আজ মন্ত্রিসভায় উঠছে আরপিও সংশোধনের প্রস্তাব

আইন-আদালত জাতীয় নির্বাচন প্রচ্ছদ হ্যালোআড্ডা

গেজেটের পরও ভোট বাতিলের ক্ষমতা চায় ইসি

নির্বাচনের ফল ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের পরও ভোট বাতিলের ক্ষমতা নিজেদের হাতে রাখাসহ আরপিওর (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২) বেশকিছু ধারা সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উঠছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুপুর আড়াইটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাংগীর আলম জানিয়েছেন, আরপিও সংশোধনীর প্রস্তাব মন্ত্রিসভা বৈঠকে উঠবে বলে তাঁকে জানানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা যৌথ আলোচনার মাধ্যমে সংশোধনী প্রস্তাবটি তৈরি করেছেন বলেও জানান তিনি।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস বাকি। চলমান নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে বিএনপিসহ সমমনা একাধিক দল নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে আরপিও সংশোধন হলেও তাতে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আসছে না। অন্তত ১৫ থেকে ১৭টি ধারায় সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই কারনিক সংশোধনী।

নির্বাচন কমিশনার রাশিদা সুলতানা জানিয়েছেন, গেজেট প্রকাশের পরও ভোট বাতিলের ক্ষমতা ইসির হাতে দিতে শুরুতে আপত্তি জানালেও পরে একমত হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ ওঠে। কিন্তু তৎকালীন নূরুল হুদা কমিশন বলেছিল, নির্বাচনের ফল গেজেট আকারে প্রকাশের পর ইসির হাতে কোনো ক্ষমতা নেই। গেজেট প্রকাশের পর আদালতে মামলা দায়ের করা ছাড়া প্রতিকার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ওই নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীদের আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন সাবেক সিইসি।

ইসি সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আরপিওর সংশোধনী প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব রাখার প্রস্তাব ২০২০ সাল থেকে বাড়িয়ে ২০২২ সাল করা হচ্ছে। মন্ত্রিসভায় উঠার আগে এ প্রস্তাব বেশ কয়েক বছর ধরে অপেক্ষমাণ ছিল।

প্রস্তাবে ইভিএমে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার আঙুলের ছাপে সর্বোচ্চ ১ শতাংশ ভোটারকে ভোট দেওয়ার জন্য ব্যালট ইস্যুর বিধান আরপিওতে যুক্তের প্রস্তাব করেছিল ইসি। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়ের আপত্তিতে তা সংশোধনী প্রস্তাবে থাকছে না। বিষয়টি সার্কুলার জারি করার বিদ্যমান যে প্রথা রয়েছে, তাই বহাল থাকছে। এ ছাড়া মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন কৃষি ও ক্ষুদ্র ঋণ এবং বিলখেলাপিরা তাঁদের খেলাপি টাকা পরিশোধ করলেই নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন। বিদ্যমান আইনে সাত দিন আগে এসব পরিশোধের বিধান রয়েছে। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রে পেশিশক্তির প্রভাব বিস্তার করলে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাকে নির্বাচন বন্ধ করার ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচন কর্মকর্তা কোন প্রক্রিয়ায় নির্বাচন বন্ধ করবেন, তার বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে সংশোধনীতে। পাশাপাশি ব্যালট পেপারের পেছনে অফিসিয়াল সিল ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তার স্বাক্ষর না থাকলে তা গণনায় আনা যাবে না– এমন বিধান স্পষ্ট করা হয়েছে। ভোটগণনার বিবরণী ও ব্যালট পেপারের হিসাব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাঁর এজেন্টকে দেওয়ার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ভোট গ্রহণ শুরুর আগের ৪৮ ঘণ্টা ও পরের ৪৮ ঘণ্টায় কেউ বিশৃঙ্খলামূলক আচরণ, অস্ত্র ও পেশিশক্তি প্রদর্শন এবং ভোট গ্রহণ কাজে নিয়োজিতদের ভয় দেখালে সর্বোচ্চ সাত বছর ও সর্বনিম্ন দুই বছর জেল-জরিমানার বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। ভোটার, পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং পেশিশক্তির বিস্তার রোধে নির্দিষ্ট মেয়াদে সাজার কথা বলা হয়েছে।

আরো পড়ুন : ব্যাংকের ভেতরেই ডলারের কালোবাজার

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *