সিলেট সিটি নির্বাচনে কাউন্সিল প্রার্থী আফতাবকে ইসি’র তলব, সাঈদের বিরুদ্ধে মামলা

অনুসন্ধানী ক্রাইম নিউজ জনপ্রতিনিধি নির্বাচন প্রচ্ছদ মুক্তমত রাজনীতি হ্যালোআড্ডা

সিলেট ব্যুরো: সিলেটের ৭নং ওয়ার্ডের অস্ত্রবাজি এবং হামলার ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। নির্বাচন কমিশনও সক্রিয় হয়েছে। এতে করে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা দু’প্রার্থীই রয়েছেন দৌড়ের উপরে। এরমধ্যে গত রোববার রাতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাঈদ আব্দুল্লাহর ওপর মামলা দায়ের করা হয়েছে। এয়ারপোর্ট থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়। এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ জানিয়েছে, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সাঈদ মো. আবদুল্লাহকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নামে মামলা দায়ের হয়েছে।

গত ৬ই জুন রাতে ওয়ার্ডের জালালাবাদ এলাকায় নৌকার মেয়র প্রার্থীর কর্মীকে মারধরের অভিযোগে এই মামলা দায়ের করেন সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের অর্থ সম্পাদক শাহানুর আলম। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সুদীপ দাস জানান, বিমানবন্দর থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের হয়েছে।

এ ঘটনায় পুলিশ ২ জনকে আটক করেছে। মামলার এজহারে আসামি করা হয়েছে- বনকলাপাড়া (দীঘিরপাড়) এলাকার মৃত তখলিছুর রহমানের ছেলে সাঈদ আব্দুল্লাহ, পশ্চিম পীর মহল্লার ঐক্যতান ২২০নং বাসার আব্দুল খালিকের ছেলে আবুল কালাম মাস্টার, বনকলাপাড়া নূরানী ১০৪/৩নং বাসার কাজী মিজান, পশ্চিম পীরমহল্লার ৩৬নং বাসার সন্দু মিয়ার ছেলে জুনেদ আহমদ, অগ্রণী আ/এ এলাকার গেসু মিয়ার ছেলে সোহাগ মিয়া, বনকলাপাড়া এলাকার শাহীন, একই এলাকার ৮২নং গলির মুমিন মিয়ার ছেলে রাজন আহমদ, কানাইঘাটের ভাল্লুকমারা গ্রামের মৃত তাহের আলীর ছেলে আলাউদ্দিন, বকলাপাড়া এলাকার নূরানী ৪৭নং বাসার ছবের মিয়া, একই এলাকার নূরানী ৬৮/১নং বাসার মনির উদ্দিনের ছেলে এমাদ উদ্দিন সুয়েব, বাগেরহাটের বড় বাদুড়া গ্রামোর মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মতিউর রহমান মৃধা, বনকলাপাড়া এলাকার নূরানি ৮৩/২৫নং বাসার মীর হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে আমিন মিয়া, একই এলাকার নূরানি ৪০নং বাসার আল-আমিন।

মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, তিনি মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামানের নির্বাচনী কেন্দ্র গৌছ উলুম জামেয়া ইসলামি মাদ্রাসা ভোটকেন্দ্রের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন। নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী আফতাব হোসেন খান ও নৌকার প্রার্থীর পক্ষে আমি কাজ করে যাচ্ছি। এরই ধারাবাহিকতায় রাতে নৌকার পোস্টার নিয়ে ফেরার পথে ৩০-৪০টি মোটরসাইকেলযোগে শতাধিক লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করলে তখন আত্মরক্ষার্থে পালালে তারা আমার পেছনে ধাওয়া করে জালালাবাদ গলির মুখ এলাকায় আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।

এ সময় হামলাকারীরা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়।

মামলার বাদী শাহনুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা গুরুতর থাকায় মামলা দায়েরে বিলম্ব হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এদিকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীকে তলব করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনী কর্মকর্তারা জানান, কাউন্সিলর প্রার্থী আফতাব হোসেন খানের বিরুদ্ধে অপর প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী বাড়ির সামনে সশস্ত্র মহড়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে সিসিটিভি ফুটেজ, ভিডিও এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি প্রচারিত হয়েছে। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিল প্রার্থী সাঈদ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ এ বিষয়ে কমিশন বরাবর লিখিত অভিযোগ ও এজাহার দায়ের করেছেন। এ নিয়ে আফতাব হোসেন খানকে আসামি করে থানায় মামলাও হয়েছে। সিলেটের অতিরিক্ত নির্বাচনী কর্মকর্তা তারেক আহমদ গতকাল বিকেলে জানান, কাউন্সিলর প্রার্থী আফতাব হোসেন খানকে কমিশন থেকে তলব করা হয়েছে।

তিনি ঢাকায় গিয়ে কমিশনের মুখোমুখি হবেন। এ সংক্রান্ত বিষয়ে আগামী ১৪ই জুন বিকাল ৩টায় ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্বাচন কমিশন নির্দেশনা প্রদান করেছে। এদিকে ৭নং ওয়ার্ডে পাল্টাপাল্টি মামলায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থী আসামি হওয়ায় এখন তারা ভোটের মাঠে নেই। তাদের সমর্থকরা প্রচারণা চালাচ্ছেন। এখন মাঠে কেবল সরব রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও কাউন্সিলর প্রার্থী মো. জাহিদ খান সায়েক। তার সমর্থকরা প্রচারণায় গতি বাড়িয়েছেন।

আরো পড়ুন : দেশ ধ্বংস করতে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি যেন ক্ষমতায় না আসতে পারে

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *