রোনালদোকে ছাড়াই কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগাল

আন্তর্জাতিক খেলাধুলা প্রচ্ছদ বিনোদন হ্যালোআড্ডা

ম্যাচের আগে পর্তুগালের একাদশ দেখে চক্ষু চড়কগাছ হতেও পারে অনেকের। কোচ ফার্নান্দো সান্তোস একাদশে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকেই রাখেননি! তাঁর জায়গায় সুযোগ পেয়েছেন ২১ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড গনসালো রামোস।

পর্তুগাল সমর্থকদের কেউ কেউ সেজন্য সান্তোসের মুন্ডুপাত করলেও লুসাইলে শেষ বাঁশি বাজার পর নিশ্চয়ই আনন্দে আটখানা হয়েছেন। কাতার বিশ্বকাপ এ পর্যন্ত পর্তুগাল নিজেদের সেরা খেলাটি খেলল শেষ ষোলোয়। সুইজারল্যান্ডকে ৬–১ গোলে বিধ্বস্ত করে ২০০৬ বিশ্বকাপের পর এবারই প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে উঠল পর্তুগাল।

আরো পড়ুন : রোনালদোকে বেঞ্চে রেখেই একাদশ সাজাল কোচ ফার্নান্দো সান্তোস

গ্রুপপর্বে পর্তুগালের শেষ ম্যাচে দ্রুত তুলে নেওয়ায় কোচের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন রোনালদো। তাঁকে বসিয়ে সান্তোসের রামোসকে খেলানোর সিদ্ধান্ত ‘মাস্টারস্ট্রোক’ হিসেবে বিবেচনা করা যায়। পর্তুগালের একাদশে প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়েই হ্যাটট্রিক করেন বেনফিকার এই ফরোয়ার্ড। কাতার বিশ্বকাপে প্রথম হ্যাটট্রিকের পাশাপাশি রামোস ফিরিয়ে এনেছেন পর্তুগালের কিংবদন্তি ইউসেবিওর স্মৃতি।

আরো পড়ুন : প্রধানমন্ত্রী হলেন ‘গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর ফর ডায়াবেটিস’-বাসস

‘ক্ল্যাসিক’ সেন্টার ফরোয়ার্ডের মতো ম্যাচের ১৭, ৫১ ও ৬৭ মিনিটে তিন গোল করে রামোস শুধু পর্তুগালকে দুর্দান্ত জয় এনে দেননি, বিশ্বকাপের নকআউটে পর্তুগালের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে গোলের রেকর্ডও গড়েছেন ২১ বছর ১৬৯ দিন বয়সী রামোস। ১৯৬৬ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে গোল করে রেকর্ডটি (২৪ বছর ১৭৯ দিন) এতদিন দখলে রেখেছিলেন ইউসেবিও।

আরো পড়ুন : মাজহারুল আবারও কি সিলেট পাসপোর্ট অফিসে ফিরবেন?

ম্যাচের প্রথমার্ধে ২ গোল করেছে পর্তুগাল। ১৭ মিনিটে প্রথম গোলটি রামোসের দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ের ফসল। হোয়াও ফেলিক্সের কাছ থেকে পাস পেয়ে দুরহ কোণ থেকে বাঁ পায়ের জোরাল শটে গোল করে পর্তুগালকে এগিয়ে দেন। সুইজারল্যান্ড তখন পর্তুগিজ রক্ষণের আশপাশে খাবি খাচ্ছিল।

এভাবে ম্যাচ এগিয়ে যাওয়ার পথে ৩৩ মিনিটে কর্নার থেকে গোল করে সুইসদের শেষ আটে ওঠার স্বপ্ন প্রায় তখনই নসাৎ করে দেন পেপে। বিশ্বকাপের নকআউট ম্যাচে সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে (৩৯ বছর) পেপের গোলের পর পর্তুগাল যেন আরও গর্জে উঠল! আক্রমণের পর আক্রমণে সুইস রক্ষণে চিড় ধরালেও অবশ্য আর গোল পায়নি। তবে বিরতির পর সুইসরা আর ঠেকিয়েও রাখতে পারেনি।

আরো পড়ুন : রোহিঙ্গা নির্যাতন মানবতাবিরোধী অপরাধ কিনা তদন্ত চলছে আইসিসির

পর্তুগিজ মিডফিল্ডে দিওগো দালত ও হোয়াও ফেলিক্সের অসামান্য পারফরম্যান্সে ৫১ মিনিটে আবারও খুলে যায় সুইসদের গোলমুখ। এবার দালতের পাস থেকে দারুণ ফিনিশিংয়ে গোল রামোসের। সুইস গোলকিপার ইয়ান সোমারকে দক্ষ স্ট্রাইকারদের মতো ফাঁকি দিয়েছেন রামোস। এরপর ৪ মিনিট পরই আবারও গোল এবং সেই গোলেও আছে রামোসের অবদান। প্রতিআক্রমণে উঠেছিল পর্তুগাল।

আরো পড়ুন : বিশ্বের অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় বাংলাদেশের সানজিদা

রামোসের পাস থেকে নিখুঁত শটে গোল করেন পর্তুগিজ লেফটব্যাক রাফায়েল গেরেরো। লক্ষণীয় বিষয় হলো, রামোস নিজেই গোল করার মতো পজিশনে ছিলেন। কিন্তু গেরেরোকে আরও সুবিধাজনক জায়গায় দেখে নিঃস্বার্থভাবে তাঁকে পাস বাড়ান। দলের জন্য এই নিঃস্বার্থ মনোভাবের পুরষ্কার ৬৭ মিনিটেই পেয়েছেন রামোস। তবে তার আগে সান্ত্বনার গোল পেয়েছে সুইজারল্যান্ড।

আরো পড়ুন : বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. এস এ মালেক আর নেই

৫৮ মিনিটে কর্ণার থেকে গোল করেন সুইস ডিফেন্ডার ম্যানুয়েল আকানজি। এরপর সুইসরা খেলার ধার বাড়ালেও লাভ হয়নি। উল্টো ৬৭ মিনিটে সুইসদের রক্ষণ চিরে আরও একটি গোলের পাস দেন ফেলিক্স। বেশ লম্বা মাপা পাসটি ধরে রামোস সহজেই সোমারকে ফাঁকি দিয়ে গোল করার পর ধারাভাষ্যকার বলছিলেন ‘লাইক অ্যা ক্ল্যাসিক সেন্টার ফরোয়ার্ড!’

আরো পড়ুন : প্রথমবারের মতো শেষ আটে মুসলিম দেশ মরক্কো; ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে জয় উদযাপন

এরপর গোলের আরও দুই–তিনটি সুযোগ পেয়েছে পর্তুগাল। ৭৪ মিনিটে ফেলিক্সের বদলি হয়ে নামা রোনালদোও ৮৪ মিনিটে সুইসদের জালে বল পাঠান। কপাল খারাপ, অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল হয়। তবে যোগ করা সময়ে আরও একটি গোল করে পর্তুগালের উৎসবে ‘ছয় তারকা’ এনে দেন রাফায়েল লিয়াও।

পর্তুগালের এই পারফরম্যান্স দেখে দুশ্চিন্তায় পড়তে পারে মরক্কো। কোয়ার্টার ফাইনালে যে রামোস–রোনালদোরা প্রতিপক্ষ!

আরো পড়ুন : ক্রেতা শুন্য শেয়ার বাজার, লেনদেন তলানিতে

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *