নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছরের মার্চ মাসে সারা দেশে ৪৫৮টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। আর এসব সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৯ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এতে আহত হয়েছে ৬৪৭ জন। দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৭৬টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২২১ জন নিহত হয়েছে।
এই সময়ে পাঁচটি নৌ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ১৯ জনের। ১১টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত এবং আহত হয়েছে আটজন।
আজ সোমবার (৪ মার্চ) সকালে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের পাঠানো এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। ফাউন্ডেশনটি সাতটি জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি নিউজ পোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজিকে এসব সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ১০ দফা সুপারিশও জানিয়েছে ফাউন্ডেশনটি। সুপারিশগুলো হচ্ছে-দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করা; চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা; বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা; পরিবহনের মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করা; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্বরাস্তা (সার্ভিস লেন) তৈরি করা; পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করা; গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করা; রেল ও নৌপথ সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে সড়কপথের ওপর চাপ কমানো; টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা এবং সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করা।
প্রতিবেদনে আরো জানানো হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনায় গত মার্চ মাসে প্রতিদিন গড়ে ১৯ জন নিহত হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছিল ১৬.৭৫ জন। এ হিসাবে ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চ মাসে প্রাণহানি বেড়েছে ১৩.৪৩ শতাংশ। এসব দুর্ঘটনায় ১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়সী কর্মক্ষম মানুষ নিহত হয়েছেন ৪৬৩ জন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, সড়ক দুর্ঘটনায় গত মার্চ মাসে প্রতিদিন গড়ে ১৯ জন নিহত হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছিল ১৬.৭৫ জন। এই হিসাবে ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চ মাসে প্রাণহানি বেড়েছে ১৩.৪৩ শতাংশ।
তারা বলছে, ট্রাকসহ পণ্যবাহী দ্রুতগতির যানবাহন ও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ ড্রাইভারদের বেপরোয়া গতিতে পণ্যবাহী যানবাহন চালানো এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর কারণে তারা নিজেরা দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে এবং অন্যান্য যানবাহনকে আক্রান্ত করছে। পথচারী নিহতের ঘটনাও ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। পথচারীরা যেমন সড়কে নিয়ম মেনে চলে না, তেমনি যানবাহনগুলোও বেপরোয়া গতিতে চলে। ফলে পথচারী নিহতের ঘটনা বাড়ছে।