বিশেষ প্রতিনিধি : টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ, বিনা টিকিটে ভ্রমণকারীদের জরিমানাসহ ভাড়া আদায় সহজ করার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আজ বুধবার রেলভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
রেলমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকিটিং ব্যবস্থায় তিনটি সেবা অন্তর্ভুক্ত করতে যাচ্ছে। এসব সেবা আগামী ১ মার্চ থেকে কার্যকর হবে।
সেবা তিনটির মধ্যে আছে, জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ের মাধ্যমে রেলওয়ের আন্তনগর ট্রেনের টিকিটিং ব্যবস্থা, টিকিট চেকিং ব্যবস্থায় পয়েন্ট অব সেল (পিওএস) মেশিনের প্রবর্তন এবং অনলাইনের মাধ্যমে কেনা টিকিট অনলাইনে ফেরতের ব্যবস্থা করা।
‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে আন্তনগর ট্রেনের টিকিট কেনার আগে প্রত্যেক যাত্রীকে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর বা জন্মনিবন্ধন সনদ যাচাই করে রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক করেছে।
কাউন্টার, অনলাইন ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট ক্রয়কারী যাত্রীরা অনলাইন অথবা মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে যেকোনো সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিটিং সিস্টেমে খুব সহজে নিবন্ধন করতে পারবেন।
রেলমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের যাত্রী সাধারণের সেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ শীর্ষক স্লোগানকে সামনে রেখে এবং বাংলাদেশ সরকারের লক্ষ্য অনুযায়ী ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকিটিং ব্যবস্থায় কিছু পরিবর্তন এনেছে।
নিবন্ধনের ক্ষেত্রে কিছু শর্তের কথা জানিয়েছে রেলওয়ে। এগুলো হচ্ছে:
১। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী যাত্রীরা বাবা বা মায়ের নাম ও এনআইডি দিয়ে নিবন্ধনকৃত রেলওয়ে অ্যাকাউন্ট অথবা জন্মনিবন্ধন নম্বর দিয়ে ও জন্মনিবন্ধন সনদ আপলোড করার মাধ্যমে নিবন্ধনকৃত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পৃথক/এককভাবে টিকিট কিনতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে টিকিটের ওপরে মুদ্রিত নামের সঙ্গে যাত্রীর সম্পর্ক যাচাইয়ের জন্য ভ্রমণকালে বাধ্যতামূলকভাবে জন্মনিবন্ধন সনদের ফটোকপি সঙ্গে রাখতে হবে।
২। বিদেশি নাগরিকেরা পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে ও পাসপোর্টের ছবি আপলোড করার মাধ্যমে নিবন্ধন করবেন।
৩। সফলভাবে এনআইডি/পাসপোর্ট/জন্মনিবন্ধন যাচাইয়ের মাধ্যমে নিবন্ধন ব্যতীত কোনো যাত্রী আন্তনগর ট্রেনের টিকিট কিনতে পারবেন না।
৪। ভ্রমণকালে যাত্রীকে অবশ্যই নিজস্ব এনআইডি বা জন্মনিবন্ধন সনদের ফটোকপি অথবা পাসপোর্ট/ছবি সংবলিত আইডি কার্ড সঙ্গে রাখতে হবে।
৫। পরিচয়পত্রের সঙ্গে টিকিটের ওপর মুদ্রিত যাত্রীর তথ্য না মিললে যাত্রীকে বিনা টিকিটে ভ্রমণের দায়ে অভিযুক্ত করা হবে এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৬। যাত্রীরা ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্মনিবন্ধন/পাসপোর্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের সিস্টেমে নিবন্ধনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন।
৭। দেশের বিভাগীয় শহরের রেলস্টেশন ও আন্তনগর ট্রেনের প্রারম্ভিক স্টেশনগুলোতে সর্বসাধারণের নিবন্ধনপ্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করার জন্য একটি করে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ন কবির, রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল আহসান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী প্রমুখ।
আরো পড়ুন : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি