সিলেট সিটি নির্বাচনে ভোটের রাজনীতিতে প্রার্থীরা ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগাতে চান

ওকে নিউজ স্পেশাল জনপ্রতিনিধি নির্বাচন প্রচ্ছদ মুক্তমত রাজনীতি হ্যালোআড্ডা

কাওছার আহমদ, সিলেট: আগামী ২১ জুন ৫ম বারের মতো সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে সিসিকের মোট ভোটার হলেন ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭’শ ৫৩ জন। এ হিসাব নতুন করে যুক্ত ১৫ ওয়ার্ডের ১ লাখ ২৬ হাজার ৯’শ ভোটার নিয়ে। গত নির্বাচনে পুরাতন ২৭ ওয়ার্ডের মোট ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ২১ হাজার ৭’শ ৩২ জন। গেলো ৫ বছরে এই পুরাতন ২৭ ওয়ার্ডে ভোট বেড়েছে ৩৯ হাজার ১’শ ২১ জন। নতুন ও পুরাতন এলাকা নিয়ে সিসিকের মোট ওয়ায়ার্ড হলো ৪২ টি। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস।

এ নির্বাচনে রাজপথের প্রধান বিরোধীদল বিএনপি অংশ গ্রহণ না করলেও দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীরা মাঠে তৎপর রয়েছেন। কেন্দ্রে থেকে বহিষ্কারের পরও নির্বাচন থেকে সরছেননা। মেয়র পদে প্রার্থী না থাকলেও কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন অনেকে।

এদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল মেয়র প্রার্থীর পাশাপাশি কাউন্সিলর পদেও নির্বাচন করছে। বিশেষ করে কাউন্সিলর প্রার্থীরা পাড়া-মহল্লায় মতবিনিময় ও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সিসিকের পুরাতন ২৭ টি ওয়ার্ডের মধ্যে নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ড। উপমহাদেশের প্রখ্যাত সুফি-সাধক হযরত শাহজালাল (র.) এর মাজার, সিলেট ওসমানী হাসপাতাল, বাংলাদেশ বেতারের আঞ্চলিক অফিস সহ সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে এই ৩ ওয়ার্ডে। যেকোন নির্বাচনে ভোটের সমীকরনের ক্ষেত্রে এই ওয়ার্ডগুলোর ভ‚মিকাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ১ নং ওয়ার্ডে হযরত শাহজালাল (র.) এর মাজার রয়েছে। এখানে ধর্মীয় অনুভ‚তিকে কাজে লাগিয়ে বিএনপি-জামায়াত শক্ত অবস্থান করে নিয়েছে। ২ নং ওয়ার্ডে এর ঠিক উল্টো চিত্র দেখা যায়। এই ওয়ার্ডে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকের বসবাস বেশি হওয়ায় বিএনপি-জামায়াত কাবু করতে পারেনি। এখানে আওয়ামী লীগের অবস্থান মজবুত রয়েছে। ৩ নং ওয়ার্ডে বিএনপির প্রভাব একটু বেশি হলেও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাসের কারণে ভোটের হিসেবে সবসময় শক্ত প্রতিদ্ব›দ্বীতায় থাকে আওয়ামী লীগ। এমনটাই জানালেন স্থানীয় অধিবাসীরা।

ওয়ার্ড -১
নগরীর ব্যস্ততম এলাকা দরগাহ মহল্লা, আম্বরখানা পশ্চিম, দর্শনদেউড়ি, রাজারগল্লি, মিরের ময়দান, পায়রা, চৌহাট্টার একাংশ নিয়েই সিসিকের এই ওর্য়াড গঠিত হয়। এই ওয়ার্ডের মোট ভোটার হলেন ৯ হাজার ৯’শ ২০ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ হাজার ৪’শ ৭৯ জন এবং নারী ভোটার ৪ হাজার ৪’শ ৪১ জন। গত নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৮ হাজার ৮’শ ৮১ জন। এবার বেড়েছে ১ হাজার ৩৯ জন ভোটার।

ওলিক‚ল শিরোমণি হযরত শাহজালাল (র.) এর মাজার এই ওয়ার্ডে অবস্থিত। এই ওলির মাজারের কারণেই নগরীর অন্যান্য এলাকার তুলনায় এখানে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের সংখ্যা বেশি রয়েছেন। নির্বাচনে প্রার্থীরাও ধর্মীয় অনুভ‚তিকে কাজে লাগানোর চেষ্ঠা করে থাকেন। স্থানীয়রা জানান, এই ওয়ার্ডকে বিএনপি-জামায়াতের ভোট ব্যাংক বলা হয়ে থাকে। প্রবীণ মুরব্বি জহিরুল ইসলাম ও গোলাম মাওলা চৌধুরী বলেন, এখানে হিন্দু বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বী মানুষ একেবারে নগণ্য। স্থানীয় বা জাতীয় নির্বাচনে এই ওয়ার্ডে বিএনপি বা জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে সবসময় ৬০ শতাংশের বেশি জনসমর্থন থাকে।

সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ তৌফিকুল হাদী হলেন এই ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর। এবারও তিনি কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন। মহানগরীর বিএনপির রাজনীতিতে হাদী একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। বর্তমানে ১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সদস্যের দায়িত্বে আছেন। দল থেকে শোকজ ও বহিষ্কারের পরও নির্বাচন থেকে সরেননি তিনি। বিএনপির এই নেতার সাথে ওয়ার্ড বিএনপির আরেক সদস্য মুফতি কমর উদ্দিন কামু নির্বাচনে রয়েছেন। তিনিও বহিষ্কার হয়েছেন কেন্দ্র থেকে। এরপরও মাঠে রয়েছেন। এই দুই প্রার্থী ছাড়াও নির্বাচনে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুছ সাদাত ও সমাজসেবক সলমান আহমদ চৌধুরী। এর আগে এ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন জামায়াত সমর্থিত আজিজুল হক মানিক।

সরেজমিনে বর্তমান কাউন্সিলর হাদীর বিরুদ্ধে ওয়ার্ডবাসীর অনেক ক্ষোভ ও অভিযোগ পাওয়া যায়। দরগাহ মহল্লার বাসিন্দা রাজু মিয়া জানান, এলাকায় জলাবদ্ধতা ও খাবারের পানি সহ নানা সমস্যা বিদ্যমান রয়েছে। বর্তমান কাউন্সিলর বছরের অধিকাংশ সময় বিদেশে অবস্থান করেন। যার কারণে এলাকায় কাঙ্খিত উন্নয়ন হয়নি। তবে কাউন্সিলর সৈয়দ তৌফিকুল হাদী বলেন, সারা বছরই ওয়ার্ডবাসীর সেবায় নিজেকে সম্পৃক্ত রাখার চেষ্টা করে থাকেন। জলাবদ্ধতার সমস্যাটি নগরজুড়ে। এরপরও নিজের ওয়ার্ডের উন্নয়ন ও সমস্যা নিরসনে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে, প্রকৃত সেবক হয়ে সবসময় পাশে থাকার প্রতিশ্রæতি দিয়ে মাঠে নেমেছেন সমাজ সেবক সলমান আহমদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বিগত ভয়াবহ বন্যা ও করোনকালীন লকডাউনের সময় দুস্থ অসহায় মানুষের পাশে ছিলাম। সাধ্যমতো এলাকায় সমাজসেবামূলক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখি। ওয়ার্ডবাসির প্রত্যাশিত সেবার লক্ষ্যেই নির্বাচন করছি।
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুছ সাদাত বলেন, কাঙ্খিত উন্নয়নের জন্য ওয়ার্ডবাসী পরিবর্তন চায়। ওয়ার্ডবাসীর এই প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যেই নির্বাচনে লড়ছি।

ওয়ার্ড-২
এই ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর হলেন সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক বিক্রম কর ( স¤্রাট)। তিনি এবারও প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন। উন্নয়নের ধারাবহিকতা বজায় রাখতে ওয়ার্ডবাসীর ডাকে সাড়া দিতে তিনি নির্বাচনে লড়ছেন এমনটা জানালেন স¤্রাট। এর আগে এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন রাজিক মিয়া। তিনি কোন দলের সাথে প্রকাশ্যে সম্পৃক্ত না থাকলেও স্থানীয় অধিবাসীরা তাঁকে জামায়াত ঘরানার লোক হিসেবে জানেন। তবে রাজিক মিয়া জানান তিনি কোন দলের সাথে জড়িত নন। মানুষের সেবার মাঝেই নিজেকে সবসময় রাখতে পছন্দ করেন। এবারও তিনি প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন। বর্তমান ও সাবেক এ দুই কাউন্সিলরই ভোটযুদ্ধে রয়েছেন।

নগরীর জল্লারপাড়, জিন্দাবাজার (আংশিক), কাজী ইলিয়াছ, রিকাবীবাজার (আংশিক), দাঁড়িয়াপাড়া, মির্জাজাঙ্গাল (আংশিক), লামাবাজার (আংশিক) নিয়ে এই ওয়ার্ড গঠিত। এই ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা হলেন ৭ হাজার ৪’শ ৩৭ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৩ হাজার ৯’শ ৮২ জন এবং নারী ভোটার ৩ হাজার ৪’শ ৫৫ জন। গত নির্বাচনে এ ওয়ার্ডে ভোটার ছিলেন ৬ হাজার ৭’শ ৫৪ জন। নতুন ৬’শ ৮৩ জন ভোটার বেড়েছে। এই ওয়ার্ডে মুসলমানের চেয়ে হিন্দু বা অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকের বসবাস বেশি বলে স্থানীয়রা জানান।
এই ওয়ার্ডের বাসিন্দা ব্যবসায়ী তাপস কুমার দাস বলেন, ভোটের ক্ষেত্রে আগে প্রার্থীর যোগ্যতা বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন দলীয় পরিচয় বা ধর্মীয় অনুভ‚তিতে প্রভাবিত হয়ে অনেকে ভোট দিয়ে থাকেন। এই ওয়ার্ডে ভোট কেন্দ্র রয়েছে দু’টি। মদন মোহন কলেজের কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সবসময় বেশি ভোট পেয়ে পাশ হয়। আর রসময় মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে বিএনপির ভোট বেশি হয়ে থাকে। তবে স্থানীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভোটের সমীকরণ অনেকটা বদলে যায়। আত্মীয়তা, সম্পর্ক ও ধর্মীয় অনুভ‚তিতে অনুপ্রাণিত হয়ে কিছু সংখ্যক ভোটার তাদের মতামত দেন।

দাঁড়িয়া পাড়ায় থাকেন উদীচী’র নেতা স›দ্বীপ দেব। তিনি বলেন, বাসা-বাড়ির ঠিকানা সহজে সনাক্তকরনের জন্য সড়ক বা গলির সঠিক কোন পরিকল্পনা নেই। বাইরের এলাকার কেউ আসলে অনেকেই বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে থাকে। এছাড়া দু’দিন পর পর সড়কবাতি নষ্ট হয়ে যায়। এবং বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসা-বাড়ি পানিতে ডুবে যায়। এ জন্য পরিকল্পনা মোতাবেক স্থায়ীভাবে এর সমাধান করতে হবে।

ওয়ার্ড-৩
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এই ওয়ার্ডে অবস্থিত। এই হাসপাতালকে কেন্দ্র করেই বৃহত্তর মেডিকেল এলাকায় অসংখ্য বেসরকারী হাসপাতাল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বানিজ্যিক এলাকা হিসিবে পরিচিত এ এলাকায় গত এক দশকে বৃদ্ধি পেয়েছে নানা অপরাধ কর্মকান্ড। কিছুদিন আগেও আলোচনায় ছিল মেডিকেল এলাকার কিশোর গ্যাং কাহিনী। এছাড়াও অসামাজিক কার্যকলাপ, ছিনতাই ও চাদাবাঁজি এ এলাকায় সংগঠিত হয়ে থাকে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক)জানান, এসব নিয়ন্ত্রণ যারা করেন তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত হলেও অপরাধ জগতে তারা এক সাথে থাকেন। এই এলাকায় বিএনপির প্রভাব বেশি হলেও গত ৫ বছরে হামলা-মামলায় অনেকটা দূর্বল হয়ে পড়ছে নেতাকর্মীরা। এই সুযোগে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ অনেকটা শক্তিশালী হয়ে ওঠেছে।

এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হলেন আবুল কালাম আজাদ লায়েক। তিনি আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিলেট মহানগরের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। এবারও তিনি কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন। স্থানীয় সমস্যা নিয়ে লায়েকের সাথে আলাপ হলে তিনি জানান, বানিজ্যিক এলাকা হিসেবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ এখানে আসা-যাওয়া করে। এরপরও সবার সহযোগিতা নিয়ে এই ওয়ার্ডকে সন্ত্রাসমুক্ত করার জন্য কাজ করেছি। এছাড়া এই ওয়ার্ডে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। দৃশ্যমান বড় ধরণের প্রকল্প ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে নির্মাণ হয়েছে। আরও ১৭ কোটি টাকার টেন্ডার হয়েছে। শীঘ্রই এ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।

এর আগে এই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর ছিলেন এস.এম আবজাদ হোসেন। তিনি সক্রিয়ভাবে রাজনীতি না করলেও এলাকার অনেকে জামায়াত পরিবারের লোক হিসেবে জানেন। গত নির্বাচনে তাঁেক পরাজিত করে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ লায়েক। এবারের নির্বাচনে এ দু’জন ছাড়াও প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. মিজানুর রহমান মিটু ও ব্যবসায়ী বদরুল ইসলাম লস্কর। নবাগত এ দু’জন পুরাতনদের ব্যর্থতাকে পুঁিজকে করে ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন।
দল থেকে বহিষ্কারের খবর পেয়েও ভোটের মাঠে রয়েছেন ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. মিজানুর রহমান মিটু। তিনি জানান, এলাকাবাসীর ভালোবাসা ও সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে লড়ছি। জনসেবার মাঝেই নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই।

বর্তমান কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ লায়েক ও সাবেক কাউন্সিলর আবজাদ হোসেনের আগে এই ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক।

স্থানীয়রা জানান, কাজলশাহ, মেডিকেল এলাকা, বাগবাড়ি (আংশিক), মুন্সিপাড়া, কেওয়াপাড়া, সাগর দীঘির পাড় এলাকা নিয়ে এ ওয়ার্ড গঠিত। এ ওয়ার্ডের মোট ভোটার ১২ হাজার ৪’শ ৬৩ জন। পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ৮’শ ৫৩ জন এবং নারী ভোটার ৫ হাজার ৬’শ ২০ জন। গত নির্বাচনে ছিলেন ১১ হাজার ৯০৫ জন ভোটার। এবার ৫৫৮ জন ভোটার বেড়েছে।

স্থানীয়রা জানান, অপরাধমুক্ত ওয়ার্ড গঠনে যিনি ভূমিক্ রাখতে পারবেন তাকেই ভোট দিবেন।
কাজলশাহ এলাকার ব্যবসায়ী বেলাল আহমদ জানান, ভোটের হিসেবে জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি বেশি পেলেও সিটি নির্বাচনে প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতার ওপর অনেকটা নির্ভর করে।
মুন্সিপাড়ার মুন্না খান বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়নের কারণে এই ওয়ার্ডে সাধারণ মানুষের সমর্থন আগের চেয়ে অনেকটা ভালো রয়েছে। যেকোন নির্বাচনে ওয়ার্ডের অন্তর্ভূক্ত সব পাড়ার ভোটের হিসাব কষলে আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থীর অবস্থান এগিয়ে থাকবে।

বাগবাড়ি এলাকার তরুন সমাজসেবক কামরুজ্জামান রোমান জানান, এই এলাকায় বিএনপি সমর্থিত মানুষ বেশি। তবে সিটি নির্বাচনে অনেকে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে থাকে। বিধায় ভোটের হিসেব স্থানীয় নির্বাচনে বলা মুশকিল হবে।

মেডিকেল এলাকার সুমন মিয়া বলেন, একদিকে মশার উপদ্রব অন্যদিকে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে এলাকাবাসী অতিষ্ট। এসব থেকে সাধারণ মানুষ পরিত্রাণ চায়।
সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড-১

সিসিকের সাধারণ ওয়ার্ড-১, ২ ও ৩ নিয়ে সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড গঠিত। এ ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর হলেন জেলা মহিলা লীগের সভাপতি সালমা সুলতানা। এর আগে এই ওয়ার্ডের প্রতিনিধি ছিলেন বিএনপি সমর্থিত কোহিনুর ইয়াসমিন ঝর্ণা। সিসিকের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এ দু’জন ঘুরেফিরে জনপ্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছেন। সিসিকের প্রথম নির্বাচন হয় ২০০৩ সালে। এ নির্বাচনে কোহিনূর ইয়াসমিন ঝর্ণা নির্বাচিত হন। এরপরের নির্বাচনে ২০০৮ সালে ঝর্ণাকে পরাজিত করে কাউন্সিলর হন সালমা সুলতানা। ২০১৩ সালের নির্বাচনে সালমা সুলতানাকে পরাজিত করে আবার কাউন্সিলর হন ঝর্ণা। সর্বশেষ গত ২০১৮ সালের নির্বাচনে ঝর্ণাকে আবার পরাজিত করে নির্বাচিত হন সালমা সুলতানা। এবারের নির্বাচনে কোহিনূর ইয়াসমিন ঝর্ণা নির্বাচন করছেননা। তবে আরেক নারী শক্তভাবে মাঠে নেমেছেন। তিনি মুন্সীপাড়ার বাসিন্দা আছিয়া বেগম। রাজনীতিতে সক্রিয় না হলেও বিভিন্ন সামাজিক কাজের মাধ্যমে ওয়ার্ডে তাঁর পরিচিতি রয়েছে। সাবেক জনপ্রতিনিধিদের ব্যর্থতাকে সামনে এনে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাচ্ছেন। পরিকল্পিত উন্নয়নের পাশাপাশি সন্ত্রাস ও দূর্নীতিমুক্ত ওয়ার্ড গঠনের জন্য নির্বাচনে লড়ছেন এমনটা জানালেন আছিয়া বেগম।

আরো পড়ুন : খাদ্যমান নিশ্চিতে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা বাস্তবায়ন জরুরি

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *