নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ-নওগাঁর মান্দায় বিদ্যালয়ের দোলনায় খেলতে গিয়ে অসাবধানবসত লোহার খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে মাথা কেটে যায় তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর। তাৎক্ষনিকভাবে শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন শিক্ষকেরা। পরে শিশুটিকে তুলে দেওয়া হয় অভিভাবকের হাতে।
ঘটনাটি গড়ায় পারিবারিক বিরোধে। শিশুটিকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে মান্দা থানায় মামলা করেন তার পালিত মা আনোয়ারা বিবি।
মামলার আসামিরা হলেন, উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের পানিয়াল গ্রামের মুনসুর রহমান (৪৮) ও ইয়ানুছ আলী (৪৫)। তদন্ত ছাড়াই মামলাটি রেকর্ডভুক্ত হওয়ায় চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয়দের মাঝে।
শিশু শিক্ষার্থীর নাম নুসরাত জাহান সেবা (৮)। সে তেঁতুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ও তেঁতুলিয়া গ্রামের মুকুল-আনোয়ারা দম্পত্তির পালিত মেয়ে।
তেঁতুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস আরা বলেন, গত ২২ মার্চ টিফিনের সময় দোলনায় খেলতে গিয়ে মাথা কেটে যায় তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান সেবার। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, পরে অভিভাবকদের ডেকে শিশুটিকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে শিশুটি আর বিদ্যালয়ে আসেনি। ঘটনাটি ভিন্নখাতে নিয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা করবেন এটি ভাবতেই অবাক লাগছে।
ভুক্তভোগী মুনসুর রহমান বলেন, ছোটভাই আফজাল হোসেনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বিরোধ চলছিল। জের ধরে গত ২ মার্চ সকাল ৯টার দিকে প্রতিপক্ষের লোকজন আমার স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে দেশিয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে মান্দা ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসায় সুস্থ করে তোলা হয়।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় ছেলে আনোয়ার হোসেন বাদি হয়ে মান্দা থানায় ভাই আফজাল হোসেন, তাঁর স্ত্রী শাহিনুর বিবিসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ শাহিনুর বিবিসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠান। আসামিরা জামিনে এসে হুমকি ধামকির অভিযোগ এনে নওগাঁ আদালতে গত ১৫ মার্চ আমাদের বিরুদ্ধে ১০৭ ধারার মামলা করেন।
মুনসুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, আমার স্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার মামলা থেকে বাঁচতে আসামিরা যোগসাজস করে আসামি শাহিনুরের বোন আনোয়ারা বিবিকে দিয়ে তাঁর পালিত শিশু কন্যাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে গত ২৩ মার্র্চ মান্দা থানায় মামলা করেন। সত্য-মিথ্যা যাচাই না করেই মামলাটি রেকর্ডভুক্ত করায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে আনোয়ারা বিবির বাড়িতে গিয়ে তাঁকেসহ পালিত শিশুটিকে পাওয়া যায়নি। এসময় আনোয়ারা বিবির স্বামী মামুনুর রশিদ মুকুল বলেন, পারিবারিক বিষয় নিয়ে উভয়পক্ষে মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এনিয়ে একাধিক মামলাও হয়েছে। এর বেশি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
মান্দা থানার পরিদর্শক তদন্ত মেহেদী মাসুদ বলেন, প্রাথমিক তদন্ত ও স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে মামলাটি সাজানো বলে প্রতীয়মান হয়েছে। অধিকতর তদন্ত করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ-
মোঃ হাবিবুর রহমান