মালয়েশিয়ার লংকাউইতে শুক্রবার থেকেই প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টি। পাহাড়ি এলাকায় চলছে ঢল। এর মধ্যেই শনিবার সকালে শুরু হয় আয়রনম্যানের দুটি প্রতিযোগিতা। একটি পূর্ণ দূরত্বের, অপরটি অর্ধদূরত্বের (৭০ দশমিক ৩)। দুটি আয়রনম্যান প্রতিযোগিতায় ১১ জন বাংলাদেশি ক্রীড়াবিদ (ট্রায়াথলেট) অংশ নিয়েছেন। ১১ জনের সবাই আয়রনম্যান চ্যালেঞ্জ সম্পন্ন করেছেন।
আয়রনম্যান মালয়েশিয়া প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের মোহাম্মদ সামসুজ্জামান আরাফাত ৪২৭ জন ট্রায়াথলেটের মধ্যে ১১তম স্থান অর্জন করেছেন। নিজের বয়স গ্রুপে (৩০–৩৪ বছর) তাঁর অবস্থান দ্বিতীয়। ফলে আয়রনম্যানের সর্বোচ্চ আসর আয়রনম্যান ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে দ্বিতীয়বারের মতো অংশগ্রহণ প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল তাঁর।
শনিবার মধ্যরাতে প্রতিযোগিতার শেষে আরাফাত বলেন, ‘এত প্রতিকূল আবহাওয়াতে যে আয়রনম্যান চ্যালেঞ্জ সম্পন্ন করতে পেরেছি, এটিই আমার কাছে বড়। সবচেয়ে বড় কথা হলো, বাংলাদেশের আটজন ট্রায়াথলেটই আজ সফল হয়েছেন। দেশের জন্য এটি গৌরবের।’
প্রতিযোগিতায় আরাফাত ১০ ঘণ্টা ৩১ মিনিট ৩২ সেকেন্ডে ৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার সাঁতার, ১৮০ কিলোমিটার সাইক্লিং এবং ৪২ দশমিক ২ কিলোমিটার দৌড় সম্পন্ন করেন। তাঁর সঙ্গে আয়রনম্যান চ্যালেঞ্জ সম্পন্ন করেন বাংলাদেশের আরিফুর রহমান (১১ ঘণ্টা ২১ মিনিট ১১ সেকেন্ড), তাঁর অবস্থান ৪৬তম। ১৩ ঘণ্টা ১৯ মিনিট ১৬ সেকেন্ড সময় নিয়ে ১৫১তম স্থানে আছেন মিশু বিশ্বাস। পবিত্র কুমার দাশ শেষ করেন ১৩ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট ৫০ সেকেন্ডে (১৯৯তম স্থান)। শুভ দে আছেন ২০৫তম স্থানে (১৩ ঘণ্টা ৫৭ মিনিট ৫৬ সেকেন্ড)। ৪০ থেকে ৪৫ বছর বয়স গ্রুপের ইমতিয়াজ ইলাহীর সময় লেগেছে ১৪ ঘণ্টা ২৪ মিনিট ১৮ সেকেন্ড। মুনতাসীর সামি ১৪ ঘণ্টা ২৪ মিনিট ৪১ সেকেন্ড সময় নিয়ে প্রতিযোগিতা শেষ করেন। সুলতান মাহমুদের সময় লেগেছে ১৪ ঘণ্টা ৪৭ মিনিট ১২ সেকেন্ড।
অর্ধদূরত্বের আয়রনম্যান ৭০.৩ লংকাউইতে শনিবার সফল বাংলাদেশের তিনজনই। ৪৯৭ জন প্রতিযোগীর মধ্য ২৭২তম স্থান নিয়ে চ্যালেঞ্জ সম্পন্ন করেন ইশতিয়াক উদ্দিন। তাঁর সময় লেগেছে ৬ ঘণ্টা ৩২ মিনিট ৮ সেকেন্ড। এ প্রতিযোগিতায় সফল বাকি দুজন হলেন অর্ণব বিশ্বাস (৭ ঘণ্ট ৪৫ মিনিট ৫৫ সেকেন্ড) এবং এস এম জি সাকলায়েন (৭ ঘণ্টা ৪৭ মিনিট ২৭ সেকেন্ড)।
সাঁতার, সাইক্লিং ও দৌড়ের সমন্বয়ে যে খেলা, সেটির নাম ট্রায়াথলন। পৃথিবীতে ট্রায়াথলনের সবচেয়ে কঠিন প্রতিযোগিতা হলো আয়রনম্যান। ট্রায়াথলেট বা ট্রায়াথলন ক্রীড়াবিদের জন্য কঠিনতম প্রতিযোগিতা আয়রনম্যান। দূরত্বের হিসাবে কয়েকটি সংস্করণে আয়রনম্যান প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে পৃথিবীর কয়েকটি দেশে।
পূর্ণাঙ্গ আয়রনম্যান প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগীদের জন্য থাকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার সাঁতার, ১৮০ কিলোমিটার সাইক্লিং এবং ৪২ দশমিক ২ কিলোমিটার দৌড় সম্পন্ন করার চ্যালেঞ্জ। ৭০.৩ আয়রনম্যানকে বলা হয় অর্ধদূরত্বের আয়রনম্যান। সাঁতার, সাইক্লিং ও দৌড়-তিনটি বিষয়ে অর্ধেক দূরত্ব পেরোনোর চ্যালেঞ্জ থাকে আয়রনম্যান ৭০.৩ ইভেন্টে।
বিভিন্ন দেশে হওয়া আয়রনম্যান প্রতিযোগিতায় চ্যালেঞ্জ সম্পন্ন করা ট্রায়াথলেটদের মধ্য থেকে বাছাই করে তাঁদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় আয়রনম্যানের সর্বোচ্চ আসর আয়রনম্যান ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ।
আয়রনম্যান মালয়েশিয়া প্রতিযোগিতায় মোহাম্মদ শামছুজ্জামান আরাফাতকে সহযোগিতা করছে প্রথম আলো। আয়রনম্যান প্রতিযোগিতার ফলাফল দেখা যাবে আয়রনম্যান অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে।
আরো পড়ুন : হামলা দু’পক্ষের মধ্যে, মামলা ইশরাকসহ ১৩০ বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে, গ্রেপ্তার ৭