নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর ভাটারা থানা এলাকা থেকে এক শিক্ষার্থীসহ দুই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসান শান্ত (২২) ও গৃহিণী নুর জাহান (২৫)। গতকাল শুক্রবার ভাটারা থানা পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ মরদেহ দুটি উদ্ধার করে। গতকাল সকালে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে লাশ দুটি পাঠানো হয়।
তাঁদের মধ্যে হাসিবুল হাসান শান্ত নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার ঘোষকামতা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে। পরিবারের সঙ্গে পূর্ব ভাটারায় একটি বাড়ির নিচতলায় ভাড়া থাকতেন তাঁরা।
শান্তর বড় ভাই আব্দুল কাইয়ূম জানান, তিন ভাই এক বোনের মধ্যে তৃতীয় ছিলেন হাসিবুল। বাড্ডা লিংক রোড এলাকার তাজ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়তেন তিনি।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে রুমের দরজা বন্ধ করে উচ্চ স্বরে গান চালান হাসিবুল। এরপর রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত একটানা গান বাজতে থাকে। পরিবারের লোকজন তাঁকে ডাকাডাকি করে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে সন্দেহ হলে রুমের দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে দেখে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন হাসিবুল। পরে থানায় খবর দেয় তারা।
তাঁর রুমে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে। যেখানে নিজের হতাশার কথা লিখে গেছেন শান্ত।
ভাটারা থানার এসআই হোসেন মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বাবার সঙ্গে অভিমান করে শান্ত রুমের দরজা বন্ধ করে দেন। রাত ৮টার দিকে দরজা না খোলায় তাঁর সেবান রুমের দরজার লক খুলে দেখেন, গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে আছেন শান্ত। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে নুরজাহানের বাড়ি বাগেরহাট সদর উপজেলায়। তাঁর বাবার নাম গোলাম মোস্তফা। স্বামী মোজাহিদ ও পাঁচ বছরের ছেলে গালিবকে নিয়ে ভাটারার নূরেরচালায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তিনি।
স্বামী মুজাহিদ জানান, তিনি ব্যবসা করেন। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে বাসায় ফিরে দেখেন ঘরের ফ্লোরে পড়ে আছেন নুরজাহান। তাঁর নাক, মুখ দিয়ে লালা ঝরছে। দ্রুত তাঁকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিত্সক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। নুরজাহান উচ্চ রক্তচাপ ও মাথাব্যথার রোগে আক্রান্ত ছিলেন। অসুস্থতার কারণে তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
ভাটারা থানার এসআই সাইদুল ইসলাম সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, রাত দেড়টার দিকে খবর পেয়ে নুরজাহানের লাশ কুর্মিটোলা থেকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। অসুস্থতাজনিত কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবার দাবি করলেও বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।