ভিসানীতির কারণে আবারও যেনতেন নির্বাচন করলে সরকারের রেহাই নেই

প্রচ্ছদ মুক্তমত রাজনীতি হ্যালোআড্ডা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: মার্কিন ভিসানীতিতে সরকারের হাঁটু কাঁপছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আমেরিকা স্যাংশন দিয়েছে, লজ্জায় আমরা মুখ দেখাতে পারি না। কেন স্যাংশন আসে? র‍্যাবকে কারা ব্যবহার করেছে? যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি দিয়েছে। আওয়ামী লীগ নাকি ভয় পায় না। কিন্তু এমন ভয় পেয়েছে, হাঁটু কাঁপছে। কারণ তারা তো বিদেশে টাকা পাচার করেছে। ভিসানীতির কারণে আবারও যেনতেন নির্বাচন করলে, তাদের রেহাই নেই।

বুধবার বিকেলে চট্টগ্রামের কাজির দেওড়ি মোড়ে বিভাগীয় সমাবেশে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। চট্টগ্রাম বিভাগের যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল ‘দেশ বাঁচাতে তারুণ্যের সমাবেশ’ আয়োজন করে।

সরকারের বিরুদ্ধে তরুণদের লড়াইয়ে নামার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের অস্তিত্ব ও গণতন্ত্র আজ বিপন্ন। সরকার জোর করে প্রশাসনযন্ত্র ব্যবহার করে ক্ষমতায় আছে। তাদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। এ জন্য তরুণ-যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে।

কারাগারে থাকাকালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘স্লো পয়জনিং’ করা হতে পারে আশঙ্কা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ। তাঁকে কারাগারে অনেক দিন রাখা হয়েছিল। আমরা জানি না, তাঁকে স্লো পয়জনিং করা হয়েছে কিনা? কারণ, এখন তিনি যে ধরনের অসুস্থ, তা হওয়ার কথা নয়। তিনি এখন জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনি আমাদের অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছেন। আমাদের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছেন। কোর্টে যেতে পারি না। কোর্টে গেলে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মিথ্যা মামলা, গায়েবি মামলা দিয়ে আটকে রাখা হয়। হাইকোর্টে যাই। আগাম জামিন নিয়ে লোয়ার কোর্টে গেলে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানেই শেষ নয়। কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় আবার নতুন করে মামলা দেওয়া হয়। আমাদের এমন কেউ নেই, যার বিরুদ্ধে মামলা নাই।

সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আজ চাকরি নেই। সাধারণ মানুষ বাজারে যেতে পারেন না, নিত্যপণ্যের দামে আগুন। তেল, চিনি, চাল, সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। এরপরও সরকার বলছে, দেশ নাকি ভালো আছে। আসলে ভালো আছেন ক্ষমতাসীনরা। জনগণের পকেট কেটে তারা পাচার করেছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের হাতে নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়ে আসছে মানুষ। সারাদেশে আমাদের ছয়শ’র বেশি নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। গুম মানে তুলে নিয়ে যায়, খবর থাকে না। পদে পদে আমাদের গলা টিপে ধরেছে তারা।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল দাবি করা হয়। এ উন্নয়ন মডেল নয়, মরীচিকা। উন্নয়নের নামে বাংলাদেশকে ফকির করা হয়েছে। পার্লামেন্ট ও নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার। বরিশালে ভদ্র মানুষ চরমোনাই পীরকেও তারা ছাড়েনি, মারধর করেছে। নির্বাচন মানেই এখন মানুষকে বোকা বানানো, বলপ্রয়োগ করে কেন্দ্রে যেতে না দেওয়া।

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছে। কতিপয় পুলিশ সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা, র‍্যাব ও অস্ত্রধারী আওয়ামী সন্ত্রাসী ছাড়া তাদের সঙ্গে কেউ নেই। দেশেও নেই, বিদেশেও নেই। গেম ওভার, স্কোর জিরো। শেখ হাসিনাকে নামিয়ে দিতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে ভোট দিতে হলে শেখ হাসিনাকে বিদায় করতেই হবে।

যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাহজাহান, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

আরো পড়ুন : বাংলাদেশে আরও সুইস বিনিয়োগের আহ্বান করলেন প্রধানমন্ত্রী

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *