লোকালয়ে বাঘের প্রবেশ রোধে ৬০ কিলোমিটার নাইলনের বেড়া নির্মাণের সিদ্ধান্ত

জনদুর্ভোগ জাতীয় প্রচ্ছদ লাইফ স্টাইল হ্যালোআড্ডা

বাগেরহাট সংবাদদাতা : সুন্দরবন সংলগ্ন শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জের এগারো গ্রামের মানুষকে এখন বাঘ আতঙ্ক তাড়া করে ফিরছে। বাঘের আক্রমণের শিকার হচ্ছে গরু-মহিষ। সন্ধ্যা হলেই গ্রামের রাস্তাঘাট জনশূন্য হয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় দোকানপাট। এই পরিস্থিতিতে বাঘসহ বন্যপ্রাণির লোকালয়ে প্রবেশ ঠেকাতে বনের পাশে নাইলনের বেড়া নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন বিভাগ। আগামী অর্থবছরে এই কাজ শুরু হবে।

এ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহে সরেজমিনে গিয়ে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে জানা যায়, পূর্ব সুন্দরবন সংলগ্ন শরণখোলা, পানিরঘাট, সোনাতলা, রসুলপুর, দক্ষিণ রাজাপুর, উত্তর রাজাপুর, পশ্চিম রাজাপুর, টগড়াবাড়ী, ধানসাগর এবং মোরেলগঞ্জের গুলিশাখালী, আমুরবুনিয়াসহ আশপাশের গ্রামের মানুষকে প্রতিনিয়ত বাঘ আতঙ্ক তাড়া করছে ফিরছে। সন্ধ্যা হলেই গ্রামগুলোতে নেমে আসে সুনসান নীরবতা। মানুষের চলাচল ও দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।

সোনাতলা গ্রামের সাচ্চু হাওলাদার, দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের জাহিদুল হাওলাদার, জুয়েল হোসেন, দেলোয়ার হোসেন তালুকদার, উত্তর রাজাপুর গ্রামের মাসুম হাওলাদার, ধানসাগর টগড়াবাড়ী এলাকার তোফাজ্জেল হোসেন, আমিন চৌকিদার বলেন, বনের পাশ দিয়ে প্রবাহিত ভোলা নদী ভরাট হয়ে সরু খালে পরিণত হওয়ায় প্রায়ই রাতে বাঘ সহজেই লোকালয়ে প্রবেশ করছে। বাঘ লোকালয়ে এসে গরু-ছাগল মারছে। অতি সম্প্রতি দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামে একটি ছাগল ও ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ধানসাগর গ্রামের নুরুজ্জামান খানের বাড়িতে বাঘ এসে একটি গরু মেরে ফেলেছে। বাঘের ভয়ে অনেকটা নির্ঘুম রাত কাটে বলেও জানালেন তারা। ১ নম্বর ধানসাগর ইউনিয়নের ধানসাগর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, লোকালয়ের কাছে বাঘের আনাগোনা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা রাতের বেলা গ্রাম পাহারায় বের হয়ে ভয়ে ভয়ে থাকি। ১ নম্বর ধানসাগর ইউপি চেয়ারম্যান মাইনুল ইসলাম টিপু বলেন, ইউনিয়নের পশ্চিম রাজাপুর ও ধানসাগর টগড়াবাড়ী এলাকায় বাঘের আনাগোনায় ঐ এলাকার মানুষ সর্বদা বাঘ আতঙ্কে থাকেন।

সুন্দরবন বিভাগের খুলনা অঞ্চলের বনসংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষে তিন বছরমেয়াদি সুন্দরবনে বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় বন্যপ্রাণি ও বন সুরক্ষায় বেশ কয়েকটি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাঘ গণনা, ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ্বাসের সময় বনের প্রাণীরা যাতে নিরাপদে আশ্রয় নিতে পারে সে জন্য সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থানে উঁচু টিলা নির্মাণ, লোকালয়ে বন্যপ্রাণির প্রবেশ ঠেকাতে বনের পাশে নাইলনের বেড়া নির্মাণ ইত্যাদি। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে নাইলনের বেড়া নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে। এই বেড়ার কাজ শেষ হলে লোকালয়ে আর বন্যপ্রাণী প্রবেশ করতে পারবে না বলে বনসংরক্ষক জানান। তিনি আরো বলেন, সুন্দরবনের খুলনা, সাতক্ষীরা, চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জের ৬০ কিলোমিটার এলাকায় এই বেড়া নির্মাণ করা হবে।

আরো পড়ুন : আচমকা নারী ফুটবল দলের প্রীতি ম্যাচ বাতিল করল সিঙ্গাপুর

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *