ভারতের অযোধ্যায় চলতি বছরের মে মাসে নতুন মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু হবে। মসজিদটি নির্মাণ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশনের (আইআইসিএফ) উন্নয়ন কমিটির প্রধান হাজি আরাফাত শাইখ মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পটি তদারক করছেন। সম্প্রতি রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, ‘পবিত্র রমজান শেষ হওয়ার পর আগামী মে মাসে মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হবে। নির্মাণকাজ শেষ হতে তিন থেকে চার বছর লাগবে।’
মোগল সম্রাট বাবরের সেনাপতি মীর বাঁকি ১৫২৮ সালে অযোধ্যায় মসজিদ তৈরি করেন, যা পরবর্তী সময়ে বাবরি মসজিদ নামে পরিচিতি লাভ করে। তবে হিন্দুদের দাবি, রাম জন্মভূমিতে ‘রামের মন্দির ভেঙে’ মসজিদটি তৈরি করা হয়েছে। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর করসেবকদের হামলায় মসজিদটি ধ্বংস হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতজুড়ে দাঙ্গা দেখা দেয়। তাতে দুই হাজার মানুষ নিহত হন, যাঁদের বেশির ভাগই সংখ্যালঘু মুসলমান।
২০১৯ সালের নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট বিতর্কিত জমির মালিকানার রায় মন্দিরের পক্ষে দেন। রায়ে বলা হয়, হিন্দু সম্প্রদায় ওই জায়গায় মন্দির নির্মাণ করতে পারবে এবং ওই শহরেরই অন্যত্র একটি মসজিদ নির্মাণের জন্য মুসলিম সম্প্রদায়কে জায়গা দিতে হবে।
রায় ঘোষণার কয়েক মাসের মধ্যেই রামমন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে যায়। আজ সোমবার রামমন্দির উদ্বোধন করা হচ্ছে।
রামমন্দির নির্মাণের জায়গা থেকে নতুন মসজিদ নির্মাণের জন্য বরাদ্দ করা জায়গার দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার। এখনো এর কাজ শুরু করা যায়নি। মসজিদ নির্মাণে এখন পর্যন্ত তহবিলও সংগ্রহ করা হয়নি।\আইআইসিএফের প্রেসিডেন্ট জুফার আহমদ ফারুকি বলেন, ‘আমরা কারও কাছে সাহায্য চাইনি। এর জন্য (তহবিল) কোনো গণ-উদ্যোগও নেওয়া হয়নি।’
আইআইসিএফের সচিব আতহার হুসেন বলেন, মিনারসহ আরও কিছু ঐতিহ্যগত অংশ যুক্ত করতে মসজিদটির নকশা নতুন করে আঁকতে হয়েছে। এ কারণে কাজ শুরু হতে দেরি হচ্ছে। মসজিদ প্রাঙ্গণে ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট একটি হাসপাতাল স্থাপনেরও পরিকল্পনা আছে বলে জানান তিনি।
আইআইসিএফের উন্নয়ন কমিটির প্রধান এবং বিজেপি নেতা আরাফাত শাইখ বলেছেন, মসজিদটি নির্মাণে অর্থ সহায়তা চাইতে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে একটি ক্রাউড-ফান্ডিং (গণ-তহবিল সংগ্রহে) ওয়েবসাইট চালু করা হবে।
আরাফাত শাইখ বলেন, ‘মানুষের মধ্যকার শত্রুতা ও বিদ্বেষকে একে অপরের প্রতি ভালোবাসায় পরিণত করতেই আমরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। কেউ সুপ্রিম কোর্টের রায় গ্রহণ করেছে কি না, তা এ ক্ষেত্রে বিবেচনার বিষয় নয়। আমাদের সন্তানদের ও জনগণকে যদি ভালো কিছু শেখাতে পারি, তবে এসব লড়াইয়ের অবসান হবে।’
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নামানুসারে মসজিদটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মসজিদ মোহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ’।
বাবরি মসজিদের নামকরণ করা হয়েছিল মুঘল সম্রাট বাবরের নামানুসারে।
আরো পড়ুন : ৯ মার্চ ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন