নিজস্ব প্রতিবেদক: গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়কের পদ থেকে রেজা কিবরিয়াকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার দলটির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আজ গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দলের দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামানের সই করা এ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকের তিনটি সিদ্ধান্ত উল্লেখ করা হয়।
প্রথমত, দলটির গঠনতন্ত্র অনুসারে নির্বাহী পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব সমর্থন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়াকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, দলের চলমান সংকট নিরসনে জরুরি পরিস্থিতিতে ১০ জুলাই জাতীয় কাউন্সিলের দিন ঠিক করা হয়েছে।
তৃতীয় সিদ্ধান্ত হলো, কাউন্সিলের আগপর্যন্ত ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক করা হয়েছে। কাউন্সিল না হওয়া পর্যন্ত গণ অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে রাশেদ খান ও সদস্যসচিব নুরুল হক (নুর) রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৫ জুন গণ অধিকার পরিষদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের ৮৪ জন সদস্যের স্বাক্ষরসহ আহ্বায়কের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ শনিবার সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বেলা ১১টায় জরুরি সভা আহ্বান করেন আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া। কিন্তু সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও সভা ডেকে আহ্বায়ক অনুপস্থিত ছিলেন। এরপর ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান সভায় সভাপতিত্ব করেন। নুরুল হক সভা পরিচালনা করেন। সভায় রেজা কিবরিয়াকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রেজা কিবরিয়া বলেন, এখানে ভোটাভুটি ছাড়াই একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর বিরুদ্ধে আইনগতভাবে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। সভা ডেকে তাতে অংশ না নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি সভায় যাননি।
অনেক দিন ধরে রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হকের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। বিভিন্ন সময় তা প্রকাশ্যে এসেছে।
সম্প্রতি গণ অধিকার পরিষদের শীর্ষ এ দুই নেতা একে অপরের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মসহ নানা অভিযোগ করেন। তাঁরা নিজ নিজ ফেসবুক পাতায়ও পোস্ট দিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন।
রেজা কিবরিয়া দলের সদস্যসচিব নুরুল হকের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবেশী দেশের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ এবং ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে বৈঠক করার অভিযোগ করেন।
এ ছাড়া রেজা কিবরিয়া দলের তহবিল নিয়ে স্বচ্ছতার প্রশ্ন তোলেন।
অন্যদিকে নুরুল হক পাল্টা অভিযোগ করেন যে তাঁদের দলের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া অনেক দিন ধরে ফরহাদ মজহার ও শওকত মাহমুদের নেতৃত্বাধীন ইনসাফ কায়েম কমিটির কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন। সে জন্য তিনি অর্থ পাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন নুরুল হক।
এ ছাড়া দলের কর্মকাণ্ডে সময় না দেওয়ার অভিযোগও করা হয় রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে।
দুজনের বিরোধের জেরে এখন রেজা কিবরিয়াকে গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়কের পদ থেকে অপসারণ করলেন নুরুল হকের সমর্থকেরা। অন্যদিকে রেজা কিবরিয়া আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন।
আরো পড়ুন : ফখরুলের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে কাদেরের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাল জামাত