সোমবার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান ও শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির নেতারা রোববার রাতে বনানী ক্লাবে বৈঠক করার সময় তাদের আটক করা হয়। আটকদের মধ্যে মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান ও শ্রীনগরের বিএনপি নেতা মোমিন আলী ও আবদুল কুদ্দুস ধীরনসহ ৫৩ জন রয়েছেন।
এসব নেতাদের গ্রেফতার ও মামলা দেওয়ায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান তিনি।
বিবৃতিতে বলা হয়, মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মমিন আলী, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস ধীরেন, শ্রীনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম, বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন, দেলোয়ার হোসেন ও আনসার আলী, আওলাদ হোসেনসহ ৫৩ জনকে ঢাকায় একটি সামাজিক অনুষ্ঠান থেকে এবং নেত্রকোণা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান দুদু, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আয়নাল হককে বাড়ি থেকে গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশের মানুষ যখন গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা তখন বর্বর ফ্যাসিস্ট সরকার নির্বিচারে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে মামলা, হামলা, গ্রেফতার, রিমান্ডে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন এবং কারান্তরীণ করা অব্যাহত রেখেছে। দেশের মানুষকে ব্যক্তিগত কিংবা সামাজিক অনুষ্ঠানেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। নেত্রকোণাসহ সারা দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে প্রতিনিয়ত তল্লাশির নামে হয়রানি করা হচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে- দেশটা এখন আওয়ামী লীগের পৈত্রিক সম্পত্তি। বর্তমান শাসকগোষ্ঠী দেশকে বিরোধী দলশূন্য করে নিজেদের একচ্ছত্র শাসন দীর্ঘায়িত করার গভীর চক্রান্তে লিপ্ত।’
ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল, এই দলটিকে ধ্বংস করে দেশে এক ব্যক্তির শাসন কায়েম করতেই বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে কারারুদ্ধ করার মাধ্যমে লক্ষ্য বাস্তবায়নে নিরন্তর অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। কর্তৃত্ববাদী সরকার এখন বুঝে গেছে যে, তাদের আয়ুস্কাল ফুরিয়ে এসেছে, আর এ কারণেই তারা এখন বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে মরণকামড় দিতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। উল্লিখিত নেতাদের সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার বলেই তাদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ভোটারবিহীন আওয়ামী সরকারের নির্যাতন-নিপীড়ন যত বাড়বে প্রতিবাদের ঝড়ের গতি ততই তীব্র হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বিবৃতিতে অবিলম্বে গ্রেফতার এসব নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান।
আরো পড়ুন : বান্দরবানের রুমায় চান্দের গাড়িতে ট্রাকের ধাক্কায় নিহত ৪