মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি: মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় বাল্কহেডের ধাক্কায় পিকনিকের একটি ট্রলার ডুবে গেছে। গতকাল শনিবার রাত আটটার দিকে উপজেলার তালতলা-গৌরগঞ্জ খালের রসকাঠি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাত ১২টা পর্যন্ত আটজনের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। নিখোঁজ আছেন আরও অন্তত পাঁচজন।
তাৎক্ষণিকভাবে মৃত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। মৃত আটজনের মধ্যে দুজন নারী, দুটি ছেলেশিশু এবং বাকি চারজন কিশোর থেকে তরুণ বয়সী। এসব তথ্য নিশ্চিত করেন লৌহজং ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা কায়েস আহম্মেদ।
রাত ১২টার দিকে কায়েস আহম্মেদ বলেন, রাত ৮টার দিকে তাঁরা দুর্ঘটনার খবর পান। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, স্থানীয় লোকজন চারজনের লাশ উদ্ধার করেছেন। তাঁরা গিয়ে রাত ৯টার দিকে আরও একজনের লাশ উদ্ধার করেন। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আরও তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। পিকনিকের ট্রলারে ছিলেন ৪৬ জন। ট্রলারডুবির ঘটনায় এখনো পাঁচজন নিখোঁজ আছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, দুপুরের পর সিরাজদিখান উপজেলার লতাব্দি ইউনিয়নের নারী-শিশুসহ কিছু ব্যক্তি ট্রলারে করে পদ্মা নদীতে পিকনিকে যান। পিকনিক শেষে ট্রলারটি তালতলা-গৌরগঞ্জ খাল দিয়ে লতাব্দির দিকে যাচ্ছিল। রাত আটটার দিকে ট্রলারটি লৌহজংয়ের রসকাঠি এলাকায় পৌঁছালে একটি বাল্কহেড ধাক্কা দেয়। এতে ট্রলারটি পানিতে তলিয়ে যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রসকাঠি এলাকার সবুজ মিয়া নামে এক তরুণ বলেন, ‘আমরা দেখছিলাম ট্রলারটি সিরাজদিখানের দিকে যাচ্ছিল। কিছুক্ষণ পর খুব জোরে শব্দ পাই। এরপর মানুষের চিৎকার-কান্নাকাটি শুনে দৌড়ে খাল পাড়ে গিয়ে দেখি ট্রলারটি ডুবে গেছে। তাৎক্ষণিক কয়েকজনকে সেখান থেকে উদ্ধার করি।’
মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান বলেন, মৃত ব্যক্তিরা সবাই লতাব্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা। নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারের কাজ চলছে। পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, বাল্কহেডটি আটক করা হয়েছে। বাল্কহেডের চালকসহ বাকিরা পলাতক। পুলিশ তাঁদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালাচ্ছে।
এদিকে ট্রলারডুবির ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. আবুজাফর রিপন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন আরাকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন : রাজনৈতিক সংঘাত বন্ধ করে সংলাপে বসার আহ্বান সুজনের