গোমস্তাপুরে ভ্যাপসা গরমে আষাঢ়ে বৃষ্টি, জনগণের স্বস্তি

জাতীয় প্রচ্ছদ লাইফ স্টাইল

গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে ভ্যাপসা গরমে আষাঢ়ের প্রথম বৃষ্টিপাতে মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। গভীর রাত থেকে আকাশ মেঘলা ও থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে দুপুর পর্যন্ত। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দুপুর পর্যন্ত ছিলনা বিদ্যুৎ । আমবাজারে ছিলনা আমের সরবরাহ। নদীতে বেড়েছে পানি।

জানা গেছে, জৈষ্ঠমাসের তীব্র তাপদহ ও বেশ কয়েকদিন থেকে ভ্যাপসা গরমে মানুষ হাসফাস করছিল। গরমে ছিলনা প্রশাস্তির ছাপ। শুক্রবার গভীর রাত থেকে আষাঢ়ে প্রথম বৃষ্টি শুরু হয়। এতে মানুষের মধ্যে প্রশান্তির ছাপ লক্ষ্য করা গেছে। সকালে পথচারী ও বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীরা পড়ে বিপাকে। দুরদুরান্তে থেকে বাস ও ট্রেনে আসা যাত্রীরা বৃষ্টিতে নানা অসুবিধার মধ্যে পড়ে। এদিকে আষাঢ়ের বৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে কৃষকরা মাঠে আমন ধানের চারার ক্ষেত তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এছাড়া অন্যান্য মৌসুমি গাছ ও ফলের জন্য এই বৃষ্টি কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে অনেকে অভিমত দিয়েছেন ।

পথচারী এমরান আলী জানান, ভোরে মহানন্দা ট্রেনে চড়ে রাজশাহী যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে আড্ডা এলাকা থেকে আসতে দেরি হয়েছে। এদিকে যথাসময় ট্রেনটি গন্তব্যে স্টেশন ছুটে চলে গেছে। তিনি অসুস্থ তাই লোকাল বাসে করে রাজশাহী যেতে অসুবিধা হবে। তার মত অনেকে বৃষ্টির কারণে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয়েছে।

রাধানগর ইউনিয়নের কৃষক শফিকুল ইসলাম জানান, চলতি আউশ মৌসুমে তিনি তিন বিঘা জমিতে ধান চাষাবাদ করছেন। পানির কারণে জমিতে হাল দিতে পারছিলেন না। ভোররাত থেকে পানি হওয়ার সকালে টিলার দিয়ে জমি চাষ করছেন। কয়েকদিনের মধ্যে জমিতে চারা রোপণ করে ফেলবেন বলে তিনি জানান।

পার্বতীপুর ইউনিয়নের আরেক কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, আষাঢ়ের এই বৃষ্টি আশির্বাদ স্বরুপ। পানির কারনে আমন ধানের চারা বপণ করতে পারছিলেন না। জমি তৈরি রাখা ছিল আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ধানের চারা (বিছন) ক্ষেতে ফেলে দিবেন।

রহনপুর পৌর এলাকার আম ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন, সকালে রহনপুর পৌর ও অন্যান্য স্থানের ল্যাংড়া আম পেরে বাজারে বিক্রি করার কথা ছিল। কিন্তু পানি হবার কারণে পাড়তে পারলাম না। তবে এ বৃষ্টি আমের জন্য ক্ষতি করবে। রোগবালাই দেখা দিবে।

রহনপুর আম আড়তদার সমবায় সমিতি লিমিডেটের আহবায়ক আশরাফুল ইসলাম আশরাফ জানান, বৃষ্টির কারণে আমবাজারে তেমন আম সরবরাহ ছিলনা। বৃষ্টি থেমে গেলে পুনরায় রহনপুর আমবাজারে ব্যবসায়ীরা আম নিয়ে আসতে শুরু করবে। জমে উঠতে শুরু করবে আম বাজার।

উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শেখ মুহাঃ ফুয়াদ জানান, চলতি আউশ মৌসুমে এই বৃষ্টি কৃষকদের সুফল বয়ে এনেছে। জমি চাষাবাদ ও চারা রোপণে পানির প্রয়োজন ছিল। এখন পুরোদমে কৃষক নেমে পড়েছেন জমিতে। অন্যান্য ফসলের জন্য এই বৃষ্টি উপকার বয়ে আনবে। তবে বাগানে আমের কিছু রোগবালাই দেখা দিতে পারে।

আতিকুল ইসলাম আজম

গোমস্তাপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

আরো পড়ুন : মহানবীকে কটূক্তির প্রতিবাদে গোমস্তাপুরে বিক্ষোভ মিছিল

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *