মেঘনা নদীতে সারবোঝাই জাহাজে সাত লাশে রহস্য

অনুসন্ধানী আইন-আদালত ক্রাইম নিউজ জনদুর্ভোগ জাতীয় তথ্য-প্রযুক্তি পুরুষ পুরুষ অধিকার প্রচ্ছদ ভ্রমণ মুক্তমত হ্যালোআড্ডা

চাঁদপুর প্রতিনিধি : চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে সারবোঝাই জাহাজে সাতজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল দুপুরে থেমে থাকা জাহাজ থেকে পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মুমূর্ষু অবস্থায় তিনজনকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে আরও দুজন মারা যান। অপরজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় মেঘনা নদীতে থামানো অবস্থায় থাকা মেসার্স বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের আল বাখেরাহ নামক জাহাজে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল বিকালে ওই ইউনিয়নের মাঝের চর নামক স্থান থেকে নিহত ও আহতদের উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশ। পুলিশের ধারণা জাহাজে ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নৌপুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান।

নিহতরা হলেন- জাহাজের মাস্টার কিবরিয়া, ইঞ্জিনচালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রিজার সজিবুল, আজিজুল ও মাজেদুল ইসলাম। নিহত একজনের নাম জানা যায়নি। আহত ব্যক্তি হলেন জুয়েল (২৮)। আহত ও নিহত ব্যক্তিদের বাড়ি নড়াইল জেলায় বলে জানা গেছে। অপর জাহাজ মুগনি-৩ এর মাস্টার বাচ্চু মিয়া ও গ্রিজার মো. মাসুদ জানান, সার বহনকারী আল বাখেরাহ রবিবার সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসে। এরই মধ্যে কোম্পানির মালিক শিপন বাখেরাহ জাহাজে ফোন করে কাউকে পাননি। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় মুগনি জাহাজ থেকে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়। ওই সময় মুগনি জাহাজটি মাওয়া থেকে ঘটনাস্থল দিয়ে অতিক্রম করার সময় বাখেরাহ জাহাজটি ঘটনাস্থলে দেখতে পায়। ওই সময় তারা জাহাজের লোকদের রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ৯৯৯-এ কল দেন। চাঁদপুর থেকে কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। নৌপুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমানের উপস্থিতে কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশ জাহাজ থেকে প্রথমে পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করে এবং তিনজনকে আহত অবস্থায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনিসুর রহমান বলেন, জুয়েল নামে আহত একজনের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গলা ও শ্বাসনালি কাটা ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। উদ্ধার করে আনা সজিবুল ও মাজেদুল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাদের মাথায় ও শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নৌপুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের এসপি সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, জাহাজে ডাকাতি করতে বাধা দেওয়ায় তাদের হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাটি তদন্ত চলছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। তিনি বলেন, আহত একজন হাতের ইশারায় জানিয়েছেন, তারা আটজন ছিলেন। ঘটনাটি কীভাবে হয়েছে এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। ডাকাতি কিংবা অন্য কোনো কারণেও হতে পারে। তদন্ত করার পর জানা যাবে। নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডের সঙ্গে নিরাপত্তা বিষয়ে কথা বলেছি। কারণ এই রুটে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল করে। নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার করতে বলা হয়েছে।

আরো পড়ুন : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বালুমাটি চাপা পড়ে ট্রাক্টর হেলপার নিহত

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *